শিলিগুড়ি, 27 জুন: দিনভর উচ্ছেদ অভিযান চলল শিলিগুড়িতে ৷ বুধবার শহরজুড়ে বুলডোজার দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালাল শিলিগুড়ি পুরনিগম । কোনও নোটিশ না-দিয়ে আচমকা উচ্ছেদ করায় প্রশাসনের প্রতি ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা ৷ তাঁদের দাবি, আচমকা এই উচ্ছেদ অভিযানের জন্য অনেক টাকার ক্ষতি হয়ে গেল তাঁদের ৷ যদিও পুরনিগমের দাবি, গতকালই ফুটপাথ ছেড়ে দিতে বলা হয়েছিল ব্যবসায়ীদের ৷
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পুলিশের সহযোগিতায় বুলডোজার নিয়ে অভিযানে নামে শিলিগুড়ি পুরনিগম । ফুটপাথ দখল করে থাকা দোকানপাট এদিন বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় । 25 নম্বর ওয়ার্ড শেঠশ্রীলাল মার্কেট, কাছারি রোড, গুরুং বস্তি এলাকায় অভিযান চালায় পুরনিগম । উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন পুলিশ ও পুরকর্মীরা ।
সোমবার পুরসভাগুলির সঙ্গে বৈঠকে সরকারি জমি বেআইনিভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে বলে তোপ দেগে পুলিশ ও পুরপ্রতিনিধিদের কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তারপরই শুরু হয় রাজ্যজুড়ে উচ্ছেদ অভিযান ৷ শিলিগুড়ি শহরজুড়েও অভিযানে নামে পুরনিগম । বুধবার প্রথমে ব্যবসায়ীদের ফুটপাথ ছেড়ে ব্যবসা করতে বলা হয় । সতর্ক করা হয় ব্যবসায়ীদের । এরপর এদিন ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে অভিযান চালানো হয় । পাশাপাশি শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে বেশ কয়েকটি অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হয় ।
কোনও নোটিশ ছাড়াই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের ৷ দীপঙ্কর চৌধুরী নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, "কোনও নোটিশ ছাড়াই দোকান উচ্ছেদ করা হল । আমার নার্সারির দোকান । সব শেষ হয়ে গেল । কী করব জানি না । পঞ্চাশ বছর ধরে এই জায়গায় দোকান করছি । 60 হাজার টাকার গাছ নষ্ট হয়েছে ।" আরেক ব্যবসায়ী আদিত্য সরকার বলেন, "চল্লিশ বছরের দোকান । আগে বাবা করত । আচমকা এসে এদিন বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হল । একটা নোটিশও দেয়নি । এখন জানি না কী করব ।"
এদিকে, বৃহস্পতিবার ফের এই নিয়ে নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি আপাতত একমাসের জন্য উচ্ছেদ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ৷ হকারদের জন্য আলাদা জোন তৈরি করতে সমীক্ষারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ৷ হকারদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশের পর শিলিগুড়ি পুরনিগমও বিকল্প ভাবনা শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে ।