পানিহাটি, 3 জুন: ফের রাজ্যে অস্ত্রভাণ্ডারের হদিশ ! এবার উত্তর 24 পরগনার পানিহাটিতে কাউন্সিলরের 'ঘনিষ্ঠ' এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে মিলল অস্ত্রভাণ্ডার ! যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায় । ইতিমধ্যে এই ঘটনায় নঈম আলি ওরফে নেপালি নামে ওই 'তৃণমূল কর্মী'কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত কার্তুজ থেকে শুরু করে বিদেশি বন্দুক । কিন্তু কীভাবে এই অস্ত্র পেলেন ধৃত ব্যক্তি ? তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের ।
জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পানিহাটির মৌলানা সেলিম রোডের বাসিন্দা নঈম আনসারির বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ ।কামারহাটি ও খড়দা থানার যৌথ অভিযানে সেখান থেকে উদ্ধার হয় বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র । সূত্রের খবর, পুলিশি হানার খবর পেয়ে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত । যদিও শেষ রক্ষা হয়নি । পরে, আগরপাড়া থেকে নঈমকে গ্রেফতার করা হয় বলে খবর ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নেপালির বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে স্টেইনগান,পাইপগান থেকে শুরু করে সেনার ব্যবহৃত কার্তুজ । ঘটনাটি জানাজানি হতেই প্রবল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় । এত অস্ত্র কোথা থেকে পেলেন ওই ব্যক্তি ? কেনই বা সেগুলো মজুত করা হয়েছিল সেখানে ? তা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য । ধৃত নেপালিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই রহস্যভেদ হবে বলে আশাবাদী পুলিশ । পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের বাড়ি থেকে চারটি দেশি পাইপগান, চার রাউন্ড 8 এমএম কার্তুজ, পাঁচ রাউন্ড .38 কার্তুজ, তিন রাউন্ড 7.62 এমএম কার্তুজ, এক রাউন্ড .318 নাইট্রো কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ।

এদিকে, এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক তরজায় জড়িয়েছে শাসক-বিরোধী শিবির । বিশেষ করে এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে শাসকদলকে নিশানা করেছেন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং । তাঁর মতে, "পানিহাটি, খড়দার মতো এলাকা অপরাধীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে । ওখানের কোনও বাড়িতে তৃণমূলের অনুমতি ছাড়া একটা ইটও গাঁথা যায় না ।" অর্জুনের দাবি, "নঈম তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী । এটা ওখানকার সকলেই জানে ।চাপে পড়েই পুলিশকে ওকে গ্রেফতার করতে হয়েছে । অভিযান চালালে এরকম আরও অনেক উন্নতমানের অস্ত্রের হদিশ মিলবে ।"

যদিও নেপালিকে দলের কর্মী বলে মানতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব । পালটা তাঁদের দাবি, "যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে তৃণমূলের কেউ নয় । জেরা করলেই জানা যাবে, ও আসলে অর্জুন সিংয়েরই লোক ।”
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দ্রবদন ঝাঁ বলেন, "কোথা থেকে বিপুল এই কার্তুজ ও অস্ত্র পেলেন ধৃত ব্যক্তি, তা তাঁকে জেরা করে জানার চেষ্টা করা হবে । এর পিছনে বড় কোনও চক্র আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে । ধৃতকে মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হয়েছে । তদন্ত চলছে ।"