
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জীবনকৃষ্ণ সাহার নামে ইডির চার্জশিট
দুর্নীতির টাকায় 12টি সম্পত্তি কিনেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক৷ চার্জশিটে উল্লেখ করল ইডি৷

Published : October 18, 2025 at 9:26 PM IST
কলকাতা, 18 অক্টোবর: রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গ্রেফতারির 60 দিনের মাথায় শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থা।
ইডির অভিযোগ, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতিতে অন্তত দেড় কোটি টাকার অনিয়মে যুক্ত ছিলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। সেই টাকায় তিনি কিনেছিলেন 12টিরও বেশি সম্পত্তি। এদিন আদালতে যে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে, সেখানে ইডির তরফে এই তথ্যগুলি উল্লেখ করা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের সূত্র থেকে জানা গিয়েছে৷
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, এই চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে যে জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে সংগৃহীত প্রমাণ ছাড়াও অন্তত 12 জন চাকরি প্রার্থীর বয়ান রয়েছে। যাঁরা নিয়োগের জন্য বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ককে টাকা দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। ইডি সূত্রে খবর, এই বয়ানগুলিতেই দুর্নীতির চক্রের কার্যপ্রণালী স্পষ্ট হয়েছে। অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে প্রার্থীদের নাম সুপারিশ করা হতো এবং বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হতো।
অন্যদিকে, জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে সিবিআই-এর জমা দেওয়া চার্জশিটেও অনুরূপ অভিযোগই রয়েছে। সেখানে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে কীভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ার আড়ালে কোটি কোটি টাকার লেনদেন চলছিল। ইডির চার্জশিটে আরও দাবি করা হয়েছে, তদন্ত চলাকালীন জীবনকৃষ্ণ সাহা একাধিকবার তদন্তে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করেন। তদন্তকারীরা জানান, তাঁর বিরুদ্ধে মোবাইল ফোন নষ্ট করার এবং বাড়ির পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে।
তবে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে এর আগে জীবনকৃষ্ণ সাহা বলেছিলেন, “আমার পৈতৃক ব্যবসা আছে। সেই ব্যবসার টাকাই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাওয়া গিয়েছে। দুর্নীতির টাকা নয়, নিজের পরিশ্রমের টাকাতেই আমরা সম্পত্তি কিনেছি।”
তদন্তকারীদের মতে, এই চার্জশিট নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় খুলে দেবে। কারণ, এখানে শুধু টাকার লেনদেন নয়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর দিকটিও উঠে এসেছে। এখন আদালতের নির্দেশেই নির্ধারিত হবে পরবর্তী পদক্ষেপ।
উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জীবনকৃষ্ণ সাহা দু’বার গ্রেফতার হয়েছে৷ প্রথমবার তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই৷ সেবার তিনি বাড়ির পুকুরে নিজের দু’টি ফোন ফেলে দিয়েছিলেন৷ পরে সেই ফোন উদ্ধার করেন সিবিআই আধিকারিকরা৷ তার পর কিছুদিন সিবিআই হেফাজতে থাকার পর তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠায় আদালত৷ পরে তাঁর জামিন হয়৷
সম্প্রতি একই মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি৷ সেই গ্রেফতারির সময়ও তিনি বাড়ির পুকুরে ফোন ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন৷ তবে সফল হননি৷ পুকুরপাড় থেকে ফোন উদ্ধার করে ইডি৷ এমনকী তিনি পাঁচিল ডিঙিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ৷

