কলকাতা, 21 এপ্রিল: একটু একটু করে অফিসের টাকা সরিয়ে তিনি জড়ো করেছিলেন প্রায় এক কোটি টাকা ! অভিযোগ, পানশালা ও সেখানকার নর্তকীদের উপর টাকা খরচ করাই ছিল তাঁর নেশা ! আর সেটাই কাল হল । শহরের একটি নামী পানশালার বাইরে থেকে গ্রেফতার করা হল এক প্রতারককে । ধৃতের নাম সন্দীপ ভাটিয়া । তাঁকে গ্রেফতার করেছে শেক্সপিয়ার সরণি থানার পুলিশ ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের এক আধিকারিক এবিষয়ে জানান, "ধৃতের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে । কিন্তু বাকি টাকা ওই ব্যক্তি কোথায় খরচ করল, তা আমাদের দেখতে হবে ৷"

লালবাজার সূত্রে খবর, ধৃত সন্দীপ ভাটিয়া শেক্সপিয়ার সরণি থানার আওতাধীন একটি সংস্থায় চাকরি করতেন । সেখানে নগদ ও তহবিলের দায়িত্বে ছিলেন সন্দীপ । সেই অফিসের অভিযোগ, ধীরে ধীরে অফিসের তহবিল থেকে টাকা সরাতে থাকেন সন্দীপ । এমনকি অন্য একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানেই সরানো টাকা রাখতেন তিনি ৷ অভিযোগ, অফিসের টাকা সরাতে গিয়েই তিনি ধরা পড়ে যান । আর তাতেই তাঁর চাকরি যায় । পরে সংশ্লিষ্ট অফিসের তরফে স্থানীয় শেক্সপিয়ার সরণি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় । তার ভিত্তিতেই শুরু হয় তদন্ত ।
সেই তদন্তে পুলিশ জানতে পারে যে, অভিযুক্ত সন্দীপের বাড়ি হুগলি জেলার হিন্দমোটরে । জানা যায়, তিনি অনেক সময় বাড়ি না-ফিরলেও রাতে একবার বিবাদী বাগের কাছে একটি পানশালায় অবশ্যই যান । আর তাঁর নেশা ছিল সংশ্লিষ্ট পানশালায় নর্তকীদের উপর রাশি রাশি টাকা খরচ করা । তদন্তে নেমে পুলিশ এও জানতে পারে যে, অফিসের তরফে সন্দীপের নামে অভিযোগ করার পর, হুগলির হিন্দমোটর থেকে শেক্সপিয়ার সরণি থানায় সন্দীপের নামে একটি মিসিং ডায়েরি করা হয়েছিল ৷ সেটি করেছিলেন সন্দীপের পরিবারের সদস্যরাই । আর এখানেই তদন্তকারীদের সন্দেহ হয় ৷
সন্দীপের অফিসের তরফে শেক্সপিয়ার সরণি থানায় অভিযোগ দায়েরের পর, কেন হুগলি জেলা থেকে সেই শেক্সপিয়ার সরণি থানাতেই এসে তাঁর পরিবারের সদস্যরা মিসিং ডায়েরি করবেন ! তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান হয় যে, এই ঘটনায় নিজের অফিসকে বিপাকে ফেলতেই পরিবারের সদস্যদের দিয়ে নিজের নামে মিসিং ডায়েরি করিয়েছেন সন্দীপ ৷ এরপরেই তদন্তে নেমে শেক্সপিয়ার সরণি থানার পুলিশ সন্দীপের ফোন ট্র্যাক করে জানতে পারে, সন্দীপ সংশ্লিষ্ট পানশালায় যাচ্ছেন । সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে সংশ্লিষ্ট পানশালার বাইরে থেকে গ্রেফতার করে শেক্সপিয়ার সরণি থানার পুলিশ ।
তাঁকে গ্রেফতারের পর তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছে শেক্সপিয়ার সরণি থানার পুলিশ ।