চুঁচুড়া, 26 মার্চ: লুপ্তপ্রায় প্রজাতির গোল্ডেন ঈগলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন স্থানীয়রা ৷ বুধবার সকালে রবীন্দ্র নগর এলাকার একটি বাড়ির ছাদে ঈগল পাখিটিকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন কয়েকজন ৷ তাকে প্রাণী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান তাঁরা ৷ সুস্থ হলে তাকে বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাণী চিকিৎসক ৷
চিকিৎসক থেকে শুরু করে প্রাথমিক অনুমান, ঈগলটি বৈদ্যুতিক তারে ধাক্কা খেয়ে তড়িদাহত হয়ে পড়ে গিয়েছে ৷ বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার করে পাখিটিকে চুঁচুড়ায় রাজ্য প্রাণী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে প্রাণী চিকিৎসক জয়জিৎ মিত্র আহত ঈগলটির চিকিৎসা করেন ৷ তিনি আশ্বস্ত করেছেন, দু-তিন দিনের মধ্যে পাখিটি সুস্থ হয়ে উঠবে ৷
প্রাণী চিকিৎসকের কথায়, "দু'টি ছেলে রবীন্দ্র নগর এলাকা থেকে এই পাখিটিকে আমার কাছে নিয়ে আসে ৷ টাওয়ার থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে ৷ ওকে দু'টি ইনজেকশন দিলাম । পাশাপাশি ওরাল মেডিসিন ও ইলেক্টোরাল দিলাম ৷ তাতে অনেকটাই সুস্থ হয়েছে ৷ আশা করি, দু-তিন দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে ৷
তিনি আরও বলেন, "এটি গোল্ডেন ঈগল ৷ এই ঈগল সাধারণত 25-30 বছর পর্যন্ত বাঁচে ৷ এখানে এই ধরনের পাখি কম দেখা যায় ৷ তাছাড়া এগুলো লুপ্তপ্রায় প্রজাতির প্রাণী ৷ এই ঈগলটিকে উদ্ধার করে তাঁরা নিয়ে এসেছেন ৷ এর জন্য তাঁদের ধন্যবাদ ৷ এই বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীগুলিকে রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য ৷"
উদ্ধারকারী ব্যক্তির নাম সঞ্জয় কর । তিনি বলেন, "মোবাইল টাওয়ার থেকে কোনওভাবে বাড়ির ছাদে পড়ে গিয়েছিল পাখিটি ৷ সেখান থেকে আমরা হাসপাতালে নিয়ে আসি ৷ চিকিৎসার পর এখন অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠছে ৷" তিনি জানান, পাখিটি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে ৷
গোল্ডেন ঈগল-পরিচয়
গোল্ডেন ঈগল উত্তর গোলার্ধের অন্যতম পরিচিত শিকারি পাখি ৷ ইউরেশিয়া, উত্তর আমেরিকা ও উত্তর আফ্রিকায় এই প্রজাতির ঈগলকে দেখা যায় ৷ বর্তমানে এটি লুপ্তপ্রায় প্রজাতিভুক্ত পাখি ৷ এই পাখিগুলি গাঢ় বাদামি রঙের হয় ৷ তাদের গলায় হালকা সোনালি-বাদামি রঙ দেখা যায় ৷ সোনালি ঈগল তার ক্ষিপ্রতা এবং দ্রুত গতির জন্য বিখ্যাত ৷ এর জন্য ঈগলের পা শক্তিশালী হয় এবং পায়ে বড়, ধারালো নখ রয়েছে ৷ প্রধানত ছোট পাখি, খরগোশ ও কাঠবিড়ালি শিকার করে খায় ৷