ডাকাতি মামলায় অভিযুক্তকে প্রার্থী তৃণমূলের পাণ্ডুয়া, 17 জুন: নয় মাস আগে ডাকাতি মামলায় আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেফতার হয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। সেই নেতাকেই এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট দিয়েছে শাসক শিবির ৷ পাণ্ডুয়ায় তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই জানাজানি হয়ে যায় বিষয়টি ৷ এরপরেই ঘটনার নিন্দায় সরব বিরোধী শিবির ৷
জানা গিয়েছে, নমিনেশনের শেষ দিন 15 তারিখ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার হুগলির পাণ্ডুয়ায় তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা সামনে আসে ৷ সেখানে দেখা গিয়েছ, তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে নাম রয়েছে শেখ নূর ইসলামের ৷ এই নূর ইসলামের নাম আবার রয়েছে পুলিশি রেকর্ডে ৷ বেআইনী অস্ত্র রাখা ও একটি ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে মামলা চলছে তাঁর নামে ৷ পুলিশ ফাইলে নাম থাকা অভিযুক্ত নূর ইসলাম ওরফে ভোলাকে পাণ্ডুয়ার গ্রাম পঞ্চায়েতের 268 নম্বর বুথে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করায় প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি শিবির ৷
এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত নূর স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলার কথা ৷ তিনি বলেন, "আমিও জানতে পেরেছি দলের তরফে আমার নাম দেওয়া হয়েছে ৷ তবে যদি দল বলে আমার নমিনেশন তুলে নিতে আমি তাই করব ৷ আমার একটা মামলা চলছে ৷ সেটা নির্বাচন কমিশনকেও জানিয়েছে ৷ আমার এই মামলার কথা দলের কেউ জানেন কি না, আমি জানি না ৷"
অন্যদিকে, বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন পাণ্ডুয়া ব্লক সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ ৷ তিনি বলেন, "ভুলবশত হয়তো নাম চলে এসেছে প্রার্থী তালিকায় ৷ আমরা বিষয়টা খতিয়ে দেখব ৷ স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য আমরা দলকে বিষয়টি জানিয়েছি। বিরোধীরা যে অভিযোগ করছে, তাঁদের অনেকেই নানা মামলায় অভিযুক্ত। তাঁরাও তো নির্বাচনী ক্ষেত্রে অংশ নিয়েছে। আমি কাউকে এরকম প্রার্থী করিনি। যখন শুনেছি তখনই নাম পালটানোর ব্যবস্থা করেছি।"
পাণ্ডুয়ার বিজেপির সভাপতি অমিতাভ ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের যাঁরা আছেন তাঁরা অনেকেই দুর্নীতি ও চুরির সঙ্গে যুক্ত। মাদক কেসে পুলিশ তৃণমূলের একজনকে গ্রেফতার করেছিল। তাঁকেই আবার নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন ৷ এটা গণতন্ত্রের জন্য বিপদজনক। তৃণমূল সমাজকে আরও অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর জন্য আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি।"
আরও পড়ুন: প্রাক্তন মন্ত্রীর ঘরেই কোন্দল, টিকিট না পেয়ে শাশুড়িকে তোপ জামাইয়ের
প্রসঙ্গত, গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে পান্ডুয়ার ক্ষীরখুন্ডি মাঠপাড়া এলাকায় নূর ইসলামের ভাড়া বাড়িতে অপরিচিত মানুষের আনাগোনায় সন্দেহ হয় গ্রামবাসীদের। নিত্যদিন মাদকের আসর বসত, চলত জুয়া ও মদের ঠেক। এর আগেও নাকি সাবধান করা হয়েছিল ভোলাকে। খবর পেয়ে মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দারা ভোলার বাড়িতে চড়াও হয়। খবর দেওয়া হয় পাণ্ডুয়া থানার পুলিশকে। তল্লাশি অভিযানে পুলিশ চারজনক গ্রেফতার করে, যার মধ্যে নূরও ছিল। ধৃতদের কাছ থেকে একটি দেশি পাইপ গান, কার্তুজ ও কয়েকটি ভোজালি উদ্ধার করেছিল পুলিশ ৷ তারপর থেকেই নূরের বিরুদ্ধে মামলা চলছে আদালতে ৷