কলকাতা, 29 এপ্রিল: রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্কুলে শুরু হচ্ছে গরমের ছুটি আগামিকাল অর্থাৎ বুধবার থেকে । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নের সভাঘর থেকে গরমের ছুটি ঘোষণা করেছিলেন । পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষা দফতর । কিন্তু গরমের ছুটি শুরুর দিন ঘোষণা করা হলেও কবে শেষ তা স্পষ্ট করা হয়নি । ফলে অনির্দিষ্টকালের জন্যই দেওয়া হয়েছে গরমের ছুটি । যদিও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, "আবহাওয়ার দিকে নজর রেখেই গরমের ছুটি নির্ভর করবে ।"
কিন্তু কবে স্কুল এবার পুরোদমে চালু হবে জানে না কেউই । তবে এই বছর থেকে উচ্চমধ্যমিক পরীক্ষার বদলে হবে সেমিস্টার । তাই সংসদ বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেছে, সেমিস্টার 3 অর্থাৎ দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাস করানোর জন্য । তবে বাকিদের কী হবে ? কিছু স্কুল বাকিদের জন্যও চালু করছে অনলাইন ক্লাস । ফলে আবারও কিছু স্কুলে চালু হচ্ছে অনলাইন ক্লাস ।
দমদম পার্কের কৃষ্ণপুর আদর্শ বিদ্যামন্দিরে হবে অনলাইন ক্লাস । স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুশান্তকুমার খান বলেন, "সামার প্রজেক্ট দেওয়া আছে । তবে আমরা সবার জন্যই অনলাইন ক্লাস চালু করব । যাতে সিলেবাসে সমস্যা না হয় । অন্যদিকে স্কুল খোলার পর থেকে আমরা সাধারণ স্কুলের সময় থেকে স্কুল শুরু ও শেষে আধঘন্টা করে সময় বাড়িয়ে দেব । অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া হবে ওই সময় ।" টাকি বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা বসাক বলেন, "সামার প্রজেক্ট তো হবে । এর সঙ্গে কিছু সামার ক্যাম্প করব । তার পাশাপাশি আমরা আগামী শনিবার থেকে সব ক্লাসের জন্য অনলাইন ক্লাস চালু করব ।"

আবার কিছু স্কুল এখন অনলাইন ক্লাস চালু করছে না । বেথুন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শবরী ভট্টাচার্য বলেন, "সামার প্রজেক্ট দেওয়া হয়েছে । যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে, সেখানে প্রতিনিয়ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে পড়ুয়াদের যোগাযোগ থাকবে । যদি সম্ভব হয় বা প্রয়োজন পড়ে, তখন আমরা অনলাইন ক্লাসের কথা ভাবব ।"
চেতলা বয়েজ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শুভ্র চক্রবর্তী বলেন, "দ্বাদশ শ্রেণির জন্য আমরা আর বেশি সময় পাব না সময় পাব । তাই ওদের অনলাইন ক্লাস চালু করব । তবে বাকিদের ক্ষেত্রে নিজ নিজ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে পড়াশোনা করা হবে । এরপর যদি দরকার হয়, তাহলে ওদের জন্যেও আমরা অনলাইন ক্লাসের দিকে হাঁটব । এছাড়া সামার প্রজেক্ট দেওয়া থাকবে, যা স্কুল খুললে পড়ুয়ারা জমা দেবে ।"
কিন্তু কিছু স্কুল শুধুমাত্র সামার প্রজেক্ট দিয়ে রাখছে আপাতত । যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, "প্রতিবছরের মতো এবারেও গরমের ছুটিতে বেশ কিছু প্রজেক্ট আমরা পড়ুয়াদের দিয়েছি । তার পাশাপাশি আমি নিজে থেকে দু’টো প্রজেক্ট প্রত্যেক বছর পড়ুয়াদের দিয়ে থাকি । একটা হতো হাতের লেখা অন্যটি হল বৃক্ষরোপণ ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এই দুটো প্রজেক্ট পড়ুয়ারা গরমের ছুটির পর স্কুল খুললে স্কুলে নিয়ে আসে । সেই গাছগুলিকে স্কুলে রোপণ করা হয় । এছাড়াও আরও বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে গরমের ছুটির মধ্যে । তবে অনলাইন ক্লাসের বিষয় এখনই কিছু ভাবিনি ।" তিনি আরও জানান, যদিও দ্বাদশ শ্রেণির সেমিস্টার 3 এর জন্য পরীক্ষার আগেই সিলেবাস শেষ করার জন্য শিক্ষকদের বলা আছে ৷ তাঁরা তাঁদের সুবিধামতো পড়াবেন ৷
নারায়ণ দাস বাঙ্গুর মাল্টি পারপাস স্কুলেও এই পদ্ধতিতেই গরম ছুটি দেওয়া হচ্ছে । স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলে, "আমরা অনলাইন ক্লাসের বিষয়ে এখনই কিছু ভাবিনি । আমার প্রজেক্ট দিয়ে রাখা হয়েছে ।"