আলিপুরদুয়ার, 29 অক্টোবর : চা বাগানের প্রকৃত মালিক কে তা নিয়ে উত্তেজনা ৷ আলিপুরদুয়ার 2 নম্বর ব্লকের কোহিনুর চা বাগানের ঘটনা ।
বাগানের 1300 শ্রমিকের বক্তব্য, বর্তমান মালিকপক্ষই চা বাগানের প্রকৃত মালিক । 2018 সালে বর্তমান মালিকের থেকে পাঁচ বছরের জন্য লিজ়ে বাগান নেওয়া মালিকপক্ষ প্রতারক বলে অভিযোগ । শ্রমিকদের আরও অভিযোগ, লিজ়ে নেওয়া বাগান মালিক কেশব সিনহা শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, বোনাসের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বাগান ছেড়ে পালিয়ে গেছেন । সব মিলিয়ে দু'বছরে কেশব সিনহা বাগান শ্রমিকদের প্রায় চার কোটি টাকা উধাও করে দিয়েছেন । 2004 সালে বর্তমান মালিকপক্ষ সাগর মাল আগরওয়াল, দীনেশ আগারওয়াল জলপাইগুড়ির এন এম দাগা নামে এক ব্যক্তির থেকে বাগানটি কিনে নেন । সেই সময় থেকে বাগানের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন কেশব সিনহা । 2018 সালে সাগর মাল আগরওয়াল আর্থিক টানাপোড়েনের জেরে তৎকালীন ম্যানেজার কেশব সিনহাকে বাগনটি পাঁচ বছরের জন্য লিজ়ে দেন । অভিযোগ, কেশব সিনহা বাগান শ্রমিকদের কোনও বকেয়া মেটাননি । উলটে বাগানের বিদ্যুতের বিল, জলের ট্যাঙ্ক, শেড ট্রিসহ একাধিক মেশিনপত্র বিক্রি করে দিয়ে চলতি বছরের 10 অগাস্ট রাতের অন্ধকারে বাগানে প্রি-লক আউট নোটিস ঝুলিয়ে দিয়ে গা ঢাকা দেন । এরপরই ফের আগের মালিকপক্ষ বাগানটি নিজেদের দখলে নিয়ে বাগানে প্রবেশ করে ।
আলিপুরদুয়ারে চা বাগানের মালিকানা নিয়ে অশান্তি বাগানের বর্তমান মালিক সাগর মাল আগরওয়াল বলেন, "আমরা বাগান চালাতে পারছিলাম না । তাই কেশবকে পাঁচ বছরের জন্য বাগানটি লিজ়ে দিই । কিন্তু তিনি বাগান লিজ়ে নেওয়ার যে শর্ত তার একটিও পালন করেননি । একেবারে দেনায় ডুবিয়ে তিনি বাগান ছেড়ে পালিয়ে গেছেন । এই বাগানের চিন্তায় আমার ভাই মৃত্যুর পথে । তবে শ্রমিকদের কথা ভেবে বাগানটি চালিয়ে যাচ্ছি ৷ কেশববাবু এখন বাগান ছাড়ে দেওয়ার জন্য আমার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে । আমার 16 বছরের ছেলেকে অপহরণের হুমকি দিচ্ছে । আমরা সমস্ত ঘটনা শামুকতলা থানা এবং জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি ।"
বাগানের এক কর্তা ওমপ্রকাশ উপাধ্যায় বলেন, "গত একমাস ধরে বাগানটি আমরা চালাচ্ছি । শ্রমিকদের 18 শতাংশ বোনাস এবং 20 বছরের বকেয়া গ্র্যাচুইটি প্রদান করেছি । কেশববাবু বাগানটিকে ঋণে জর্জরিত করে দিয়েছে । কেশববাবু আমাদের বাগান ছাড়ার জন্য বারবার হুমকি দিচ্ছে । সমস্ত বিষয় আমরা পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়ে রেখেছি । বাগানের শ্রমিকদের অভিযোগ কেশব সিনহা একজন প্রতারক । সে বাগানের সমস্ত কিছু চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছে ।" কেশব সিনহাকে আর বাগানে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানান বাগানের শ্রমিকরা ।
এই বিষয়ে কেশববাবু ফোনে জানান, "এই বাগানে আমার লিজ় পাঁচ বছরের । আমার লিজ়ের মেয়াদ ফুরায়নি । আমি এই বাগানে প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করেছি । বাগানের মালিক গায়ের জোর দিয়ে বাগানের দখল নিয়েছে । আমার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন । আমি এই বিষয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি ।"