ETV Bharat / state

বান্ধবী হওয়ার সুযোগ নিয়ে প্রতারণা, লালবাজারের অভিযানে গ্রেফতার একাধিক মহিলা

কলকাতার মিন্টো পার্কে একটি অফিসে অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশ৷ গ্রেফতার 17৷ ধৃতদের মধ্যে 16 জন মহিলা৷

Representative Image
প্রতীকী ছবি (ফাইল ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : October 15, 2025 at 4:21 PM IST

3 Min Read
Choose ETV Bharat

কলকাতা, 15 অক্টোবর: আপনি কি একা? আপনার কি সঙ্গীর প্রয়োজন রয়েছে? সোশাল মিডিয়ায় এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া বিজ্ঞাপন হামেশাই দেখা যায়৷ কিন্তু এই বিজ্ঞাপনের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে এক ভয়ঙ্কর জালিয়াতি চক্র৷ যে চক্র সঙ্গী বা সঙ্গিনী খুঁজে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলছিল সাধারণ মানুষকে৷

সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের এক অভিযানে এই বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে৷ গ্রেফতার হয়েছে 17 জন৷ তাৎপর্যপূর্ণভাবে গ্রেফতার যাঁরা হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে 16 জন মহিলা৷ অভিযোগ, ওই মহিলাদের দিয়েই প্রতারণার ফাঁদ হতো৷ তার পর সেই ফাঁদে যাঁরা পড়তেন, তাঁদের সর্বস্বান্ত করে দেওয়া হতো৷

ভুয়ো ডেটিং অ্যাপ

কলকাতা পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার মিন্টো পার্ক অঞ্চলে এই চক্রের একটি অফিস ছিল৷ সেখানে বসেই ডেটিং অ্যাপের কারবার চলত৷ প্রতারণার জন্য একটা নয়, একাধিক ভুয়ো ডেটিং অ্যাপ তৈরি হয়েছিল৷ কখনও সোশাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে, আবার কখনও অন্যভাবে প্রলোভন দেখানো হতো৷

অনেকে সেই প্রলোভনে পা দিতেন৷ যোগাযোগ করতেন৷ তার পর সেই ব্যক্তিদের একাকিত্ব কাটাতে সঙ্গিনীর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলেও জানানো হতো৷ এর জন্য টাকা চাওয়া হতো৷ অনেকে টাকার অঙ্ক শুনে পিছিয়ে যেতেন৷ আবার অনেকে রাজি হয়ে টাকা দিয়েও দিতেন৷ তাঁদের কাছে পরে আরও টাকা চাওয়া হতো৷ এভাবেই অনেকে সর্বস্বান্ত হয়েছেন৷

প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস

পুলিশ সূত্রে খবর, এসব ক্ষেত্রে লোকলজ্জার ভয়ে অনেকেই অভিযোগ জানাতে আসেন না৷ প্রতারিত হয়েও চুপ করে থাকেন৷ সেই সুযোগে আরও অনেকে প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পড়ে যান৷ তবে অনেকে পুলিশের দ্বারস্থ হন৷ এমন কয়েকটি অভিযোগ সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের কাছে দায়ের হয়৷ সেই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা৷

সেই তদন্তেই মিন্টো পার্কের একটি অফিসের হদিশ মেলে৷ তার পর আচমকাই একদিন সেখানে পুলিশ অভিযান করে৷ সেই অফিস থেকেই 16 জন মহিলাকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা৷ ওই মহিলারাই প্রতারণা চক্রে গ্রাহকদের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করতেন৷ এছাড়া আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়৷ সেখান থেকে উদ্ধার হয় ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্যাংক সংক্রান্ত নথি, মোবাইল ফোন, রেজিস্টার এবং লেনদেনের রেকর্ড। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে কয়েকজন আগেও একই ধরনের প্রতারণায় যুক্ত ছিলেন।

পুলিশ কী বলছে?

এই নিয়ে অবশ্য কলকাতা পুলিশের কোনও আধিকারিক সরাসরি মন্তব্য করতে চাননি৷ তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক বলেন, "প্রত্যকেকে জেরা করা হচ্ছে৷" পুলিশের অন্য এক আধিকারিক বলেন, “এই চক্র অত্যন্ত সংগঠিতভাবে কাজ করত। মানুষকে মানসিকভাবে প্রভাবিত করে টাকা হাতানোই ছিল এদের লক্ষ্য। ধৃতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পুলিশের ধারণা, এই চক্রের জাল শহরের বাইরেও বিস্তৃত। লালবাজারের গোয়েন্দারা এখন খতিয়ে দেখছেন, রাজ্যের অন্যান্য জায়গায়ও কি এদের সহযোগীরা সক্রিয় আছে?

এছাড়া এই বিষয়ে নাগরিকদেরও আরও সচেতন হতে হবে বলে মনে করছে পুলিশ৷ তাদের বক্তব্য, এই ধরনের প্রতারণা সম্পর্কে বারবার সচেতনতামূলক প্রচার করা হয়৷ তার পরও মানুষ সচেতন হন না৷ তাই এই অপরাধীরা প্রতারণা চক্র চালিয়ে যেতে সাহস পায়৷

আরও পড়ুন -

  1. আশ্রমের আড়লে দেহব্যবসা ! মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে আসা মহিলাকে মারধরের অভিযোগ
  2. হোটেলে দেহব্যবসা হাতেনাতে ধরলেন গ্রামবাসী, পুলিশি মদতের অভিযোগ স্থানীয়দের