ETV Bharat / state

ট্রাম বাঁচাতে ধর্না কর্মসূচি, 'যানজটের' দোহাই দিয়েই বাঁধা ট্রাফিক পুলিশের - TRAM LOVERS PROTEST

নোনাপুকুর ট্রাম ওয়ার্কশপের সামনে একটি ধর্না কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয় । তাতেই বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে ৷

kolkata tram
ট্রাম বাঁচানোর সপক্ষে ধর্না কলকাতায় (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : April 30, 2025 at 12:12 PM IST

4 Min Read

কলকাতা, 30 এপ্রিল: ঠিক দুপুর 2টোর সময় নোনাপুকুর ট্রাম ওয়ার্কশপের বিপরীত ফুটপাতে ধর্না কর্মসূচি পালনের কথা ছিল । কিন্তু ট্রাম বাঁচাবার স্বপক্ষে একটি শান্তিপূর্ণ ধর্না কর্মসূচি পালনে পথে সেই 'রাস্তায় যানজটের' দোহাই দিয়ে বাঁধা হয়ে দাঁড়াল ট্রাফিক পুলিশ ৷ তবে শত পুলিশি বাঁধা অতিক্রম করেও সফল হয় ধর্না কর্মসূচি বলে দাবি ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের (সিটিইউএ) ।

শহর কলকাতা জেট গতিতে এগিয়ে চলেছে, তাই ট্রাম নাকি আর সেই গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না । অথচ এক সময়ের অতি জনপ্রিয় ছিল এই ট্রাম, তা এখন নাকি রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি অন্ততম কারণ । এমনটাই দাবি কলকাতা ট্রাফিক বিভাগের । আর তাই সরকারের তরফে ট্রাম পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । শুধু তাই নয়, সেতুর উপর ট্রাম চললে নাকি তার ক্ষতি হচ্ছে । তবে এইসব যুক্তি মানতে নারাজ শহরবাসী । এই গণপরিবহণকরে বাঁচাতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রামপ্রেমীরা । ইতিমধ্যেই তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে । এমনকি কলকাতা হাইকোর্টের অবজার্ভেশনও ট্রামের পক্ষেই ।

'যানজটের' দোহাই দিয়েই ধর্নায় বাঁধা ট্রাফিক পুলিশের (ইটিভি ভারত)

ট্রামের গতিপথ ঘোরানো (স্ট্রিট কনভার্ট) থেকে শুরু করে মিটিং মিছিল ডেপুটেশন, সবকিছুই চলছে । আর সেই লড়াইয়ের অঙ্গ হিসেবে এবার নোনাপুকুর ট্রাম ওয়ার্কশপের সামনে একটি ধর্না কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয় । সোমবার বেলা 2 টা থেকে সন্ধ্যা 7টা পর্যন্ত চলে সেই ধর্না । ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য অরুণ সেন জানিয়েছেন, ট্রাম বাঁচাতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে । তবে সরকারের টনক নড়েছে না । সরকার যখন দূষণমুক্ত যান ব্যবহারের উপর জোর দিচ্ছে, তখন ট্রামের মত দূষণ মুক্ত যানকে বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে । তবে সিটিইউএ হাল ছাড়বে না ৷ শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে এবং সদস্যরা এর শেষ দেখে ছাড়বেন ।

kolkata tram
শান্তিপূর্ণ ধর্না কর্মসূচি নোনাপুকুরে (নিজস্ব ছবি)

সংগঠনের সভাপতি দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, "প্রচণ্ড গরম এবং রোদ বলে নোনাপুকুর ট্রাম ওয়ার্কশপের ঠিক উলটোদিকের ফুটপাতে ধর্না কর্মসূচি করার পরিকল্পনা করা হয় ৷ সেই মতো সবকিছু গোছানো চলছিল । কিন্তু কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয় যে ধর্না কর্মসূচি করলে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে ৷ তাই যেখানে ধর্না মঞ্চ বাঁধার কথা ছিল, সেখানে তা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি । এখন যে ধর্না মঞ্চটিকে এই ফুটপাতে বাঁধতে দেওয়া হয়েছে সেটাও খুব ছোট করে ৷ কারণ এখানেও নাকি যানজট সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে । তাই এর থেকে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে আসলে এগুলো হচ্ছে শুধুমাত্র এই ধর্না কর্মসূচি করতে না দেওয়ার অছিলা ।"

তাঁর কথায়, "প্রশাসন বুঝতে পারছে না যে এই মুহূর্তে তিনটে মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে তাই এত সহজে যেমন ট্রাম তুলে দেওয়া যাবে না ৷ তেমনই ট্রামের জমি বিক্রি করে দেওয়া যাবে না । ঠিক নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোর মধ্যে প্রচুর জমি রয়েছে ট্রামের ৷ জমি হাঙড়দের ওই জমির দিকে নজর রয়েছে । নোনাপুকুর ওয়ার্কশপটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্কশপ ৷ কারণ এখানে এক সময় ট্রাম তৈরি হয়েছে ৷ এখানে প্রচুর যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গিয়েছে । আগে এই ট্রাম ডিপোতে কয়েক হাজার লোক কাজ করতেন ৷ কিন্তু এখন মাত্র কয়েকশো হাতে গোনা মানুষ কাজ করেন ।"

kolkata tram
রাস্তায় নামলেন ট্রামপ্রেমীরা (নিজস্ব ছবি)

সংগঠনের ডেপুটি সেক্রেটারি তমাল নন্দ বলেন,"এই ধর্না কর্মসূচি বন্ধ করার সবরকম চেষ্টা করেছে কলকাতা পুলিশ । লালবাজার বেণীয়াপুকুর থানা এছাড়াও ট্রাফিক পুলিশ আমাদের চরম হেনস্থা করেছে । তারা আমাদের কোনওভাবেই এই অবস্থান করতে দেবেন না । কিন্তু ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে ধর্না হবেই । কারণ সমস্ত প্রস্তুতি শেষ মানুষজনকে জানানো হয় গিয়েছে । লম্বায় 12 ফুট এবং চওড়ায় 9 ফুট মঞ্চ করার কথা ছিল ৷ কিন্তু অনুমতি পেয়েও শেষ মুহূর্তে বাঁধা দেওয়া হয় ধর্না করতে ।"

কলকাতা, 30 এপ্রিল: ঠিক দুপুর 2টোর সময় নোনাপুকুর ট্রাম ওয়ার্কশপের বিপরীত ফুটপাতে ধর্না কর্মসূচি পালনের কথা ছিল । কিন্তু ট্রাম বাঁচাবার স্বপক্ষে একটি শান্তিপূর্ণ ধর্না কর্মসূচি পালনে পথে সেই 'রাস্তায় যানজটের' দোহাই দিয়ে বাঁধা হয়ে দাঁড়াল ট্রাফিক পুলিশ ৷ তবে শত পুলিশি বাঁধা অতিক্রম করেও সফল হয় ধর্না কর্মসূচি বলে দাবি ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের (সিটিইউএ) ।

শহর কলকাতা জেট গতিতে এগিয়ে চলেছে, তাই ট্রাম নাকি আর সেই গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না । অথচ এক সময়ের অতি জনপ্রিয় ছিল এই ট্রাম, তা এখন নাকি রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি অন্ততম কারণ । এমনটাই দাবি কলকাতা ট্রাফিক বিভাগের । আর তাই সরকারের তরফে ট্রাম পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । শুধু তাই নয়, সেতুর উপর ট্রাম চললে নাকি তার ক্ষতি হচ্ছে । তবে এইসব যুক্তি মানতে নারাজ শহরবাসী । এই গণপরিবহণকরে বাঁচাতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রামপ্রেমীরা । ইতিমধ্যেই তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে । এমনকি কলকাতা হাইকোর্টের অবজার্ভেশনও ট্রামের পক্ষেই ।

'যানজটের' দোহাই দিয়েই ধর্নায় বাঁধা ট্রাফিক পুলিশের (ইটিভি ভারত)

ট্রামের গতিপথ ঘোরানো (স্ট্রিট কনভার্ট) থেকে শুরু করে মিটিং মিছিল ডেপুটেশন, সবকিছুই চলছে । আর সেই লড়াইয়ের অঙ্গ হিসেবে এবার নোনাপুকুর ট্রাম ওয়ার্কশপের সামনে একটি ধর্না কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয় । সোমবার বেলা 2 টা থেকে সন্ধ্যা 7টা পর্যন্ত চলে সেই ধর্না । ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য অরুণ সেন জানিয়েছেন, ট্রাম বাঁচাতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে । তবে সরকারের টনক নড়েছে না । সরকার যখন দূষণমুক্ত যান ব্যবহারের উপর জোর দিচ্ছে, তখন ট্রামের মত দূষণ মুক্ত যানকে বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে । তবে সিটিইউএ হাল ছাড়বে না ৷ শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে এবং সদস্যরা এর শেষ দেখে ছাড়বেন ।

kolkata tram
শান্তিপূর্ণ ধর্না কর্মসূচি নোনাপুকুরে (নিজস্ব ছবি)

সংগঠনের সভাপতি দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, "প্রচণ্ড গরম এবং রোদ বলে নোনাপুকুর ট্রাম ওয়ার্কশপের ঠিক উলটোদিকের ফুটপাতে ধর্না কর্মসূচি করার পরিকল্পনা করা হয় ৷ সেই মতো সবকিছু গোছানো চলছিল । কিন্তু কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয় যে ধর্না কর্মসূচি করলে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে ৷ তাই যেখানে ধর্না মঞ্চ বাঁধার কথা ছিল, সেখানে তা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি । এখন যে ধর্না মঞ্চটিকে এই ফুটপাতে বাঁধতে দেওয়া হয়েছে সেটাও খুব ছোট করে ৷ কারণ এখানেও নাকি যানজট সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে । তাই এর থেকে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে আসলে এগুলো হচ্ছে শুধুমাত্র এই ধর্না কর্মসূচি করতে না দেওয়ার অছিলা ।"

তাঁর কথায়, "প্রশাসন বুঝতে পারছে না যে এই মুহূর্তে তিনটে মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে তাই এত সহজে যেমন ট্রাম তুলে দেওয়া যাবে না ৷ তেমনই ট্রামের জমি বিক্রি করে দেওয়া যাবে না । ঠিক নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোর মধ্যে প্রচুর জমি রয়েছে ট্রামের ৷ জমি হাঙড়দের ওই জমির দিকে নজর রয়েছে । নোনাপুকুর ওয়ার্কশপটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্কশপ ৷ কারণ এখানে এক সময় ট্রাম তৈরি হয়েছে ৷ এখানে প্রচুর যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গিয়েছে । আগে এই ট্রাম ডিপোতে কয়েক হাজার লোক কাজ করতেন ৷ কিন্তু এখন মাত্র কয়েকশো হাতে গোনা মানুষ কাজ করেন ।"

kolkata tram
রাস্তায় নামলেন ট্রামপ্রেমীরা (নিজস্ব ছবি)

সংগঠনের ডেপুটি সেক্রেটারি তমাল নন্দ বলেন,"এই ধর্না কর্মসূচি বন্ধ করার সবরকম চেষ্টা করেছে কলকাতা পুলিশ । লালবাজার বেণীয়াপুকুর থানা এছাড়াও ট্রাফিক পুলিশ আমাদের চরম হেনস্থা করেছে । তারা আমাদের কোনওভাবেই এই অবস্থান করতে দেবেন না । কিন্তু ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে ধর্না হবেই । কারণ সমস্ত প্রস্তুতি শেষ মানুষজনকে জানানো হয় গিয়েছে । লম্বায় 12 ফুট এবং চওড়ায় 9 ফুট মঞ্চ করার কথা ছিল ৷ কিন্তু অনুমতি পেয়েও শেষ মুহূর্তে বাঁধা দেওয়া হয় ধর্না করতে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.