কলকাতা, 9 এপ্রিল: ওয়াকফ সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হওয়ার পরই উত্তেজনা ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে ৷ চলেছে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ৷ এই পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে শান্ত থাকার আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে জৈন সমাজের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, "বাংলায় এমন কিছু হবে না যাতে ডিভাইড অ্যান্ড রুল হয় । এখানে সবাই একসঙ্গে থাকবে, একসঙ্গেই বাঁচবে ।"
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, "আমি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে একটা কথাই বলতে চাই, ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে কেন্দ্র যে পদক্ষেপ করেছে, তাতে আপনাদের মনে দুঃখ হয়েছে, সেটা আমি বুঝি । তবে বাংলায় এসব কিছুই হবে না । আপনারা ভরসা রাখুন, দিদি আপনাদের সঙ্গে আছে । শুধু আপনাদের নয়, আপনাদের সম্পত্তিও আমি রক্ষা করব ।" তিনি আরও বলেন, "সম্পত্তি নেওয়ার অধিকার যেমন কারও নেই, তেমনই অন্যের সম্পত্তিও আমি নিতে পারি না । আমরা বিশ্বাস করি শান্তিতে বাঁচতে এবং অন্যকে বাঁচতে দিতে । এটাই বাংলার নীতি ।"

বাংলাদেশ সীমান্তের প্রসঙ্গ টেনে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এই সময় এমন কিছু করা একেবারেই ঠিক নয় যা অশান্তির কারণ হতে পারে । বাংলায় সংখ্যালঘুর সংখ্যা প্রায় 33 শতাংশ । তাঁরা স্বাধীনতার অনেক আগেই এই রাজ্যে বসবাস শুরু করেছেন । আমরা কি তাঁদের তাড়িয়ে দেব ? এটা কি সম্ভব ?"
সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তা, "কিছু মানুষ রাজনৈতিক স্বার্থে আপনাদের উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করছেন । আমি শুধু অনুরোধ করব, সেই প্ররোচনায় পা দেবেন না । আমাদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা নষ্ট করা যাবে না । আমরা একসঙ্গে থাকলে তবেই জয় আসবে ।"
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী একই বার্তা দিয়েছিলেন । তিনি জানান, রাজ্য সরকার কখনওই ওয়াকফ সম্পত্তির দখলদারিতে বিশ্বাস করে না । নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের মঞ্চ থেকেও সেই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করলেন তিনি ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সংসদের উভয় কক্ষে পাশ হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির সম্মতি পেয়ে আইনে পরিণত হয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী বিল ৷ সংশোধিত আইন অনুযায়ী, কোনও জমি ওয়াকফের কি না, সেই সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসক । ওয়াকফ বোর্ডে এ বার থেকে থাকতে পারবেন অ-মুসলিম প্রতিনিধিরাও । আর তাতে নিয়ন্ত্রণ থাকবে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ৷