নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে বাধা ! মুখে সেলোটেপ আটকানো, অভিযোগ ওড়িশার প্রশাসনিক কর্তার
ওড়িশার প্রশাসনিক আধিকারিককে দেখা করতে দেওয়া হল না দুর্গাপুর গণধর্ষণ কাণ্ডে নির্যাতিতার সঙ্গে ৷ পাশাপাশি আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক দলকেও বাধা দেওয়া হয় ৷

Published : October 13, 2025 at 3:13 PM IST
দুর্গাপুর, 13 অক্টোবর: দুর্গাপুরে ডাক্তারি ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্যরাজনীতি ৷ বারবার অভিযোগ উঠছে, চিকিৎসাধীন নির্যাতিতার সঙ্গে কাউকেই দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না ৷ রবিবারও বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি ৷ সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল সোমবার ৷ আজ ওড়িশা থেকে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে আসেন সরকারি আধিকারিক শিপ্রা বাজপেয়ী।
এদিন তাঁকেও দুর্গাপুর বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ৷ এরপরই তিনি বলেন, "মুখে আঠা, সেলোটেপ লাগানোর মতো অবস্থা সকলের ৷ কেউ কিছু বলছে না ৷" পাশাপাশি, এদিন 'ভয়েস অফ অভয়া', 'ভয়েস অফ উইমেন্সে'র সদস্যরা এবং আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক দলও আসেন দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ৷ নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলতে এলে বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁদেরও আটকে দেন। যার জেরে কার্যত ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে হাসপাতাল চত্বরে। বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীদের দেওয়া ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন আন্দোলনকারীরা ৷
এদিন ওড়িশার জলেশ্বর থেকে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে আসেন সরকারি আধিকারিক শিপ্রা বাজপেয়ী। তাঁকেও আটকে দেওয়া হয়। ভয়েস অফ উইমেন্স, ভয়েস অফ অভয়া এবং দুর্গাপুর নারীনিগ্রহ বিরোধী কমিটির পক্ষ থেকে চারজন প্রতিনিধি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বলে আবেদন জানান ৷ কিন্তু অনুমতি দেওয়া হয়নি। এরপরেই পুরো এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ৷ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় আরজি কর হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসক বিপ্লব চন্দ্র-সহ আরও বেশকিছু চিকিৎসক ও অধ্যাপক, অধ্যাপিকাদের।
চিকিৎসক বিপ্লব চন্দ্র বলেন, "আমরা তো অন্য কিছু চাই না ৷ কলেজের প্রিন্সিপাল, পুলিশ কমিশনার, জেলাশাসকরা এসে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় সঞ্জয় রায়কে সাজা দেওয়া হয়েছে ৷ এক্ষেত্রেও কয়েকজনকে গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীকালে অভিযুক্তদের যে ছেড়ে দেওয়া হবে না, তা কে বলতে পারে ? আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের উদ্বেগের কথা প্রশাসনকে শুনতে হবে।"

ওড়িশা থেকে আসা শিপ্রা বাজপেয়ী বলেন, "আমি একা এসেছি । আমাদের মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। কিন্তু আমাকে ঢুকতে দেওয়া হল না। তবে আমি দেখে খুশি হলাম যে আমাদের মেয়ের জন্য এখানকার মানুষ কীভাবে আন্দোলন করছেন। কিন্তু কেন প্রশাসন আমাদের বাধা দিচ্ছে তা বুঝতে পারলাম না। মুখে আঠা, সেলোটেপ লাগানোর মতো অবস্থা সকলের ৷ কেউ কিছু বলছে না ৷ এটা তো রাজনৈতিক ঘটনা নয়। এটা তো একটা সামাজিক ঘটনা।"
দুর্গাপুর নারী নিগ্রহ বিরোধী কমিটির সদস্যরা বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বলছেন রাতে মহিলারা বেরোবেন না। এর থেকে লজ্জাজনক ঘটনার কিছু হতে পারে না। আমরা নির্যাতিতার সঙ্গে চারজন প্রতিনিধি কথা বলতে চেয়েছিলাম। কলেজের প্রিন্সিপালের সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছি আমরা। আমাদের এই শান্তিপূর্ণ আবেদনে কীসের বাধা ?"
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাতে দুর্গাপুরে সহপাঠীর সঙ্গে খাবার খেতে হস্টেল ক্যাম্পাসের বাইরে যান ওড়িশার মেডিক্যাল পড়ুয়া ৷ তখনই দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়াকে গণঘর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ । এই ঘটনায় অভিযুক্ত 5 জনের মধ্যে পুলিশ 3 জনকে গ্রেফতার ও একজনকে আটক করে ৷ এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর ৷
লকেটকে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে বাধা, আটক বিজেপি সাংসদ থেকে বিধায়ক

