বৈঁচিগ্রাম, 12 এপ্রিল: কথায় আছে 'রাখে হরি মারে কে'। 30 ফুট গভীর পাতকুয়োয় পড়েও মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেলেন বছর পঁচাশির বৃদ্ধা । শনিবার দুপুর নাগাদ এমনই নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী হুগলির পাণ্ডুয়ার বৈঁচিগ্রামের দক্ষিণপাড়ায় ।
বৃদ্ধার নাম শোভারানি বন্দ্যোপাধ্যায় । বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন তিনি । ছেলে পরিবার নিয়ে কলকাতায় থাকে । তাই বাড়িতে একাই থাকেন বৃদ্ধা । নিত্য নৈমিত্তিক কাজের জন্য এক পরিচারিকা সঙ্গে থাকে । শনিবার কেউ না থাকায় পাতকুয়োয় জল তুলতে গিয়েছিলেন । তখনই অসাবধানতাবশত কুয়োয় পড়ে যান তিনি ।

পরে পরিচারিকা ফিরে এসে দেখেন বৃদ্ধা আর ঘরে নেই । এরপরই শুরু হয় খোঁজাখুঁজি । প্রতিবেশীরাও ছুটে আসেন । কিছুক্ষণ বাদে দেখা যায় পাতকুয়োর জলে ভাবুডুবু খাচ্ছেন শোভারানি । তৎক্ষণাৎ খবর দেওয়া হয় পাণ্ডুয়া দমকল ও বৈঁচি পুলিশ ফাঁড়িতে । দমকলের কর্মীরা এসে দড়ির সাহায্যে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে । বর্তমানে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর ।
পুলিশ সূত্রে খবর, জল তুলতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা । আপাতত তিনি সুস্থ রয়েছেন । কিছুটা ধাতস্থ হয়ে চা খাবার বায়না করেন শোভারানি।
পাণ্ডুয়া থেকে দমকল কর্মীরা মই নিয়ে কাজ শুরু করে । এরপর পরিস্থিতি বুঝে কুয়োয় একজনকে নামিয়ে দড়ি বেঁধে উপরে তুলে আনা হয় বৃদ্ধাকে । অল্প জল ছিল পাতকুয়োয় । উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে কপিকলের দড়ি ধরে কোনওরকমে ভেসে ছিলেন বৃদ্ধা ।
পরিচারিকা বর্ণালী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "দিদিমাকে ভাত খাইয়ে দিই । আমাকে বলল তুই বাড়ি থেকে খেয়ে আয় । আমি বাড়ি থেকে খেয়ে আসতে যেটুকু সময় । এসে দেখি এই কাণ্ড । তারপর পাড়া-প্রতিবেশীদের ডাকি ।"
এদিকে গ্রামের লোকের কাছে খবর পেয়ে কলকাতা থেকে সোজা হাসপাতালে চলে আসেন বৃদ্ধার ছেলে সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর কথায়, "মা বাড়িতে একাই থাকেন । তাঁকে দেখাশোনার জন্য লোক আছে । আমাকে গ্রামের ছেলেরা খবর দিল মা পাতকুয়োয় পড়ে গিয়েছে । তারপর হাসপাতালে এলাম । মাকে সুস্থ দেখে হাঁফ ছেড়ে বাঁচি ।"