শান্তিপুর, 30 এপ্রিল: ধারালো বঁটির কোপে স্ত্রীর ধড়-মুণ্ড আলাদা করে দিল স্বামী ! অভিযোগ, স্ত্রীকে খুন করার পর তিনি থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন ৷ তাঁর নাবালিকা কন্যার দাবি, এমন হিংস্র বাবার ফাঁসি হওয়া উচিত ৷
সাংঘাতিক এই ঘটনা ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর থানা এলাকার নয় নম্বর ওয়ার্ডের পৌরপুটিতলা এলাকায় । অভিযুক্তের নাম বুদ্ধদেব সরকার । তাঁর মৃত স্ত্রীর নাম শ্রাবণী সরকার । তাঁদের একমাত্র কন্যা দশম শ্রেণির ছাত্রী ৷ জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সে প্রাইভেটে পড়তে গিয়েছিল । সেই সময় তার মা ও বাবা বাড়িতে ছিলেন । ঠিক তখনই কোনও একটি বিষয় নিয়ে বচসা হয় স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ।
অভিযোগ, বচসার মাঝেই রাগের মাথায় ধারালো বঁটি দিয়ে স্ত্রীর গলায় একাধিক কোপ মারেন বুদ্ধদেব । সারা ঘর রক্তে ভেসে যায় ৷ আলাদা হয়ে যায় ওই গৃহবধূর ধড় ও মুন্ডু ৷ ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয় । এরপর অভিযুক্ত শান্তিপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন বলে জানা গিয়েছে । খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে ।
স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্ত বুদ্ধদেব সরকার জুয়ার নেশায় আসক্ত ছিলেন । অনলাইন গেম থেকে আইপিএল, সবক্ষেত্রেই জুয়া খেলতেন তিনি । যা নিয়ে তাঁর সঙ্গে স্ত্রীর অশান্তি লেগেই থাকতো । এর আগেও জুয়াতে হেরে গিয়ে তিনি একাধিকবার নিজে চরম পদক্ষেপ করার চেষ্টা করেছিলেন ।
এই ঘটনার পর মৃত বধূর নাবালিকা কন্যা বলেন, "আমার বাবাই এই কাজটা করেছে । যে এতটা হিংস্র হতে পারে, আমি চাই তার ফাঁসি হোক । সে বেঁচে থাকুক আমি সেটা চাই না । মাঝেমধ্যেই দু'জনের মধ্যে অশান্তি হত । তবে কী কারণ নিয়ে অশান্তি হত তা স্পষ্ট আমি জানি না । আমার মা আর নেই ৷ তবে আমি এই অবস্থাতেও বাবাকে চাই না ৷ তার ফাঁসি হওয়া উচিত ৷"
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রানাঘাট মহাকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । অভিযুক্ত বুদ্ধদেব সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ । কী কারণে এই খুন তাও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ এ বিষয়ে রানাঘাট জেলা পুলিশ সুপার আশিস মৈজ্য বলেন, "অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করেছেন । তাঁর বিরুদ্ধে খুন-সহ একাধিক মামলা রুজু করা হয়েছে । আজ তাঁকে আদালতে তোলা হবে । আমাদের তরফে আদালতের কাছে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে ।"