কলকাতা, 12 এপ্রিল: রাজ্যে ভোটার তালিকায় বহিরাগতদের নাম ঢুকে পড়ার আশঙ্কা আগেই প্রকাশ্যে এনেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এবার সেই আশঙ্কার জায়গা থেকেই ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখতে রাজ্যজুড়ে বছরব্যাপী সমীক্ষায় নামছে তৃণমূল কংগ্রেস ।
বাংলা নববর্ষ থেকে অর্থাৎ 15 এপ্রিল থেকে শুরু হবে এই বিশেষ সমীক্ষা । চলবে আগামী 2026 সালের এপ্রিল পর্যন্ত । দলীয় সূত্রে খবর, এই সমীক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকছে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকও ।
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, 2026-এ নির্ধারিত বিধানসভা ভোটের আগে ভোটার তালিকা যেন সঠিক থাকে, তা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ । দলের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, যাঁরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে এই যাচাই করবেন, তাঁদের প্রশিক্ষণের কাজ প্রায় শেষের দিকে । ভবিষ্যতে আরও কর্মী লাগলে, তাঁদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সমীক্ষার জন্য চারস্তরের পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে । গ্রামাঞ্চলে পঞ্চায়েত ও ব্লক স্তরের 'ইলেক্টোরাল সুপারভাইজার', আর শহরে ওয়ার্ড ও টাউন স্তরের সমন্বয়কারী থাকবেন । তাঁদের কাজ, প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে ভোটার তালিকার সঙ্গে বাস্তব তথ্য মিলিয়ে দেখা ।
আই-প্যাকের তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার তৈরি হয়েছে । সমীক্ষার মাধ্যমে সংগৃহীত যাবতীয় তথ্য সেখানে আপলোড করা হবে । দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সেই তথ্য যে কোনও সময়ে দেখতে পারবেন ।
ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় এক সাংগঠনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন, ভোটার তালিকা নিয়ে বিস্তারিত খতিয়ে দেখতে হবে । তাঁর অভিযোগ ছিল, বাইরের রাজ্য থেকে অনেকের নাম বেআইনিভাবে রাজ্যের ভোটার তালিকায় ঢুকছে । সেই নির্দেশ মেনেই দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে বিশেষ পর্যবেক্ষক কমিটি ।
তৃণমূলের অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, অন্য রাজ্যের ভোটারের ও রাজ্যের ভোটারের এপিক নম্বর এক । গত মাসে এই নিয়ে তৃণমূল সাংসদদের এক প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানায়, যেন আধার ও পাসপোর্টের মতো ভোটার কার্ডেও একটি 'একক পরিচিতি নম্বর' বাধ্যতামূলক করা হয় ।
সব মিলিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজের ভোটভিত্তি আরও পোক্ত করতে সংগঠন ও প্রশাসনের হাত ধরেই মাঠে নামছে তৃণমূল । এবার লক্ষ্য শুধু প্রচার নয়—ঘরে ঘরে গিয়ে ভোটার তালিকা যাচাই ।