পাড়ুই, 27 জুন: 'জমি দিবি, নাকি ছেলের মাথা নিবি' এমনই হুমকি দিয়ে আদিবাসী-সহ কৃষকদের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছিল মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ৷ জমি ফেরত পেতে বৃহস্পতিবার 'সবুজপত্র' নামের 'বিতর্কিত' আবাসনের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন আদিবাসী-কৃষকরা ৷ পুলিশের সামনেই আবাসনের গেটে ধাক্কাধাক্কি থেকে শুরু করে অশান্তি শুরু হয়ে যায় ৷ পরে পাড়ুই থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে ঘটনাস্থলে ৷ বিক্ষোভের মুখে অবশেষে বাধ্য হয়েই আবাসন কর্তৃপক্ষ দখল হওয়া 22 বিঘা জমিতে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে ৷ অন্যদিকে, বীরভূমের জেলা শাসকের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর ৷
প্রসঙ্গত, গায়ের জোরে জমি দখল নিয়ে সরব হয়েছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেই সময় বীরভূমের পাড়ুই থানার সাত্তোর গ্রাম পঞ্চায়েতের সরপুকুরডাঙ্গা গ্রামে আদিবাসী ও কৃষকদের প্রায় 22 বিঘা পাট্টা, বর্গা ও চাষের জমি দখলের অভিযোগ ওঠে ৷ এখানেই গড়ে ওঠে 'সবুজপত্র' নামে একটি বিলাসবহুল আবাসন ৷
জমিহারাদের অভিযোগ এর নেপথ্যে রয়েছে শাসক দলের মদতপুষ্ট জমি মাফিয়ারা ৷ জমি ফিরে পেতে বীরভূম জেলাশাসক থেকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অভিযোগ জানিয়েছেন ৷ কিন্তু, কোনও ফল হয়নি ৷ উল্লেখ্য, 1992 সালে তৎকালীন সাংসদ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের আমলে পাট্টা পেয়েছিলেন এই এলাকার 40 জন আদিবাসী ও কৃষক ৷ সেই জমি ভয় দেখিয়ে দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৷
এদিন, নিজেদের জমি ফেরত চেয়ে বিক্ষোভে নামলেন জমিহারারা ৷ সবুজপত্র নামে আবাসনের সামনে ব্যানার-পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা ৷ পরে আবাসনের গেটে ধাক্কাধাক্কি দিয়ে ভিতরে ঢুকতে চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা ৷ এমনকী আবাসনের সামনে শান্তিনিকেতন থেকে পাড়ুই যাওয়ার রাস্তাও অবরোধ করেন তাঁরা ৷ খবর পেয়ে পাড়ুই থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয় ৷ আবাসনের প্রোজেক্ট ম্যানেজার মহাদেব মণ্ডল বিক্ষোভকারীদের সামনে এসে মিমাংসা না হওয়া পর্যন্ত আবাসনের কাজ বন্ধ রাখার আশ্বাস দেন ৷ তারপর বিক্ষোভ ওঠে ৷ বীরভূম জেলা শাসক বিধান রায় বলেন, "আমি অভিযোগ পেয়েছি, সেই মতো তদন্ত চলছে ৷"