বোলপুর, 16 সেপ্টেম্বর: সন্তানকে কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মহিলা ৷ চারপাশের কচিকাচাদের থেকেও কান্নার আওয়াজ ৷ জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে ঘর ৷ কিছুই বের করে আনতে পারেননি ৷ এই পরিস্থিতিতে কোথায় যাবেন, কী খাবেন, কীভাবে বাঁচবেন তা কিছুই জানেন না ৷ গভীর নিম্নচাপের জেরে এমনই পরিস্থিতি বীরভূমের একাধিক জায়গায় ৷ লাভপুরে নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত বেশ কয়েকটি গ্রাম ৷ কোপাই সেতু, কঙ্কালীতলা মন্দির জলের তলায় ৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু ধান জমি ও কাঁচা বাড়ি । ইতিমধ্যেই সিউড়ি 2 ও ইলামবাজারে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে । পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এলাকা পরিদর্শনে নেমেছেন বীরভূম জেলাশাসক বিধান রায় ।
এই মরশুমে এক মাসের মধ্যে দু'বার প্লাবিত হল বোলপুর, শান্তিনিকেতন, লাভপুর- সহ বীরভূম জেলার একাধিক জায়গা । লাভপুরের বলরামপুরে ডোমপাড়ার কাছে কুয়ে নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত বলরামপুর, রামঘাটি, জয়চন্দ্রপুর, খাঁপুর, ঠিবা-সহ প্রায় 15টি গ্রাম প্লাবিত । মানুষজন ঘর ছাড়ছেন ৷ সদ্য বীজ বপন হয়েছে সেই পরিস্থিতিতে একাধিক ধান জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে ৷
অন্যদিকে, কোপাই নদীর সেতুর উপর দিয়ে জল বইছে । স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ শান্তিনিকেতন থানার কসবা হয়ে পাড়ুই যাওয়ার রাস্তা ৷ বোলপুর শহরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন 2টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বহু গ্রাম ৷ দু'দিকে পুলিশি ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে । এছাড়া, সতীপীঠের অন্যতম কঙ্কালীতলার গর্ভগৃহেও জল ঢুকেছে ৷
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে জেলাশাসক জানান, গত 3 দিনে বীরভূমে প্রায় 200 মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে । সিকাডিয়া জলাধার থেকে দু'দিনে 10 হাজার কিউসেক করে মোট 20 হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে । সিউড়িতে একজন টোটো চালক ও ইলামবাজারে দেওয়াল চাপা পরে একজন মহিলার মৃত্যু হয়েছে । কাঁচা বাড়ি থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ৷ গবাদিপশুদেরও উদ্ধার করার কাজ চলছে ৷ প্রত্যেক এলাকার বিডিওদের পরিস্থিতির উপর নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।