ETV Bharat / state

আরজি কর থেকে দুর্নীতি ! মমতাকে বিস্ফোরক চিঠি জহর সরকারের, কী লিখেছেন ? - Jawhar Sircar Letter to Mamata

Jawhar Sircar explosive letter to Mamata: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিস্ফোরক চিঠি লিখে সাংসদ পদ ছাড়লেন জহর সরকার ৷ তাঁর চিঠিতে আরজি কর-কাণ্ড থেকে দুর্নীতি ইস্যুতে চাঁছাছোলা ভাষায় রাজ্য সরকারকে বিঁধেছেন তিনি ৷ চিঠিতে কী লিখেছেন প্রাক্তন আমলা ?

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 8, 2024, 12:40 PM IST

Updated : Sep 8, 2024, 1:28 PM IST

ETV BHARAT
মমতাকে বিস্ফোরক চিঠি জহর সরকারের (নিজস্ব চিত্র)

কলকাতা, 8 সেপ্টেম্বর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিস্ফোরক চিঠি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকারের । যে চিঠিতে শুধু আরজি কর আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানানোই নয়, এই সরকার দুর্নীতি ইস্যু সামলাতে ব্যর্থ বলেও সরাসরি দাবি করেছেন এই প্রাক্তন আমলা ।

প্রসঙ্গত, আজই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন এই তৃণমূল সাংসদ । বর্তমান ঘটনা প্রবাহকে সামনে রেখে রাজনীতি থেকে দূরে যাওয়ার কথাও বলেছেন তিনি । আর এমতাবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা তাঁর চিঠি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ । তাঁর প্রত্যেক পংক্তিতেই রয়েছে বিদ্রোহের ইঙ্গিত ।

চিঠিতে জহর সরকার লিখছেন, "আমি গত এক মাস ধৈর্য ধরে আরজি কর হাসপাতালের ঘৃণ্য ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া দেখেছি আর ভেবেছি, আপনি কেন সেই পুরনো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন না। এখন সরকার যে সব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা এককথায় অতি অল্প এবং অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে ।"

ETV BHARAT
মমতাকে বিস্ফোরক চিঠি জহর সরকারের (নিজস্ব চিত্র)

শুরুতে আরজি করের আন্দোলনকে বাম-বিজেপির আন্দোলন বলে দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই পথে হেঁটে তৃণমূলের অন্য নেতারাও সেই দাবি করতে শুরু করেছিলেন প্রকাশ্যে । এই প্রবণতার নিন্দা করেছেন জহর সরকার । তিনি লিখেছেন, "আমার বিশ্বাস, এই আন্দোলনে পথে নামা মানুষেরা অরাজনৈতিক এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদ করছেন । অতএব রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে এই আন্দোলনকে প্রতিরোধ করা সমীচীন হবে না । এঁরা কেউ রাজনীতি পছন্দ করেন না । শুধু বিচার ও শাস্তির দাবি তুলেছেন তাঁরা ।"

দুর্নীতি নিয়ে তাঁর প্রতিবাদে দলীয় নেতৃত্বের অবস্থান নিয়েও এদিন ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন জহর সরকার । তিনি চিঠিতে লিখছেন, "সংসদে নির্বাচিত হওয়ার এক বছর পরে, যখন 2022 সালে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর চূড়ান্ত দুর্নীতির খোলাখুলি প্রমাণ দেখে, প্রকাশ্যে মতামত দিই যে দল ও সরকারের এই ব্যাপারে অত্যন্ত সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন, তখন দলের অনেক বর্ষীয়ান নেতা আমাকে হেনস্তা করেন । তখন আমি পদত্যাগ করা থেকে বিরত ছিলাম এই আশা নিয়ে যে, আপনি 'কাট মানি' ও আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক বছর আগে যে আন্দোলন আরম্ভ করছিলেন, তা চালিয়ে যাবেন ।"

ETV BHARAT
মমতাকে লেখা চিঠিতে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জহর সরকার (নিজস্ব চিত্র)

প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়ে মুখ খোলার পরই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন জহর সরকারকে । স্বার্থপর তকমা দিয়ে সৌগত বলেছিলেন, জহর সরকার যে স্বার্থপর এবং স্বার্থকেন্দ্রিক সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন । এই ধরনের আমলারা এমনই হন । এঁরা উপকার নেন । তার পরে ক্ষতি করার আগে একবারও ভাবেন না । সৌগত রায়ের সেই কটাক্ষ জহর সরকার যে ভোলেননি, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠিতে তা স্পষ্ট ।

একইসঙ্গে এদিন চিঠিতে দুর্নীতির প্রশ্নে শুধু যে একা তৃণমূল দায়ী এমনটা মানতে রাজি নন তিনি । তবে পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতি হলে তিনি তা মেনে নেবেন না । আর সেই জায়গা থেকেই তিনি লিখেছেন, "আমাদের রাজ্য এই অসংযত দুর্নীতি এবং আধিপত্য মেনে নেবে না । আমি জানি কেন্দ্রীয় সরকার বহু কোটিপতিদের আরও ধনবান করে নিজেদের সিংহাসন ও আর্থিক পরিস্থিতি মজবুত করেছে । আমি সবসময় সংসদে ও সামাজিক গণমাধ্যমে মোদি সরকারকে এই সুবিধাবাদী-পুঁজিবাদের নীতির বিষয়ে আক্রমণ করে থাকি । আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারি না যখন দেখি দুর্নীতিগ্রস্ত কোনও অফিসারকে (বা ডাক্তারদের) মন মতো পোস্টিং দেওয়া হয় বা উচ্চতম পদে বসানো হয় ।"

এই কঠোর চিঠি প্রকাশ্যে আসার পর তৃণমূল কংগ্রেস কি বলে সেটাই এখন দেখার । যদিও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এই নিয়ে তৃণমূলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।

কলকাতা, 8 সেপ্টেম্বর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিস্ফোরক চিঠি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকারের । যে চিঠিতে শুধু আরজি কর আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানানোই নয়, এই সরকার দুর্নীতি ইস্যু সামলাতে ব্যর্থ বলেও সরাসরি দাবি করেছেন এই প্রাক্তন আমলা ।

প্রসঙ্গত, আজই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন এই তৃণমূল সাংসদ । বর্তমান ঘটনা প্রবাহকে সামনে রেখে রাজনীতি থেকে দূরে যাওয়ার কথাও বলেছেন তিনি । আর এমতাবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা তাঁর চিঠি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ । তাঁর প্রত্যেক পংক্তিতেই রয়েছে বিদ্রোহের ইঙ্গিত ।

চিঠিতে জহর সরকার লিখছেন, "আমি গত এক মাস ধৈর্য ধরে আরজি কর হাসপাতালের ঘৃণ্য ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া দেখেছি আর ভেবেছি, আপনি কেন সেই পুরনো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন না। এখন সরকার যে সব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা এককথায় অতি অল্প এবং অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে ।"

ETV BHARAT
মমতাকে বিস্ফোরক চিঠি জহর সরকারের (নিজস্ব চিত্র)

শুরুতে আরজি করের আন্দোলনকে বাম-বিজেপির আন্দোলন বলে দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই পথে হেঁটে তৃণমূলের অন্য নেতারাও সেই দাবি করতে শুরু করেছিলেন প্রকাশ্যে । এই প্রবণতার নিন্দা করেছেন জহর সরকার । তিনি লিখেছেন, "আমার বিশ্বাস, এই আন্দোলনে পথে নামা মানুষেরা অরাজনৈতিক এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদ করছেন । অতএব রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে এই আন্দোলনকে প্রতিরোধ করা সমীচীন হবে না । এঁরা কেউ রাজনীতি পছন্দ করেন না । শুধু বিচার ও শাস্তির দাবি তুলেছেন তাঁরা ।"

দুর্নীতি নিয়ে তাঁর প্রতিবাদে দলীয় নেতৃত্বের অবস্থান নিয়েও এদিন ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন জহর সরকার । তিনি চিঠিতে লিখছেন, "সংসদে নির্বাচিত হওয়ার এক বছর পরে, যখন 2022 সালে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর চূড়ান্ত দুর্নীতির খোলাখুলি প্রমাণ দেখে, প্রকাশ্যে মতামত দিই যে দল ও সরকারের এই ব্যাপারে অত্যন্ত সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন, তখন দলের অনেক বর্ষীয়ান নেতা আমাকে হেনস্তা করেন । তখন আমি পদত্যাগ করা থেকে বিরত ছিলাম এই আশা নিয়ে যে, আপনি 'কাট মানি' ও আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক বছর আগে যে আন্দোলন আরম্ভ করছিলেন, তা চালিয়ে যাবেন ।"

ETV BHARAT
মমতাকে লেখা চিঠিতে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জহর সরকার (নিজস্ব চিত্র)

প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়ে মুখ খোলার পরই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন জহর সরকারকে । স্বার্থপর তকমা দিয়ে সৌগত বলেছিলেন, জহর সরকার যে স্বার্থপর এবং স্বার্থকেন্দ্রিক সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন । এই ধরনের আমলারা এমনই হন । এঁরা উপকার নেন । তার পরে ক্ষতি করার আগে একবারও ভাবেন না । সৌগত রায়ের সেই কটাক্ষ জহর সরকার যে ভোলেননি, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠিতে তা স্পষ্ট ।

একইসঙ্গে এদিন চিঠিতে দুর্নীতির প্রশ্নে শুধু যে একা তৃণমূল দায়ী এমনটা মানতে রাজি নন তিনি । তবে পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতি হলে তিনি তা মেনে নেবেন না । আর সেই জায়গা থেকেই তিনি লিখেছেন, "আমাদের রাজ্য এই অসংযত দুর্নীতি এবং আধিপত্য মেনে নেবে না । আমি জানি কেন্দ্রীয় সরকার বহু কোটিপতিদের আরও ধনবান করে নিজেদের সিংহাসন ও আর্থিক পরিস্থিতি মজবুত করেছে । আমি সবসময় সংসদে ও সামাজিক গণমাধ্যমে মোদি সরকারকে এই সুবিধাবাদী-পুঁজিবাদের নীতির বিষয়ে আক্রমণ করে থাকি । আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারি না যখন দেখি দুর্নীতিগ্রস্ত কোনও অফিসারকে (বা ডাক্তারদের) মন মতো পোস্টিং দেওয়া হয় বা উচ্চতম পদে বসানো হয় ।"

এই কঠোর চিঠি প্রকাশ্যে আসার পর তৃণমূল কংগ্রেস কি বলে সেটাই এখন দেখার । যদিও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এই নিয়ে তৃণমূলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।

Last Updated : Sep 8, 2024, 1:28 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.