কলকাতা, 18 ফেব্রুয়ারি: শিকল বেঁধে ভারতীয়দের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরানো নিয়ে বর্তমানে জোর চর্চা চলছে সংবাদ মাধ্যমে । যেভাবে শিকল পরিয়ে ভারতীয়দের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি । এবার এই নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এ বিষয়ে তিনি নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ৷
মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণের জবাবী বক্তৃতা দিতে গিয়ে এই প্রসঙ্গ টেনে আনলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । একদিকে যখন ভারত-আমেরিকার আরও নিবিড় সম্পর্কের বার্তা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কীভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী । বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, "হতে পারে প্রোটোকল, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কীভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটে !"

এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "যাঁরা আমেরিকা থেকে এল তাঁদের কেন শিকল বেঁধে নিয়ে আসা হল ! কী উত্তর আপনাদের (কেন্দ্র সরকারকে) ? আপনারা বলছেন ওটা ওদের প্রোটোকল । আমি প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানিয়েই বলছি, আপনি উপস্থিত থাকাকালীন তাঁদের এভাবে নিয়ে আসা হয়েছে । প্রোটোকল তো সব দেশের এক রকম হয় না । মানবিকতাই তো সবার ঊর্ধ্বে ।"
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, "আপনি কি একবারও এর প্রতিবাদ করেছিলেন ?" বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এঁরা কিন্তু কেউ বাংলার লোক নন । এঁরা কিন্তু গুজরাত, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাবের লোক । যদি অনুপ্রবেশ করেও থাকে, আপনি বলতে পারতেন, আমি ফ্লাইট পাঠাচ্ছি আমি আমার ফ্লাইটে করে ভারতীয়দের নিয়ে আসব । কেউ কি দায়িত্ব নিয়েছিলেন !"

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকার দায়িত্ব নিলে ওই মানুষগুলো সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরে আসতে পারত । কিন্তু সেই দায়িত্ব নেওয়া হয়নি । পায়ে শিকল বেঁধে, হাতে শিকল বেঁধে 40 ঘণ্টা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তাঁদের দেশে ফেরানো হল । এর মধ্যে থেকে মহিলারাও বাদ যায়নি । তা সত্ত্বেও আমরা কেন কিছু বলিনি ! আজকে বলছি, কারণ আপনারা বলতে বাধ্য করছেন । কিছু না বলা সত্ত্বেও আপনারা আমাকে টেরোরিস্টের সঙ্গে যুক্ত আছি বলে দিচ্ছেন, এর থেকে মৃত্যু হওয়া ভালো । এই দেশটা আমাদের সবার দেশ । তাই দেশের স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এমন কোনও কথা আমরা বলি না । আমরা বিদেশনীতি এবং অভ্যন্তরীণ নীতির প্রশ্নে সবসময় বলি, কেন্দ্র সরকার যেটা বলবে আমরা সেটাই মেনে নেব ।"