কলকাতা, 14 এপ্রিল: ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের বেশ কয়েকটি এলাকা ৷ এই আবহে সোশাল মিডিয়ায় প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার তথা বহরমপুরের তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ পাঠানের চা-পানের পোস্ট ঘিরে শুরু হয় বিতর্ক ৷ সোমবার দলের সাংসদের হয়ে সুর চড়ালেন কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার ৷ একযোগে সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান তিনি ৷ তাঁর দাবি, অশান্তির ঘটনা যেখানে ঘটেছে, সেই এলাকার সাংসদ ইউসুফ পাঠান নন ৷ বরং, সিপিএম-কংগ্রেস জোটের জয়ী প্রার্থী ইশা খান চৌধুরী ৷
তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, "মুর্শিদাবাদ জেলায় 22টি বিধানসভা কেন্দ্র ৷ এখানে প্রায় সাড়ে 3 জন সাংসদ রয়েছেন ৷ তার মধ্যে বহরমপুরের সাংসদ হলেন ইউসুফ খান, মুর্শিদাবাদের সাংসদ হলেন আবু তাহের খান এবং জঙ্গিপুরের সাংসদ হলেন খলিলুর রহমান ৷ জেলার 20টি বিধানসভা কেন্দ্র এই 3 সাংসদের আওতায় রয়েছে ৷ কিন্তু, বাকি দু'টি বিধানসভা কেন্দ্র, ফরাক্কা ও সামশেরগঞ্জ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে ৷ অর্থাৎ, যে এলাকায় অশান্তি ছড়িয়েছে, সেই এলাকার সাংসদ হলেন কংগ্রেসের ইশা খান চৌধুরী ৷" তাঁর কথায়, "ধুলিয়ান কিংবা সামশেরগঞ্জ কোনওটি ইউসুফ পাঠানের কেন্দ্রই নয় ৷ অথচ, ইশা খান চৌধুরী কোথায় ? কেউ একবারও সেই প্রশ্ন তুললেন না ৷"
সেই সঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক আরও জানান, মুর্শিদাবাদ এবং বহরমপুর দুই সাংসদের এলাকা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ । দুই জন সাংসদ এবং এই সমস্ত এলাকার বিধায়করা পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ রেখে এলাকার শান্তি বজায় রাখার জন্য কাজ করছেন । এমনকী, বহরমপুরের সাংসদ ইউসুফ পাঠানও নিয়মিত এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে জানান তিনি ৷ অপূর্ব সরকারের দাবি, বহরমপুরের কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি ৷ এই অবস্থায় সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেস যৌথভাবে আক্রমণ, চক্রান্ত ছাড়া আর কিছু নয় ৷
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সোশাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ইনস্টাগ্রামে অবসর সময় কাটানোর একটি ছবি পোস্ট করেন ইউসুফ পাঠান ৷ ছবিতে, সাদা কুর্তা পড়ে হাতে চায়ের কাপ নিয়ে দেখা যায় তাঁকে ৷ ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, "ফুরফুরে বিকেল, দারুণ চা এবং চারদিক কী শান্ত ৷ এই মুহূর্তটা উপভোগ করছি ৷" তাঁর সেই পোস্ট কেন্দ্র করে শুরু হয় বিতর্ক ৷ ইউসুফের চা খাওয়ার ছবির সঙ্গে সামশেরগঞ্জের ঘটনার ছবি শেয়ার করেন বিজেপি নেতা শেহজাদ পুনেওয়ালা ৷
রবিবার বিরোধীদের কড়া জবাব দেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ । তিনি স্পষ্ট জানান, যেখানে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে, তা এই বিখ্যাত ক্রিকেটারের নির্বাচনী ক্ষেত্র নয় ৷ কাজেই যারা এই নিয়ে বলছেন তাঁরা আগে ঠিক করে জেনে নিন ওই এলাকার সাংসদ কে ! এবার সেই একই প্রশ্ন তুললেন দলের আরও এক বিধায়ক ৷