ETV Bharat / state

মাস্টারমশাইদের বয়স 14-15, ছাত্রছাত্রী অশীতিপর ! সাক্ষরতার পথে পানিঝোড়া - Teens educate aged people

Teenage impart education to aged people: মাস্টারমশাই ও দিদিমণিদের বয়স 14-15 বছর ৷ আর ছাত্রছাত্রীরা কেউ 65 তো কেউ 70 বছরের ৷ আবার কেউ অশীতিপর ৷ কথায় আছে, শেখার কোনও বয়স নেই ৷ সেই কথাকেই আরও একবার সত্যি প্রমাণিত করে একটু একটু করে সাক্ষরতার পথে এগিয়ে চলেছে আলিপুরদুয়ারের পানিঝোড়া গ্রাম ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 6, 2024, 7:46 PM IST

Updated : Sep 7, 2024, 1:54 PM IST

ETV BHARAT
সাক্ষরতার পথে পানিঝোড়া (নিজস্ব চিত্র)

আলিপুরদুয়ার, 6 সেপ্টেম্বর: গ্রামে বাড়ি বাড়ি ঘুরে লেখাপড়া শেখাচ্ছে দিদিমণি ও মাস্টারমশাইরা ৷ তাদের কাছেই হাতে খড়ি হচ্ছে বয়স্কদের ৷ আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের পানিঝোড়া গ্রামের প্রতিটি ঘরে যারা শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে, তাদের বয়স সাকূল্যে 14 থেকে 21-22 বছর । আর ওই গ্রামে তাদের ছাত্রছাত্রীদের বয়স কারও 82 বছর তো কারও 65 । খুদে স্যার-ম্যাডামদের হাত ধরে লিখতে পড়তে শিখে আহ্লাদে আটখানা প্রবীণ গ্রামবাসীরা ৷ আগামী প্রজন্মের কারিগরদের এই উদ্যোগে উচ্ছ্বসিত জেলাশাসকও ।

মাস্টারমশাইদের বয়স 14-15, ছাত্রছাত্রী অশীতিপর ! সাক্ষরতার পথে পানিঝোড়া (ইটিভি ভারত)

আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের পানিঝোড়া গ্রাম ৷ মেরেকেটে 350 জন বাসিন্দা ৷ স্কুল ও কলেজ অনেকটা দূরে থাকায় এখানকার অনেক ঘরেই পৌঁছয়নি শিক্ষার আলো ৷ অনেকে আবার সুযোগ ও সামর্থ্যের অভাবে ছেলেবেলায় পড়াশোনা করতে পারেননি ৷ তাঁদেরই সাক্ষর করার গুরুদায়িত্ব নিজদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন পানিঝোড়ার একদল ছাত্রছাত্রী ৷ তারা হাতে স্লেট নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে ৷ বয়স্ক নিরক্ষর গ্রামবাসীদের সই করানো দিয়েই শুরু হচ্ছে প্রথম পাঠ ৷

এলাকার বাসিন্দা কুলবাহাদুর ছেত্রীর অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরতে গিয়ে পড়াশোনা হয়ে ওঠেনি । তবে শেখার কোনও বয়স হয় না । তাই 82 বছর বয়সে গ্রামের খুদে ‘স্যার-ম্যাডামদের’ হাত ধরে নিজের নাম লেখা শিখেছেন । স্লেটে নিজের নামটুকু লেখার পর মুখে হাসি ফুটেছে শিক্ষক ও ছাত্রের । বৃদ্ধ বললেন, "যখন দরকার ছিল, সেই সময়ে পড়াশোনাটা করা হয়ে ওঠেনি । এখন আমাদের নাতি, নাতনির বয়সিদের থেকে শিখছি । এটা অন্যরকম ভালো লাগা ৷"

শুধু কুলবাহাদুর নন, রাজাভাতখাওয়া লাগোয়া পানিঝোড়া বনবস্তির নিমলি মারাক, ধানধরি ওরাও-সহ আরও অনেকে বুড়ো বয়সে এসেই সাক্ষর হয়েছেন ৷ ছোটবেলায় পড়াশোনার ইচ্ছে থাকলেও কেউ আর্থিক বাধায়, কেউ কাজের চাপে পড়াশোনা করতে পারেননি । তাঁদের নিজের নাম, ঠিকানা লেখা, পড়তে শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছে গ্রামেরই পড়ুয়ারা ।

ETV BAHRAT
সাক্ষরতার পথে এগিয়ে চলেছে পানিঝোড়া (নিজস্ব চিত্র)

শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করা কলেজ পড়ুয়া সুধা টোপ্পো জানায়, "বাচ্চাদের তো অনেকেই পড়ায় । বড়দের পড়াতে কখনও দেখিনি । তাঁদের পড়াতে পেরে আমরা সবাই খুব খুশি । লেখাপড়ার তো কোনও বয়স না ৷"

আরেকজন কলেজ পড়ুয়া সমীর টপ্পোর কথায়, "আমরা যদি ওঁদের পড়াশোনা শেখাতে পারি, তাহলে তা আমাদের কাছে বড় পাওনা । আমরা নিজেদের মতো করে চেষ্টা চালাচ্ছি । সবে নাম লেখানো শুরু হয়েছে । এরপর একটু একটু করে আরও অনেক কিছু শেখাব ৷"

শুধু লেখাপড়া শেখানোই নয়, রোগব্যাধি থেকে বাঁচতে গ্রাম পরিষ্কার রাখা, বক্সা অরণ্য, নদীকে প্লাস্টিক দূষণ মুক্ত রেখে সুরক্ষিত রাখার বার্তাও প্রচার করছে এই পড়ুয়ারা ৷ গড়ে তুলছে সচেতনতা ৷ তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক আর বিমলা ৷ তাঁর কথায়, "ওদেরকে দেখে আমরাও মোটিভেশন পাচ্ছি । এত বয়স হয়ে যাওয়ার পরও গ্রামের মানুষ ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে লেখাপড়া শিখছে । এটা দেখে খুবই ভালো লাগছে । পড়ুয়ারাও এতে খুব আনন্দিত ।"

আলিপুরদুয়ার, 6 সেপ্টেম্বর: গ্রামে বাড়ি বাড়ি ঘুরে লেখাপড়া শেখাচ্ছে দিদিমণি ও মাস্টারমশাইরা ৷ তাদের কাছেই হাতে খড়ি হচ্ছে বয়স্কদের ৷ আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের পানিঝোড়া গ্রামের প্রতিটি ঘরে যারা শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে, তাদের বয়স সাকূল্যে 14 থেকে 21-22 বছর । আর ওই গ্রামে তাদের ছাত্রছাত্রীদের বয়স কারও 82 বছর তো কারও 65 । খুদে স্যার-ম্যাডামদের হাত ধরে লিখতে পড়তে শিখে আহ্লাদে আটখানা প্রবীণ গ্রামবাসীরা ৷ আগামী প্রজন্মের কারিগরদের এই উদ্যোগে উচ্ছ্বসিত জেলাশাসকও ।

মাস্টারমশাইদের বয়স 14-15, ছাত্রছাত্রী অশীতিপর ! সাক্ষরতার পথে পানিঝোড়া (ইটিভি ভারত)

আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র-প্রকল্পের পানিঝোড়া গ্রাম ৷ মেরেকেটে 350 জন বাসিন্দা ৷ স্কুল ও কলেজ অনেকটা দূরে থাকায় এখানকার অনেক ঘরেই পৌঁছয়নি শিক্ষার আলো ৷ অনেকে আবার সুযোগ ও সামর্থ্যের অভাবে ছেলেবেলায় পড়াশোনা করতে পারেননি ৷ তাঁদেরই সাক্ষর করার গুরুদায়িত্ব নিজদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন পানিঝোড়ার একদল ছাত্রছাত্রী ৷ তারা হাতে স্লেট নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে ৷ বয়স্ক নিরক্ষর গ্রামবাসীদের সই করানো দিয়েই শুরু হচ্ছে প্রথম পাঠ ৷

এলাকার বাসিন্দা কুলবাহাদুর ছেত্রীর অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরতে গিয়ে পড়াশোনা হয়ে ওঠেনি । তবে শেখার কোনও বয়স হয় না । তাই 82 বছর বয়সে গ্রামের খুদে ‘স্যার-ম্যাডামদের’ হাত ধরে নিজের নাম লেখা শিখেছেন । স্লেটে নিজের নামটুকু লেখার পর মুখে হাসি ফুটেছে শিক্ষক ও ছাত্রের । বৃদ্ধ বললেন, "যখন দরকার ছিল, সেই সময়ে পড়াশোনাটা করা হয়ে ওঠেনি । এখন আমাদের নাতি, নাতনির বয়সিদের থেকে শিখছি । এটা অন্যরকম ভালো লাগা ৷"

শুধু কুলবাহাদুর নন, রাজাভাতখাওয়া লাগোয়া পানিঝোড়া বনবস্তির নিমলি মারাক, ধানধরি ওরাও-সহ আরও অনেকে বুড়ো বয়সে এসেই সাক্ষর হয়েছেন ৷ ছোটবেলায় পড়াশোনার ইচ্ছে থাকলেও কেউ আর্থিক বাধায়, কেউ কাজের চাপে পড়াশোনা করতে পারেননি । তাঁদের নিজের নাম, ঠিকানা লেখা, পড়তে শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছে গ্রামেরই পড়ুয়ারা ।

ETV BAHRAT
সাক্ষরতার পথে এগিয়ে চলেছে পানিঝোড়া (নিজস্ব চিত্র)

শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করা কলেজ পড়ুয়া সুধা টোপ্পো জানায়, "বাচ্চাদের তো অনেকেই পড়ায় । বড়দের পড়াতে কখনও দেখিনি । তাঁদের পড়াতে পেরে আমরা সবাই খুব খুশি । লেখাপড়ার তো কোনও বয়স না ৷"

আরেকজন কলেজ পড়ুয়া সমীর টপ্পোর কথায়, "আমরা যদি ওঁদের পড়াশোনা শেখাতে পারি, তাহলে তা আমাদের কাছে বড় পাওনা । আমরা নিজেদের মতো করে চেষ্টা চালাচ্ছি । সবে নাম লেখানো শুরু হয়েছে । এরপর একটু একটু করে আরও অনেক কিছু শেখাব ৷"

শুধু লেখাপড়া শেখানোই নয়, রোগব্যাধি থেকে বাঁচতে গ্রাম পরিষ্কার রাখা, বক্সা অরণ্য, নদীকে প্লাস্টিক দূষণ মুক্ত রেখে সুরক্ষিত রাখার বার্তাও প্রচার করছে এই পড়ুয়ারা ৷ গড়ে তুলছে সচেতনতা ৷ তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক আর বিমলা ৷ তাঁর কথায়, "ওদেরকে দেখে আমরাও মোটিভেশন পাচ্ছি । এত বয়স হয়ে যাওয়ার পরও গ্রামের মানুষ ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে লেখাপড়া শিখছে । এটা দেখে খুবই ভালো লাগছে । পড়ুয়ারাও এতে খুব আনন্দিত ।"

Last Updated : Sep 7, 2024, 1:54 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.