নয়াদিল্লি/কলকাতা, 16 এপ্রিল: রাজধানীর বুকে ধরনায় বসলেন চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষকেরা । সোমবার ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেল থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে একটি বাস রওনা দিয়েছিল । প্রায় 65 জন চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীকে নিয়ে বুধবার ভোর রাতে দিল্লি পৌঁছেছে সেই বাস । তারপরেই এদিন দিল্লিতে যন্তরমন্তরের সামনে শুরু হয় 'যোগ্য' চাকরিহারা শিক্ষকদের ধর্নাবস্থান ।
দুপুর 2টো থেকে বিকেল 5টা পর্যন্ত এই অবস্থান চলে । একদিনের কর্মসূচি সেরে আবারও কলকাতায় ফিরে আসবেন শিক্ষকরা । মূলত, দিল্লি যাওয়ার মাধ্যমে চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষকরা তাদের এই দুর্দশার ছবি তুলে ধরতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও অন্যান্য সাংসদদের কাছেও ।
সুপ্রিম কোর্টের এক কলমের খোঁচায় চাকরি বাতিল হয়েছে 25 হাজার 753 জনের । সেখানে রয়েছে বহু অযোগ্য শিক্ষক । যারা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন । কিন্তু সেই তালিকার পাশাপাশি এই প্রায় 26 হাজার জনের মধ্যে রয়েছেন বহু যোগ্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীও । যাদের নিয়ে তদন্ত করেছিল সিবিআই । কিন্তু সেই রিপোর্টকে মান্যতা দেয়নি দেশের শীর্ষ আদালত । ফলে বাতিল হয়েছে 2016 সালের গোটা প্যানেল । তাতেই রাজ্যের স্কুলগুলিতে উঠে এসেছে দুর্দশার ছবি ।
কেন অন্যায় না-করা সত্ত্বেও শাস্তি পেতে হচ্ছে ? সেই প্রশ্ন তুলেই পথে নেমেছেন 'যোগ্য' চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা । সেই প্রশ্ন নিয়েই এবার দিল্লিতে একদিনের কর্মসূচি রাখলেন তাঁরা ।

দিল্লির যন্তরমন্তরে ধর্নায় বসে চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল বলেন, "আমি গোটা দেশের মানুষের কাছে জানাতে চাইছি আমাদের সঙ্গে কী অন্যায় হয়েছে ? যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা যোগ্য, যাদের বিরুদ্ধে একটাও অভিযোগ নেই, তাদেরকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে ? কলকাতা হাইকোর্ট এবং পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্ট গোটা প্যানেলটাকে বাতিল করে দিয়েছে । যে সমস্ত কর্তৃপক্ষ এবং নেতা-মন্ত্রীরা এই টাকা খেয়ে চাকরি দিয়েছিল, তাদের যেন উপযুক্ত শাস্তি হয় । তাদের মৃত্যু হোক । এর পাশাপাশি যারা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছে তাদেরও শাস্তি দেওয়া হোক । কিন্তু তাদের শাস্তির সঙ্গে কেন আমাদেরকে শাস্তি দেওয়া হবে ।"
জানা দিয়েছে, দিল্লি যাবার পথে যে সমস্ত জায়গায় শিক্ষকরা বিশ্রাম নিয়েছেন সেখানেও লিফলেট বিলি করেছেন তাঁরা । এলাহাবাদ বাইপাস এলাকার পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশের একটি স্কুলেও লিফলেট হাতে পৌঁছে গিয়েছিলেন এই 'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা ।
এই বিষয়ে চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল বলেন, "আমরা দিল্লিতে এসেছি যাতে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং যে সমস্ত সংসদরা রয়েছে তারাও বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন । কারণ তাদের জানা উচিত আমরা তাদেরই দেশের মানুষ । সিবিআই, বাগ কমিটি তদন্ত করে রিপোর্ট জমা করেছে । সেখানেও আমাদের বিরুদ্ধে একটাও অভিযোগ উঠে আসেনি । আমরা চাই অবিলম্বে রাজ্য সরকার, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, স্কুল সার্ভিস কমিশন কোর্টে উপযুক্ত তথ্য দিয়ে আমাদের চাকরি যে কোনও উপায় ফিরিয়ে দিক ।"