কলকাতা, 9 এপ্রিল: রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের আইন বিষয়ক কাজে আরও সচেতনতা ও কৌশলী পদক্ষেপ করার লক্ষ্যে গঠিত হল বিশেষ একটি মন্ত্রিগোষ্ঠীর কমিটি । মঙ্গলবার নবান্নে 70তম রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে । সূত্রের খবর, এই আইন বিষয়ক নজরদারি কমিটি রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের তত্ত্বাবধানে কাজ করবে এবং রাজ্য সরকারের পক্ষে আদালতে আইনি লড়াই আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে ।
এই কমিটিতে থাকছেন অভিজ্ঞ ও প্রভাবশালী ছয়জন মন্ত্রী - মলয় ঘটক, ব্রাত্য বসু, শশী পাঁজা, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য । উল্লেখযোগ্যভাবে, এই মন্ত্রীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পেশাদার আইনজীবী, ফলে আইনি বিষয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা যথেষ্ট কার্যকরী হবে বলে মনে করা হচ্ছে ।

সম্প্রতি নানা ইস্যুতে আদালতে রাজ্য সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে । কখনও সরকারি নীতি প্রশ্নের মুখে পড়েছে, কখনও আবার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতের কড়া পর্যবেক্ষণের মুখে পড়তে হয়েছে । এই পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষে আরও সুপরিকল্পিত ও পর্যালোচনাপূর্ণ আইনি পদক্ষেপ করা প্রয়োজন বলেই মনে করছে প্রশাসন ।
এই কমিটির কাজ হবে বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে মামলা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা, প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ মত নেওয়া এবং আইনি পদক্ষেপের রূপরেখা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দফতরকে পরামর্শ দেওয়া । আদালতের নির্দেশিকা বা পর্যবেক্ষণ কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, সেই নিয়েও এই কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে ।
এর পাশাপাশি, এদিন রাজ্যের মন্ত্রিসভার বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি সোশাল মিডিয়ায় মন্ত্রীদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন । বিকাশ ভট্টাচার্যের একটি সাম্প্রতিক পোস্ট ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কে তিনি ক্ষুব্ধ হন এবং বলেন, শুধু সোশাল মিডিয়ায় প্রোফাইল খুলে বসে থাকা চলবে না, রাজনৈতিক ইস্যুতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে । বিরোধী বাম ও বিজেপি নেতারা যেভাবে সোশাল মিডিয়ায় ধারাবাহিকভাবে বক্তব্য রাখছেন, তার তুলনায় শাসকদলের বহু নেতা কার্যত অনুপস্থিত বলে মত তাঁর ।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সোশাল মিডিয়ায় কেউ সমালোচনা করলে তার যথাযথ উত্তরও সোশাল মিডিয়াতেই দিতে হবে । মন্ত্রিসভার সদস্যদের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ডিজিটাল মাধ্যমে আরও বেশি সক্রিয় হয়ে মানুষের কাছে সরকারের অবস্থান তুলে ধরতে । ফলে একদিকে যেমন আইনি লড়াইয়ে সুনির্দিষ্ট কৌশল তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে জনমতকে প্রভাবিত করার দিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য সরকার ।