দার্জিলিং, 5 জুন: বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এক অন্যরকম বার্তা দিতে দেখা গেল উত্তরের বন বিভাগকে । ট্রেনে যাওয়ার সময় কোনওকিছু না ভেবেই ট্রেন থেকে রেললাইনে ফেলে দেওয়া হচ্ছে প্লাস্টিকের নানা আবর্জনা । যা পরিবেশকে দূষিত করছে তো বটেই, অন্যদিকে তা খেয়ে রোগব্যাধির শিকার হচ্ছে বন্যপ্রাণীরা ।
শুধুমাত্র রেলপথ নয়, উত্তরের জঙ্গলজুড়ে রয়েছে অনেক জাতীয় সড়ক, রাস্তা । তার আশেপাশেও একই ঘটনা ঘটে চলেছে । সাধারণ মানুষ হয়ত ভুলে যায় উত্তরের জঙ্গলের সঙ্গেই এই রেললাইন বা সড়ক । তা পার করে করিডোর দিয়ে অবলীলায় যাতায়াত করে হাতি, চিতাবাঘ, বাইসন, হরিণ-সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীরা । আর এই সমস্যাকে মাথায় রেখেই বৃহস্পতিবার একটু অন্যরকমভাবে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করল দার্জিলিং বন্যপ্রাণ বিভাগ ।

এদিন উত্তরের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চলে যাওয়া রেললাইন ও সড়কের আশেপাশের প্লাস্টিকের আবর্জনা পরিষ্কার করলেন বনকর্মীরা । মহানন্দা অভয়ারণ্য, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান, চাপড়ামারি জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চলে যাওয়া রেললাইনের আশেপাশের সমস্ত প্লাস্টিকের আবর্জনা পরিষ্কার করা হয় ।

বন বিভাগের কর্মীদের পাশাপাশি ঐরাবত, পিপল ফর ভয়েজ অ্যানিম্যালের মতো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং পুন্ডিং, খয়রানি, মাদারিহাট, কোদালবস্তির মতো জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট টিমের সদস্যদের নিয়ে ওই সাফাই অভিযান চলে ।

এই বিষয়ে উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভাস্কর জেভি বলেন, "রেললাইনে পরে থাকা প্লাস্টিকের আবর্জনা বন্যপ্রাণী ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক । সেই জন্য বিশ্ব পরিবেশ দিবসের দিন এই সাফাই অভিযানের মধ্যে দিয়ে আমরা একটা বার্তা দিতে চাই যাতে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ট্রেন কিংবা গাড়িতে করে যাওয়ার সময় যাত্রীরা প্লাস্টিক জাতীয় আবর্জনা না ফেলেন ।"

উত্তরবঙ্গের রেলপথের একটা বড় অংশ গিয়েছে পাহাড়, তরাই, ডুয়ার্সের মতো সবুজ ঘেরা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে । এই রেলপথগুলিকে নিয়ে সদা সতর্ক বন বিভাগ ও রেল কর্তৃপক্ষ । ট্রেনের সঙ্গে বন্যপ্রাণীর সংঘাত অনেকাংশে এড়ানো গেলেও বন বিভাগের একটা বড় উদ্বিগ্নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবেশ দূষণ । কারণ ট্রেনের যাত্রীদের অসতর্ক মনভাবের কারণে দূষিত হচ্ছে উত্তরের জঙ্গল । সেই বিষয়ে সচতেনতার বার্তা দিতে আজকের কর্মকাণ্ড ।