চুঁচুড়া,8 এপ্রিল: বিয়ের 30 বছর সংসার করার পর স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারল স্বামী। মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ছয় বছর পর চুঁচুড়া জেলা আদালত দোষীকে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করলৃ। 2019 সালে বলাগরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস (61) তাঁর স্ত্রী চন্দনা দাসকে (55) কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে খুন করে।
এই দম্পতির দুই মেয়ে বিবাহিত। এক মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে বলাগর থানায় লিখিত অভিযোগ করে। হাসপাতালে আহত চন্দনার গোপন জবানবন্দি ও 19 জন সাক্ষীর ভিত্তিতে বৃদ্ধ বিশ্বজিৎকে দোষী সাবস্ত করেন বিচারক। মঙ্গলবার চুঁচুড়া জেলা আদালতের দ্বিতীয় ফাস্ট ট্রাক কোর্টের বিচারক শুভ্রা ভৌমিক ভট্টাচার্য দোষীকে 302 ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড 20 হাজার টাকা জরিমানার সাজা শোনান। জরিমানার অনাদায়ে দোষীকে আরও এক বছর কারাদন্ডের সাজা শোনায় আদালত।
চুঁচুড়া জেলা আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গাঙ্গুলী এই মামলার দায়িত্ব দেন সরকারি আইনজীবী প্রশান্ত আগরওয়ালকে। আজ মামলা সম্পন্ন হওয়ার পর আইনজীবী শঙ্কর গাঙ্গুলী বলেন, বিয়ের দশ বছর পর থেকে শুরু হয় স্ত্রী চন্দনার উপর শারীরিক নির্যাতন করত মদ্যপ স্বামী। পারিবারিক অশান্তির জেরে মারধর ও যথেচ্ছ অত্যাচার করত। প্রায় 30 বছর সংসার করার পর 2019 সালের 7 জানুয়ারি নিজেদের বাড়িতেই স্ত্রী চন্দনা দাসের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে দেন বিশ্বজিৎ। গুরুতর জখম অবস্থায় চন্দনা দাসকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই অবস্থায় স্বামীর বিরুদ্ধে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি মহিলা। দুদিন পর মারা যান তিনি। এরপর দম্পতির বড় মেয়ে সরসী দাস 11 জানুয়ারি বাবার বিরুদ্ধে বলাগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ।
পুলিশ তদন্তে নেমে 27 জানুয়ারি বিশ্বজিৎকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করে। এই মামলার বলাগর থানার তদন্তকারী অফিসার ছিল উজ্জ্বল দে। মোট 19 জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেয় এই মামলায়। চলতি বছরের 5 এপ্রিল অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় দোষী বিশ্বজিৎ দাসকে 498 ধারায় ছয় মাস সশ্রম কারাদন্ড এক হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেয় আদালত। অনাদায়ে আরও একমাস জেল এবং 302 ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড 20 হাজার টাকা জরিমানার সাজা ঘোষণা শুনিয়েছে আদালত । অনাদায়ে এক বছর কারাদন্ডের সাজা শোনান বিচারক।
পরকীয়ায় জড়িয়ে খুনের ছক স্ত্রী'র, জানতে পেরে শেষ করে দিলেন স্বামী !