বংশীহারী (দক্ষিণ দিনাজপুর), 10 এপ্রিল: টাঙন নদী থেকে বেআইনিভাবে বালি তুলে এলাকায় মজুত করার অভিযোগ ৷ কাঠগড়ায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ৷ বুধবার ভূমি দফতরের বিভিন্ন আধিকারিক, এসডিএলআরও এবং বিএলআরও নিজে দাঁড়িয়ে থেকে অবৈধভাবে মজুত করে রাখা ওই বালি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন ।
ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরে ৷ কুশমণ্ডির কালিকামোড়া ও বংশীহারীর জোরদিঘি শীতলা মন্দির সংলগ্ন এলাকা থেকে বালি ডাম্পার ও আর্থ মুভার দিয়ে তুলে নিয়ে যায় ভূমি দফতর । এলাকার এক স্থানীয় শ্রমিকের দাবি, আতাউর রহমান বিভিন্ন জায়গায় নিজের প্রভাব খাটিয়ে এই বালিগুলো রেখেছেন । যদিও এই সম্পূর্ণভাবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এলাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান । তাঁর কথায়, "আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না ৷ ওখানে কার বালি রাখা, তাও আমার জানা নেই ৷"
এই বিষয়ে তোফিজুর রহমান নামে ওই শ্রমিক বলেন, "আমাকে এখানে বালি তোলার জন্য আনা হয়েছে । বালি তুলে দিলে পরে আমাকে 200 টাকা করে দেবে বলেছে । এই বালিগুলো রেখেছে এলাহাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আতাউর রহমান ।"
মহকুমা ভূমি দফতরের আধিকারিক নরবু ইয়লোম বলেন, "আজকে বংশীহারী ও কালিকামোরা এলাকা থেকে অবৈধ বালির স্টক উদ্ধার করলাম । এদের কাছে যে কাগজপত্র আছে, তা শুধু ট্রান্সপোর্টের অনুমতি হিলি পর্যন্ত । বালি মাইনিং-এর কোনও অনুমতি নেই । এরা অবৈধভাবে নদী থেকে বালি তুলে স্টক করছে । যেখানে বৈধ কাগজ ছাড়া এ ধরনের বালির স্টক রাখা আছে । এই বালিগুলো স্টক করেছে শুনলাম এলাহাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান । এই বালির মালিক না থাকায় আমরা এই বালিগুলোকে তুলে নিয়ে যাচ্ছি । বৈধ কাগজ ছাড়াই এই বালিগুলো জমায়েত করা হয়েছে বলে আমার কাছে খবর ছিল ।"

উল্লেখ্য, বংশীহারী টাঙন নদী থেকে অবাধে অবৈধ ভাবে বালি তুলে ডাম্পিং করার অভিযোগ উঠছিল দীর্ঘদিন থেকে । টাঙন নদীর বেশ কয়েকটি ঘাটে এই অবৈধ কাজ চলছিল বলে অভিযোগ । আর সেই অভিযোগের তীর এলাহাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে । সেই খবর জানতে পেরে নড়েচড়ে বসে ভূমি দফতর ।
বুধবার ভূমি দফতরের আধিকারিকরা ডাম্পার ও আর্থ মুভার নিয়ে জোরদীঘি শীতলা মন্দির সংলগ্ন ও কালিকামোরা টাঙন নদীর ঘাটে গিয়ে লক্ষ্য করেন বেশ কয়েক জায়গায় বালি তুলে রাখা আছে । বালি গুলি তুলতেই এলাকার বালি ব্যবসায়ীরা এসডিএলআরও'র সঙ্গে কথা বলেন । মজুত করা বালির বৈধ চালান দেখতে চাইলে তারা এমটিডিটিসিএল-এর ই-চালান দেখান । যে চালানটি মেটেরিয়াল ট্রান্সপোর্টের অনুমতিপত্র । যদিও সেই অনুমতিপত্রের নীচে কোনও এক আব্দুস সাত্তারের নাম রয়েছে ।

এই কাগজের স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, একটি ট্রাক্টর মাত্র 100 সিএফটি বালি বহন করতে পারবে হিলি পর্যন্ত । সময়সীমা দেওয়া আছে সাড়ে চার ঘণ্টা । কোথাও সেই কাগজে নদী থেকে বালি তোলার অনুমতি বা রয়েলটির তথ্য নেই । তা সত্ত্বেও তাঁরা সারাদিন নদী থেকে অবাধে বালি তুলে নদীর ধারে স্টক করছেন বলে অভিযোগ ৷