বাঁকুড়া, 21 নভেম্বর: রেশন কার্ডে (Ration Card) শ্রীকান্তিকুমারের পদবি সংশোধন করে দিল খাদ্য দফতর ৷ প্রতিশ্রুতি মতো দু’দিনেই তাঁর নামের পাশে বসল ‘দত্ত’ পদবি ৷ দত্তের বদলে পদবি ‘কুত্তা’ হয়ে যাওয়ায় যে বিড়ম্বনার মুখে পড়েছিলেন বাঁকুড়ার এই যুবক, তা থেকেও মুক্তি পেলেন তিনি ৷
যদিও এই ভুল সংশোধন করতে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয় তাঁকে ৷ শেষে প্রতিবাদের অভিনব পন্থাও বেছে নেন বাঁকুড়া-2 ব্লকের কেশিয়াকোল গ্রামের বাসিন্দা শ্রীকান্তিকুমার দত্ত ৷ পদবিতে ‘কুত্তা’র জায়গায় দত্ত ফেরাতে সরকারি আধিকারিকের সামনে ‘ঘেউ ঘেউ’ শব্দ করে যান নাগাড়ে ৷ দুয়ারে সরকারের (Duare Sarkar) ক্যাম্পে বাঁকুড়া-2 ব্লকের জয়েন্ট বিডিও-র পিছনেও এভাবেই ঘুরতে দেখা যায় তাঁকে ৷
শ্রীকান্তিকুমার দত্তর সংশোধিত রেশন কার্ড প্রসঙ্গত, 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের (Bengal Assembly Elections 2021) আগে দুয়ারে সরকার প্রকল্প চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ৷ ভোটে জিতে আসার পর তিনি জানান, বছরে তিনবার করে হবে এই শিবির ৷ চলতি মাসে এই বছরের তৃতীয় শিবির চলছে বিভিন্ন জেলায় ৷ বাঁকুড়-2 ব্লকের এমনই একটি শিবিরে শ্রীকান্তিকুমারের এই অভিনব প্রতিবাদের ভিডিয়ো তোলেন কেউ কেউ ৷ যা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ৷
অনেকে প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে একজন মানুষের পদবিতে এমন ভুল হতে পারে ? কেউ কেউ সরকারি আধিকারিকদের কর্মপন্থাকেই দোষ দেন ৷ আবার অনেকে শ্রীকান্তিকুমারের প্রতিবাদের ‘ভাষা’কে কুর্ণিশ জানান ৷ শ্রীকান্তি অবশ্য সেদিন অভিযোগ করেছিলেন, রেশন কার্ডের নাম নিয়ে তিনি কার্যত নাজেহাল হচ্ছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে ৷ কারণ, প্রথমেই ভুল পদবি এসেছিল ৷ তার পর যতবার সংশোধন করাতে গিয়েছেন, ততবারই কিছু না কিছু ভুল হয়েছে ৷ প্রথমবার তাঁর পদবি দত্তর বদলে করে দেওয়া হয় মণ্ডল ৷ দুয়ারে সরকারের শিবিরে গিয়ে তিনি তা সংশোধন করান ৷
‘কুত্তা’র বদলে ‘দত্ত’ পদবি ফিরে ফেলেন বাঁকুড়ার শ্রীকান্তি তাঁর আরও অভিযোগ, সংশোধিত রেশন কার্ড হাতে পান ৷ সেখানে আবার দেখা যায় তাঁর নাম হয়ে গিয়েছে শ্রীকান্ত ৷ তাই আবার তিনি সংশোধনের আবেদন করেন ৷ তখন দত্তর বদলে তাঁর পদবিতে লেখা ছিল কুত্তা ৷ যা দেখে তিনি রীতিমতো মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন ৷ তখনই তিনি এই অভিনব পন্থায় প্রতিবাদ করবেন বলে ঠিক করেন ৷
তাঁর প্রতিবাদের পর সরকারি তরফে নতুন করে সংশোধনের নথি জমা নেওয়া হয় ৷ দু’দিনের মধ্যে ঠিক করে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ৷ শেষ পর্যন্ত দু’দিনের মধ্যেই সঠিক পদবি-সহ রেশন কার্ড হাতে পেলেন শ্রীকান্তি ৷ যা পেয়ে তিনি খুশি ৷ তাঁর কথায়, তাঁর মতো এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের এই ধরনের সমস্যা হয় ৷ তাঁরাও নথি সংশোধন করতে গিয়ে নাজেহাল হয়ে যান ৷ তাই সকলের সমস্যার সমাধান হলে তিনি আরও খুশি হবেন বলে জানিয়েছেন ৷ একই সঙ্গে তাঁর সমস্যা তুলে ধরায় তিনি সংবাদমাধ্যমকেও ধন্যবাদ দিয়েছেন ৷
আরও পড়ুন:রেশন কার্ডে পদবি 'কুত্তা', ঘেউ ঘেউ করে প্রশাসনে অভিযোগ বাঁকুড়ার শ্রীকান্তির