মালদা, 17 এপ্রিল: মুর্শিদাবাদে সন্ত্রাসের প্রেক্ষিতে ইমাম-মোয়াজ্জেমদের সভায় নাম না-করে মালদা দক্ষিণের সাংসদকে নিশানা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর সেই আক্রমণের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ করলেন দক্ষিণ মালদার কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান চৌধুরী ৷ পাশের জেলার ঘটনাপ্রবাহের দায় তিনি বিজেপির পাশাপাশি খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাঁধেই চাপিয়েছেন ৷ গোটা ঘটনাকে রাজনৈতিক খেলা বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি ৷ একইসঙ্গে জানিয়েছেন, মোথাবাড়িতে বেলাগাম মন্তব্য করায় শুক্রবার তিনি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে মামলা করতে চলেছেন ৷
ইমাম-মোয়াজ্জেমদের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেন, যেসব এলাকায় কংগ্রেসের কিছুটা প্রাধান্য রয়েছে, সেই জায়গাগুলিতেই সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে ৷ কিন্তু ওই এলাকার কংগ্রেস সাংসদ একবারও এলাকা পরিদর্শন করেননি ৷ এলাকাকে শান্ত করতে কোনও পদক্ষেপ নেননি ৷ রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের এই মন্তব্যের জবাব দিলেন এদিন সাংসদ ইশা খান চৌধুরী ৷
তিনি বলেন, “মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস ও আমার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ করেছেন ৷ সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ানে সমস্যা শুরু হওয়ার পরই পুলিশকে জানিয়েছিলাম, আমরা সেখানে যেতে চাই ৷ মুখ্যমন্ত্রী নিজে পুলিশমন্ত্রী ৷ কিন্তু সে’কথা তিনি জানেন না কেন ? তিনি কেন জানেন না, আমি ইতিমধ্যে সামশেরগঞ্জ ঘুরে এসেছি ৷ তিনি জানেন না কেন, সেখানে আমি ডিজি'র সঙ্গেও কথা বলেছি ৷”
ইশা খানের বক্তব্য, “বৈষ্ণবনগরের পারলালপুর হাইস্কুলে মুর্শিদাবাদের সন্ত্রাসে ঘরছাড়া প্রায় 500 মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন ৷ এলাকায় শান্তির বার্তা দিয়েছি ৷ পুলিশের অনুরোধেই আমি সামশেরগঞ্জের পাড়ায় পাড়ায় যাইনি ৷ আমি সেখানকার সাংসদ ৷ পুলিশ অনুরোধ করেছিল, আমি গেলে সেখানে মানুষের ভিড় বাড়বে ৷ ভিড় হলে কিছু হতে পারে ৷ তাই আমি যেন কয়েকদিন পর সেখানে যাই ৷ চাকরিহারা শিক্ষকদের সমর্থনে, ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে মালদাতেও আমাদের কিছু কর্মসূচি ছিল ৷ পুলিশের আবেদন মেনে আমরা এখনও কোনও কর্মসূচি করিনি ৷ কারণ, আমরা আগে শান্তি চাই ৷ এতবড় ঘটনায় আমাদের উচিত পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করা ৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী আমার সঙ্গে কংগ্রেসের কর্মীদেরও অপমান করেছেন ৷”
মালদা দক্ষিণের সাংসদ আরও বলেন, “সম্প্রতি মোথাবাড়িতে বিজেপির বড় নেতারা এসেছেন ৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও এসেছিলেন ৷ কিন্তু মোথাবাড়িতে তিনি মানুষকে হাঁসুয়া ধরার বার্তা দিয়েছেন ৷ তিনি একথা বলতে পারেন না ৷ এটা বেআইনি মন্তব্য ৷ তাঁর এই মন্তব্য সন্ত্রাসকে উস্কানি দিয়েছে ৷ আমরা তাঁর নামে এফআইআর করব ৷ বিজেপি বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে ৷ কিন্তু আমরা ভাবতে পারিনি মুখ্যমন্ত্রীও বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছেন ৷ তৃণমূল আর বিজেপি রাজনৈতিক খেলা খেলছে৷ গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যই তার প্রমাণ৷ তিনি দায়িত্বশীল মুখ্যমন্ত্রী ৷ এখন কি তাঁর রাজনীতি করার সময় ?”
