সোনারপুর, 26 জুলাই: সোনারপুরের জামালউদ্দিন সরদারের বাড়ির পরতে-পরতে লুকিয়ে রহস্য ৷ শুক্রবার সকালে তেমনই একটি রহস্যের উপর থেকে পর্দা সরাল সোনারপুর থানার পুলিশ ৷ জামালের প্রাসাদোপম বাড়িতে মিলল একটি গুপ্তঘরের হদিশ ৷ তবে, কী রয়েছে সেই গোপন আস্তানায় ? তা জানতে পুলিশি তল্লাশি জারি রয়েছে ৷
স্থানীয় এক মহিলাকে সালিশি সভার নামে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে মারধর এবং শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার অভিযোগ ওঠে ৷ যে ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বেরিয়ে আসে জামালের একের পর এক কীর্তিকাহিনী ৷ গ্রেফতারও করা হয় জামালকে ৷ গ্রেফতারির একসপ্তাহের বেশি সময় পর, আজ জামালের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে সোনারপুর থানার পুলিশ ৷ সঙ্গে একদা সোনারপুরের ত্রাস জামালও সেখানে ছিলেন ৷ তল্লাশি অভিযানেই বেরিয়ে এল এক গুপ্তঘর ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, তল্লাশি চলাকালীন সেই গুপ্তঘরের দরজা নজরে পড়ে তদন্তকারীদের ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, যেখানে সালিশি সভা বসত ও শিকল বাঁধার হুক ছিল, সেখানেই মাটির তলায় একটি চেম্বার গোছের জায়গার সন্ধান মিলেছে ৷ জামাল দাবি করেছেন, জলের ট্যাঙ্ক হিসাবে মাটির তলার ওই চেম্বারটিকে ব্যবহার করতেন ৷ শুক্রবার সকালে জামালের বাড়িতে পুলিশ ঢোকার পর, ভিতর থেকে কিছু ভাঙাভাঙির শব্দ ভেসে আসছিল ৷
পুলিশি অভিযানের সময় সাক্ষী হিসাবে জামালের বেশ কয়েক জন প্রতিবেশীকেও ডাকা হয়েছিল ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, জলের ট্যাঙ্কটি ভাঙার কাজ চলছিল ৷ সূত্রে খবর, মাটির তলায় ওই চেম্বারটির মধ্যে কিছু রয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখতেই পুলিশ সেটি ভেঙেছে ৷ তবে, সাক্ষী হিসাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা এক প্রতিবেশী জানাচ্ছেন, ওই চেম্বারের ভিতর থেকে কিছু পাওয়া যায়নি ৷ অপর এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে আধার কার্ড-সহ বেশি কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করেছে পুলিশ ৷
কিন্তু, কী আছে সেই ঘরে ? সেই গোপন ঘর কেনই বা বানিয়েছিল ? কী করতে সেখানে জামাল ? সেটা কী কোনও গোপন সুড়ঙ্গ ? নাকি তাঁর নানান বেআইনিকাজ এই গোপন আস্তানা থেকেই চলত ? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ ৷ পুলিশ ওই গুপ্তঘরের দরজা খুলেছে ইতিমধ্যে ৷ সেখানে প্রায় দেড়ঘণ্টা তল্লাশি চলেছে ৷ তবে, কী তথ্য সেখান থেকে পেয়েছে পুলিশ, তা অজানা ৷ জমি জালিয়াতি, তোলাবাজি, নারী নির্যাতন, সালিশি সভার নামে লোকজনকে মারধর-সহ একাধিক অভিযোগ এই জামালের বিরুদ্ধে ৷ এবার নতুন কোনও অপরাধের সঙ্গে তাঁর যোগ বেরিয়ে আসে কিনা, সেটাই দেখার ৷