কলকাতা, 7 এপ্রিল: সুপ্রিম কোর্টে রায় ঘোষণার পরে সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপকে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই চাকরি গিয়েছে প্রায় 26 হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর ৷ বিজেপি ক্ষমতায় এলে এক মাসে যোগ্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন বিরোধী দলনেতা ৷
নেতাজি ইন্ডোরে এ দিন অনেক যোগ্য প্রার্থীই প্রবেশাধিকার পাননি বলেও অভিযোগ করেন শুভেন্দু । তিনি দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলার সুযোগও পাননি অনেক চাকরিহারা । এরই প্রতিবাদে বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে বিরোধি দলনেতা বলেন, "যাঁরা প্রতারিত, যাঁরা বঞ্চিত, তাঁদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেননি মুখ্যমন্ত্রী । ন্যাচারাল জাস্টিসকে অস্বীকার করেছেন তিনি ।"

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে এসএসসি-র স্বায়ত্তশাসন ভাঙার অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু । তিনি দাবি করেন, "অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যখন বিচারপতি ছিলেন, তখন প্রায় ছ’হাজারকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল । সেই নির্দেশ যদি মুখ্যমন্ত্রী মানতেন, তাহলে আজ 26 হাজার কর্মীকে চাকরি হারাতে হত না । এই দুর্ভোগের জন্য একমাত্র দায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।"
তিনি আরও বলেন, "16 বার শুনানি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে । কিন্তু একবারও যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা পেশ করেনি রাজ্য সরকার । এসএসসি দফতরে গিয়ে আগেই সাবধান করেছিলাম, তারাও তখন নিজেদের অসহায়তার কথা বলেছিল ।" ওএমআর শিট পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে শুভেন্দু দাবি করেন, "সিবিআই গাজিয়াবাদ থেকে হার্ডডিস্ক উদ্ধার না-করলে যোগ্য প্রার্থীরা আজও প্রমাণ দিতে পারতেন না । আর সে কারণে এই বিপর্যয় শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামাজিকও ।"
মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে শুভেন্দু আরও বলেন, "আপনি বিচারপতিদের আক্রমণ করেছেন, বলেছেন যোগ্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেবেন । আপনাকে সুপ্রিম কোর্ট তিন বছর সময় দিয়েছে, আপনি কিছুই করেননি । আপনিও অপরাধী ।" শুভেন্দু এদিন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, "2026 সালে বিজেপি এলে এক মাসের মধ্যে সিবিআই দিয়ে ওএমআর বের করে যোগ্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেব । যদি 1984-র শিখ দাঙ্গার বিচার হয়, তবে এটারও হবে ।"
সুপ্রিম কোর্টে এসএসসি-র রিভিউ পিটিশন জমা করা প্রসঙ্গে শুভেন্দুর বার্তা, "যেদিন শুনানি শুরু হবে, সেদিনই যোগ্যদের তালিকা পেশ করুন । তা না-হলে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয় । সুপ্রিম কোর্ট নিজে থেকে তালিকা তৈরি করবে না । রাজ্য সরকারের অসহযোগিতাই এই সংকটের মূল ।"
21 এপ্রিল নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা । শুভেন্দুর ঘোষণা, "15 এপ্রিলের মধ্যে যোগ্য তালিকা প্রকাশ না-হলে লক্ষ মানুষ পতাকা ছাড়া নবান্নের দিকে পা বাড়াবে । আমাদের ডাকলে, আমরাও যাব ।"