কলকাতা, 13 জুন: বার্ড ফ্লুর আতঙ্কের মাঝে নির্দেশিকা জারি করে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করল স্বাস্থ্যভবন । বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যভবনে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম এবং প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বিবেক কুমার। সেখানেই সচিবদের তরফে বলা হয়, "ডিম-মাংস-পোল্ট্রি জাতীয় খাবারে কোনও বাধা নেই ।" এমনকী তাঁরা এও জানান, রাজ্যের যে দু’জনের শরীরে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ হয়েছে, কীভাবে এবং কোথা থেকে ভাইরাস তাদের শরীরে ঢুকেছে তাও স্পষ্ট নয়।" তবে এরাজ্য থেকে যে ভাইরাস তাদের শরীরে প্রবেশ করেনি, তাও স্পষ্ট করেছে স্বাস্থ্য দফতর ।
প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব বিবেক কুমার বলেন, "এপ্রিল-মে মাসে 1728 জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। যার মধ্যে মালদাতে পরীক্ষা করা হয়েছে 390টি নমুনা। কিন্তু এর মধ্যে একটিতেও বার্ড ফ্লুর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।" এই পরিসংখ্যান দেওয়ার পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, "সম্প্রতি যে দুই শিশুর পরীক্ষার নমুনায় চার ধরনের ভাইরাস মিলেছে, তার মধ্যে একজনের বার্ড ফ্লু দেখা গিয়েছে। সেটা ইনফ্লুয়েঞ্জা হলেও লো প্যাথজেনিক। এমনকী কোনও সোর্স আমাদের রাজ্যে নেই ৷ তাই কোথা থেকে এসেছে বলতে পারব না। এ কারণেই বলা হচ্ছে হাঁস-ডিম মুরগি অর্থাৎ পোল্ট্রি জাতীয় খাবারে কোনও বাধা বা নির্দেশিকা নেই ।"
এদিন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম জানান মালদায় এক শিশুর ইনফ্লুয়েঞ্জা হয়েছিল । প্রথমে তাকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও পরবর্তীকালে নিয়ে আসা হয় নীলরতন সরকার হাসপাতালে । মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ জিনোম সিক্যুয়েন্সের জন্য তার নমুনা পাঠানো হয়েছিল। সেখানে H9N2 ভাইরাস ধরা পড়ে ওই শিশুর শরীরে । প্রথমে নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট আসে ৷ হাসপাতালে অবজারভেশনে রাাখার পর দ্বিতীয়বার পরীক্ষা করা হলে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে ৷ বর্তমানে শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ ।
অপরদিকে, আরও একটি শিশু কলকাতা থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে ফেরত যায় ৷ সেখানে তার দেহে H5N1 ধরা পড়ে ৷ তবে এই দুই বাচ্চার সংস্পর্শে আসা কোনও মানুষের শরীরেই এই স্ট্রেন ধরা পড়েনি। স্বাস্থ্য সচিবের কথায়, "এখনই আতঙ্কিত হয়ে পড়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি। সাধারণ যে সমস্ত নির্দেশিকা থাকে হাইজিন সংক্রান্ত। সেই সবই মেনে চলতে হবে ৷ বার্ড ফ্লু-র জন্য আলাদা বা বিশেষ কোনও সতর্কতা নেওয়ার প্রয়োজন নেই ।"