কালনা (পূর্ব বর্ধমান), 19 এপ্রিল: সাঁতারু সায়নী দাসের মুকুটে নয়া পালক ৷ জিব্রাল্টার প্রণালী জয় করলেন বাংলার মেয়ে ৷ প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে ষষ্ঠ সিন্ধু পার করে রেকর্ড গড়লেন তিনি ৷ জিব্রাল্টার প্রণালী জয় করতে তাঁর সময় লেগেছে 3 ঘণ্টা 51 মিনিট ৷
সায়নী এর আগে পাঁচটা চ্যানেল জয় করেছেন ৷ তারপরে সপ্তসিন্ধু জয় করতে তাঁর বাকি ছিল জিব্রাল্টার প্রণালী ও সুগারু জয় । এবার ছয়ের লক্ষ্যে নেমে জিব্রাল্টার প্রণালী জয় করলেন পূর্ব বর্ধমানের সায়নী দাস । শুক্রবার স্পেনের সময় বেলা 1টা 45 মিনিটে ও ভারতীয় সময় ভোর 4 টে 45 মিনিটে জিব্রাল্টার প্রণালী জয়ের লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেন তিনি । এই চ্যানেলের দূরত্ব ছিল 14.2 কিলোমিটার । 3 ঘণ্টা 51 মিনিট সাঁতার কেটে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যান বাংলার ‘জলকন্যা’ সায়নী দাস ।
পূর্ব দিকে ভূমধ্যসাগর ও পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে জিব্রাল্টার প্রণালী । দেশ হিসেবে দেখতে গেলে মরক্কো ও স্পেনকে পৃথক করেছে জিব্রাল্টার প্রণালী । এই জিব্রাল্টার প্রণালী জয় করে নেওয়ার ফলে আপাতত সায়নীর সামনে আর শুধুমাত্র সুগারু পড়ে আছে । সুগারু জয় করতে পারলেই সায়নীর মাথায় উঠবে ওসেন সেভেন চ্যালেঞ্জের মুকুট । এর আগে সায়নীর মুকুটে যুক্ত হয়েছে ইংলিশ চ্যানেল, ক্যাটালিনা ও মলোকাই চ্যানেল, কুক প্রণালী জয়ের মতো শিরোপা । জিব্রাল্টার জয়ের ফলে সপ্তসিন্ধুর মধ্যে পড়ে রইল সুগারু ।
জানা গিয়েছে, সায়নী দাস 2017 সালে ইংলিশ চ্যানেলের 33.5 কিলোমিটার পার করেন । পরের বছর 2018 সালে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার 19.7 কিলোমিটার রটনেস্ট চ্যানেল, 2019 সালে পার করেন 32.3 কিলোমিটার আমেরিকার ক্যাটালিনা ও 2022 সালে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের 42 কিলোমিটারের মলোকাই চ্যানেল পার করেন । 2024 সালের এপ্রিল মাসে নিউজিল্যান্ডের প্রায় 26 কিলোমিটারের কুক প্রণালী ও অগস্ট মাসে 34.5 কিলোমিটার দূরত্বের নর্থ চ্যানেল জয় করেন তিনি ।

পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা শহরের বারুইপাড়া এলাকার বাসিন্দা সায়নী দাস । অনুশীলনের সময় তিনি জানিয়েছিলেন, অন্যান্য চ্যানেলগুলির তুলনায় স্পেনের জিব্রাল্টার প্রণালী পারাপারের দূরত্ব কিছুটা কম হলেও কিন্তু প্রতিকূলতা অনেক বেশি । একদিকে সমুদ্রে অতিরিক্ত স্রোত যেমন আছে, তেমনই আছে অতিরিক্ত পরিমাণে হাঙরের আক্রমণের ভয় । সেই কারণে তাঁকে সবকিছু মাথায় রেখে আলাদা করে অনুশীলন করতে হয়েছে ।
এদিন জিব্রাল্টার প্রণালী জয়ের পর সায়নী জানান, জল অত্যন্ত ঠান্ডা । জলের ভয়ংকর স্রোত ছিল । এছাড়া ছিল যে কোনও সময় হাঙরের হামলার আশঙ্কা । এই সমুদ্রে দিনে প্রায় তিনশোর কাছাকাছি জাহাজ চলাচল করে । তাই কিছুটা বাড়তি চাপ ছিল এই চ্যানেল পার করা । তাঁর বাবা তথা প্রশিক্ষক রাধেশ্যাম দাসের তত্ত্বাবধানে সমুদ্রে রোজ দু'ঘণ্টা করে অনুশীলন করেন তিনি । আর তাতেই মিলেছে সাফল্য ।
