ETV Bharat / state

সুপ্রিম নির্দেশে গিয়েছে চাকরি, চন্দননগরে দিশেহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী - SUPREME COURT ORDER ON SSC SCAM

আগামী 31 ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরিহারা শিক্ষকরা স্কুলে যেতে পারলেও, যেতে পারবেন না শিক্ষাকর্মীরা ৷ এদিকে, রাজ্য সরকারের তরফে কোনও নির্দেশিকা না-আসায় দ্বন্দ্বে স্কুলগুলি ৷

SUPREME COURT ORDER ON SSC SCAM
দিশেহারা স্কুলের প্রধান শিক্ষক (নিজস্ব চিত্র, ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : April 19, 2025 at 8:00 PM IST

3 Min Read

হুগলি, 19 এপ্রিল: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি প্যানেল বাতিল হয়ে গিয়েছে ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা ৷ কিন্তু জট কাটেনি ৷ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের চাকরি যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন স্কুলগুলিও ৷ শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিলেও রাজ্য সরকার ও শিক্ষা দফতরের তরফে কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি । অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টের নয়া নির্দেশে চাকরিহারা শিক্ষকদের আপাতত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি মিলেছে । তাঁরা ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন । কিন্তু, স্কুলে যেতে পারবেন না শিক্ষাকর্মীরা ৷ ফলে, অচলাবস্থা কাটছে না স্কুলগুলিতে ।

একদিকে যেমন শিক্ষক নেই, তেমনি শিক্ষাকর্মীদের নিয়ে যাঁতাকলে পড়েছে স্কুলগুলি । আদালতের নির্দেশ মানবেন, না-কি শিক্ষা দফতরের নির্দেশ মানবেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্বে পড়েছে স্কুলগুলি । আদালতে চাকুরিহারাদের চাকুরির মেয়াদ 31 ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হলেও, সম্পূর্ণ স্বস্তি পাননি তাঁরা ।এদিকে, স্কুলে শিক্ষাকর্মীদের আসতে সম্পূর্ণ নিষেধ করেছে আদালত । কিন্তু, রাজ্য সরকারের তরফে কোনও নির্দেশিকা না-আসায় সমস্যায় পড়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা ৷

চন্দননগরে দিশেহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী (ইটিভি ভারত)

পাণ্ডুয়ার বৈচিগ্রামের চাকুরিহারা শিক্ষিকা সুমনা দাস পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের একটি স্কুলের কর্মরত ছিলেন । তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের নতুন রায় শুনে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন । গত দুই সপ্তাহ যেভাবে কেটেছে, এখন অন্তত একটু হলেও ভালো লাগছে । তবে, আর পরীক্ষা দিতে চান না তিনি । তাঁরা যোগ্য ৷ একবার পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন ৷ আবার কেন পরীক্ষা দিতে হবে ?

চন্দননগর কানাইলাল বিদ্যামন্দির (ইংরেজি সেকশন) স্কুলের শিক্ষাকর্মী সুমন কুমার মণ্ডল 2016 সালে চাকরি পান ৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে তাঁর ৷ অবশ্য, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উপরে তাঁর কিছু মন্তব্য করার নেই বলে জানান সুমন ৷ তিনি বলেন, "এই রায়ের পর শিক্ষা দফতর থেকে আমাদের কাছে কোনও নির্দেশিকা আসেনি । সেই কারণে, আমরা দ্বিধার মধ্যে রয়েছি । মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পাশে আছেন । সেই কারণে স্কুলে আসতে বাধা নেই । বর্তমানে সরকারের উপর নির্ভর করা ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় নেই । বর্তমানে আমরা দিশেহারা অবস্থায় রয়েছি।"

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শুভ্রদীপ হালদার বলেন, "কোনও সরকারি নির্দেশ না-থাকলে কাউকে আমরা স্কুলে আসতে নিষেধ করতে পারি না । স্কুলে একটি গ্রূপ সি ও একটি গ্রূপ ডি পদ রয়েছে । দুটি পোস্টে দু'জন অবসর নিয়েছেন । স্কুলে 1700 জন ছাত্র । গ্রূপ সি পদের কর্মী সুমন মণ্ডলের উপর সম্পূর্ণ কাজের চাপ । এই আবহে তিনি স্কুলে না-এলে আমি পথে বসে যাব ।"

তিনি আরও বলেন, "শিক্ষকরা না-এলে যেমন পড়াশোনার ক্ষতি হবে, স্কুলের ক্লার্ক না-এলে সমস্ত সরকারি কাজের ক্ষতি হবে । এখন ক্লাস 11-এর পরীক্ষার রেজাল্ট আপলোডের কাজ চলছে । এরপর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট রয়েছে । শিক্ষা দফতর বা জেলা DI অফিস থেকে কোনও নির্দেশিকা না-আসা পর্যন্ত কাউকে স্কুলে আসতে নিষেধ করতে পারছি না ।"

হুগলি জেলার শিক্ষা দফতরের ডিআই সত্যজিৎ মণ্ডল বলেন, "আমাদের কাছে চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য কোনও নির্দেশিকা আসেনি । তাই আমরা কোনও নির্দেশ দিতে পারিনি । আদালতের নির্দেশে শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীরা কী কী পদক্ষেপ নেবেন, তা বলতে পারব না ।"

পড়ুন: 'হয় চাকরি, না-হয় স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনে সাড়া দিন', রাজ্যপালকে বার্তা চাকরিহারা শিক্ষকদের

হুগলি, 19 এপ্রিল: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি প্যানেল বাতিল হয়ে গিয়েছে ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা ৷ কিন্তু জট কাটেনি ৷ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের চাকরি যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন স্কুলগুলিও ৷ শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিলেও রাজ্য সরকার ও শিক্ষা দফতরের তরফে কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি । অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টের নয়া নির্দেশে চাকরিহারা শিক্ষকদের আপাতত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি মিলেছে । তাঁরা ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন । কিন্তু, স্কুলে যেতে পারবেন না শিক্ষাকর্মীরা ৷ ফলে, অচলাবস্থা কাটছে না স্কুলগুলিতে ।

একদিকে যেমন শিক্ষক নেই, তেমনি শিক্ষাকর্মীদের নিয়ে যাঁতাকলে পড়েছে স্কুলগুলি । আদালতের নির্দেশ মানবেন, না-কি শিক্ষা দফতরের নির্দেশ মানবেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্বে পড়েছে স্কুলগুলি । আদালতে চাকুরিহারাদের চাকুরির মেয়াদ 31 ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হলেও, সম্পূর্ণ স্বস্তি পাননি তাঁরা ।এদিকে, স্কুলে শিক্ষাকর্মীদের আসতে সম্পূর্ণ নিষেধ করেছে আদালত । কিন্তু, রাজ্য সরকারের তরফে কোনও নির্দেশিকা না-আসায় সমস্যায় পড়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা ৷

চন্দননগরে দিশেহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী (ইটিভি ভারত)

পাণ্ডুয়ার বৈচিগ্রামের চাকুরিহারা শিক্ষিকা সুমনা দাস পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের একটি স্কুলের কর্মরত ছিলেন । তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের নতুন রায় শুনে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন । গত দুই সপ্তাহ যেভাবে কেটেছে, এখন অন্তত একটু হলেও ভালো লাগছে । তবে, আর পরীক্ষা দিতে চান না তিনি । তাঁরা যোগ্য ৷ একবার পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন ৷ আবার কেন পরীক্ষা দিতে হবে ?

চন্দননগর কানাইলাল বিদ্যামন্দির (ইংরেজি সেকশন) স্কুলের শিক্ষাকর্মী সুমন কুমার মণ্ডল 2016 সালে চাকরি পান ৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে তাঁর ৷ অবশ্য, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উপরে তাঁর কিছু মন্তব্য করার নেই বলে জানান সুমন ৷ তিনি বলেন, "এই রায়ের পর শিক্ষা দফতর থেকে আমাদের কাছে কোনও নির্দেশিকা আসেনি । সেই কারণে, আমরা দ্বিধার মধ্যে রয়েছি । মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পাশে আছেন । সেই কারণে স্কুলে আসতে বাধা নেই । বর্তমানে সরকারের উপর নির্ভর করা ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় নেই । বর্তমানে আমরা দিশেহারা অবস্থায় রয়েছি।"

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শুভ্রদীপ হালদার বলেন, "কোনও সরকারি নির্দেশ না-থাকলে কাউকে আমরা স্কুলে আসতে নিষেধ করতে পারি না । স্কুলে একটি গ্রূপ সি ও একটি গ্রূপ ডি পদ রয়েছে । দুটি পোস্টে দু'জন অবসর নিয়েছেন । স্কুলে 1700 জন ছাত্র । গ্রূপ সি পদের কর্মী সুমন মণ্ডলের উপর সম্পূর্ণ কাজের চাপ । এই আবহে তিনি স্কুলে না-এলে আমি পথে বসে যাব ।"

তিনি আরও বলেন, "শিক্ষকরা না-এলে যেমন পড়াশোনার ক্ষতি হবে, স্কুলের ক্লার্ক না-এলে সমস্ত সরকারি কাজের ক্ষতি হবে । এখন ক্লাস 11-এর পরীক্ষার রেজাল্ট আপলোডের কাজ চলছে । এরপর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট রয়েছে । শিক্ষা দফতর বা জেলা DI অফিস থেকে কোনও নির্দেশিকা না-আসা পর্যন্ত কাউকে স্কুলে আসতে নিষেধ করতে পারছি না ।"

হুগলি জেলার শিক্ষা দফতরের ডিআই সত্যজিৎ মণ্ডল বলেন, "আমাদের কাছে চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য কোনও নির্দেশিকা আসেনি । তাই আমরা কোনও নির্দেশ দিতে পারিনি । আদালতের নির্দেশে শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীরা কী কী পদক্ষেপ নেবেন, তা বলতে পারব না ।"

পড়ুন: 'হয় চাকরি, না-হয় স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনে সাড়া দিন', রাজ্যপালকে বার্তা চাকরিহারা শিক্ষকদের
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.