কলকাতা ও দিল্লি, 1 জুলাই: চোপড়া ও কোচবিহারের পর কলকাতা। রাজ্যে ধারাবাহিক হিংসা নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর দায়-দায়িত্ব নিয়েও সোমবার প্রশ্ন তুললেন বাংলার সাংবিধানিক প্রধান ৷ বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলায় এমন হিংসার ঘটনা ঘটতে দেখে তিনি 'হতবাক'। দিল্লি থেকে ভিডিয়ো বার্তায় রাজ্যের অব্যবস্থা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন রাজভবনের এই বাসিন্দা। ভিডিয়োর একটি অংশে তাঁকে বলতে শোনা যায় বাংলায় পুলিশের একাংশের অপরাধিকরণ হয়েছে ৷
এদিন তিনি ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, "গুরুদেবের বাংলায় কী হচ্ছে? পুলিশ মন্ত্রী কী করছেন? জঙ্গলরাজের থেকেও খারাপ অবস্থা! বাংলার অবস্থা দেখে প্রশ্ন ওঠে এখানে কি পুলিশ বা প্রশাসন বলে সত্যি কিছু আছে ৷ হ্যাঁ বাংলায় পুলিশ আছে ৷ কিন্তু এখানে কে পুলিশ আর কে অপরাধি সেটাই বুঝতে পারা যাচ্ছে না ৷ পুলিশের একাংশের অপরাধিকরণ হয়ে গিয়েছে ৷" আর এসব রুখতে সংবিধান মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিলেন সিভি আনন্দ বোস। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় যুবক ও যুবতীকে প্রকাশ্যে মারধর প্রসঙ্গ-সহ একাধিক ঘটনার কথা উল্লেখ করে নবান্নকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল ৷ রাজ্যে কেন বারবার আইন হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটছে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷
এদিন রাজ্যপালের ভিডিয়ো বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। রাজ্যের পুলিশ ও পুলিশ মন্ত্রীকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন আনন্দ বোস। হিংসার ঘটনা পুলিশ গ্যালারিতে বসে দেখছে বলে তাঁর দাবি। শুধু তাই নয় গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শিশু চোর কিংবা মোবাইল ফোন চোর সন্দেহে যে গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে সে সমস্ত বিষয়েও 'অ্যাকশন' নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
বারাসাত, দত্তপুকুর, বনগাঁ-সহ একাধিক জায়গায় শিশু চোর সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঝড় তুলেছে ৷ সাধারণ মানুষের হাতে আইন তুলে নেওয়ার বিষয়েও সরব হয়েছেন তিনি ৷ রাজ্যে ঘটে যাওয়া নানা অপ্রীতিকর ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ হিংসার সঙ্গে যুক্তদের ও হিংসাকে যাঁরা প্রশ্রয় দিচ্ছেন তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা বলেও হুঁশিয়ারি দেন সিভি আনন্দ বোস।