হাওড়া, 26 জুলাই: গঙ্গার বুকে উথাল-পাথাল ঢেউয়ের মধ্যে দিয়ে যাত্রীবোঝাই লঞ্চ কোনওমতে পাড়ে ফিরল ৷ বৃহস্পতিবার এই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর তা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় নেটদুনিয়ায়।
ভিডিয়োতে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, গঙ্গায় জোয়ারে প্রবল ঢেউয়ে বেসামাল হয়ে যাচ্ছে ওই যাত্রীবোঝাই লঞ্চ। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণেশ্বর থেকে বেলুড়মঠের লালগোলা ঘাটে আসার সময় একটি যাত্রিবাহী লঞ্চ গঙ্গার বুকে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের মুখে পড়ে ৷ সেই সময় গঙ্গায় জোয়ার চলছিল ৷ জোয়ারের সময় বিপরীতমুখী স্রোত থাকার জন্য উথাল-পাতাল ঢেউয়ের সামনে মোচার খোলার মতো দুলছিল লঞ্চটি ৷ ডুবে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ৷
তখন যাত্রীবোঝাই লঞ্চে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কয়েকজন যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে থাকেন সবাই। এইভাবে প্রায় 15-20 মিনিট চলার পর অবশেষে লঞ্চ এসে থামে বেলুড় মঠের পাশে লালগোলা ঘাটে। কোনওমতে নামার পর যাত্রীরা হাফ ছেড়ে বাঁচেন ৷ কয়েকজন সামান্য অসুস্থ হয়ে পড়লেও বড় বিপদ থেকে অল্পের জন্য যাত্রীদের প্রাণ রক্ষা পায় ৷
- ওই রুটে নিত্যযাত্রী সমর ঘোষ বলেন, "ভিডিয়োটি দেখেছেন তিনি, লঞ্চে অনেক সময় লাইফ জ্যাকেট পর্যাপ্ত থাকে না। অফিস টাইমে যে পরিমাণ যাত্রী ওঠে সেই তুলনায লাইফ জ্যাকেট পর্যাপ্ত থাকে না। তবে এর জন্য শুধু সরকারকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। অনেক সময় থাকলেও অনেক যাত্রী তা পরতে চান না। এক্ষেত্রে সকলের সচেতন হওয়া উচিত।"
- অপরদিকে ফেরিঘাট কর্মী বিশ্বজিৎ সরকারের অবশ্য দাবি, দুর্ঘটনা কিছুই ঘটেনি। পূর্ণিমা, অমাবস্যায় নিয়মিত বান আসে। এই সময় লঞ্চ নিয়ে মাঝখানে থাকাই নিরাপদ। তবে, চিন্তাভাবনা করা দরকার ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বান আসবে, তা বুঝতে পারেনি।
- বেলুড় থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত ফেরি সার্ভিস চলে সারফেস ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের অধীনে। অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অসিত দাস জানান, যে ধরনের লঞ্চ তাঁরা এই রুটে চালান সেগুলি সবই নিরাপদ ৷ মাঝেমধ্যে আসা বানে বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা নেই ৷
এদিকে যাত্রীদের প্রশ্ন, প্রতিদিন জোয়ারের নির্দিষ্ট সময়ে লঞ্চ যাতায়াত বন্ধ থাকে। তাহলে কেন জোয়ারের সময় ওই লঞ্চ ছাড়া হল। পাশাপাশি সরকারি নির্দেশিকা মেনে লাইফ জ্যাকেট কেন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকবে না, তাই নিয়েও প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা। সব মিলিয়ে মঙ্গলবারের ভাইরাল হওয়া এই ছবি জলপথ পরিবহণ নিয়ে সুরক্ষাহীনতার প্রশ্ন উঠছে।