কলকাতা, 26 মার্চ: সম্প্রতি বারংবার তাঁর বক্তব্যে দলকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে । এই কারণে দলের তরফে দু'বার তাঁকে শো-কজও করা হয়েছে । শেষবার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সামনে হাজিরা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, দলের অনুশাসন মানবেন । কিন্তু কোথায় সেই অনুশাসন ! দিলীপ ঘোষকে সমর্থন করতে গিয়ে তিনি শুধু দলকেই অস্বস্তিতে ফেললেন না, কয়েকদিন আগে দলের অনুশাসন মানার যে কথা দিয়ে এসেছিলেন তা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলে দিলেন । তিনি ভরতপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবির ।
মঙ্গলবার বিধানসভার বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের তৃণমূল কর্মীদের প্রতি আচরণ প্রসঙ্গে ভরতপুরের বিধায়ক বলেন, "দিলীপ দা’র বক্তব্যকে সমর্থন করি । সাংসদ তহবিলের টাকায় রাস্তা উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন তিনি ৷ বাধা দেওয়ার কী ছিল ? তিনি যা করেছেন, ঠিক করেছেন । আমি থাকলেও একই কাজ করতাম । কেউ ইট মারলে আমি তো রসগোল্লা দেব না !"
ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের এই বক্তব্যকে কেউ কেউ নিচুতলার তৃণমূল কর্মীদের আচরণের বিরোধিতা হিসেবে দেখছে । এই বিষয়ে খড়গপুরের 6 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর প্রদীপ সরকার বলেন, "এই কথাগুলি একজন বিজেপি নেতা বললে আমাদের খারাপ লাগত না । বলছেন একজন তৃণমূল বিধায়ক । কী ভুল বলেছেন ওই মহিলারা ? যাঁরা ভোট দিয়ে একজন জনপ্রতিনিধিকে নির্বাচিত করেন । তারপর তাঁদের কাছ থেকে পরিষেবা না পেলে ক্ষোভ তো তৈরি হবেই । এরপরেও একজন তৃণমূল বিধায়ক এসব বলছেন শুনলে খারাপ তো লাগেই । আমরা গোটা বিষয়টি শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাব । তাঁরা যা বলবেন, এক্ষেত্রে তাই মেনে চলব ।"
এই নিয়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি । তবে দলের এক শীর্ষ নেতা জানান, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লন্ডন সফরে যাওয়ার আগে এই বিষয়টি দেখার জন্য তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছেন । তাঁরা নিশ্চয়ই বিষয়টি দেখছেন । সঠিক সময় তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন । প্রশ্ন হল দলকে অস্বস্তিতে ফেলে কি এবারও পার পেয়ে যাবেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ? নাকি তাঁর তিন নম্বর শো-কজ শুধু সময়ের অপেক্ষা ৷