ETV Bharat / state

হৃদযন্ত্রের জটিল সমস্যা! বেঙ্গালুরু ফিরিয়ে দেয়, সেই শিশুকে সুস্থ জীবন দিল কলকাতার হাসপাতাল - RARE HEART SURGERY

আটঘণ্টা ধরে হয় অস্ত্রোপচার হয় ৷ সাড়ে পাঁচঘণ্টা শিশুর হৃদযন্ত্র বন্ধ রাখা হয় ৷ ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের একটি মেশিনের সাহায্যে তখন তাকে রাখা হয় ৷

Rare Heart Surgery
বেঙ্গালুরু থেকে ফেরানো শিশুকে সুস্থ জীবন দিল কলকাতার হাসপাতাল (প্রতীকী ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : June 3, 2025 at 8:01 PM IST

4 Min Read

কলকাতা, 3 জুন: হৃদযন্ত্রের জটিল সমস্যায় ভুগছিল মালদার এক শিশু ৷ বছর ছয়েকের ওই শিশুকে নিয়ে বেঙ্গালুরুতেও গিয়েছিলেন তার মা-বাবা ৷ কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি৷ শেষ পর্যন্ত কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতাল সুস্থ করল ওই শিশুকে ৷

তার পরিবার থেকে জানা গিয়েছে, সে দীর্ঘদিন ধরে জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগছিল । বাড়ির সামনের চিকিৎসককে দেখাতেই তিনি ধরে ফেলেন যে শিশুটির হৃদযন্ত্রে রয়েছে একাধিক সমস্যা । সেই চিকিৎসা করানোর জন্যই ছেলেকে নিয়ে বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন ওই দম্পতি ।

শিশুর বাবা বলেন, "সেখান থেকে রেফার করা হয় দিল্লিতে । তবে সেখানে না-গিয়ে নিজের রাজ্যেই ফিরে আসি । তখন আমরা যাই কলকাতার আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতাল বিএম বিড়লা হার্ট হাসপাতালে ।" সেখানে চিকিৎসক কুন্তল রায়চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিবার । একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায়, জটিল এক রোগে ভুগছে এই শিশুটি । চিকিৎসকের কথায়, এই ঘটনা অত্যন্ত বিরল । সারা পৃথিবীতে খুব কম শিশুর এই ধরনের সমস্যা হয় ।

কিন্তু কী হয়েছিল এই শিশুটির ?

কার্ডিয়াক সার্জেন কুন্তল রায়চৌধুরী বলেন, "আমাদের হৃদয়ের যা গঠন থাকে, ওর ক্ষেত্রে তা ঠিক বিপরীত এবং খুব জটিল । সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে ডানদিকের অলিন্দ যুক্ত থাকে ডানদিকের নিলয়ের সঙ্গে এবং সেটা যুক্ত থাকে ফুসফুসের সঙ্গে । ফুসফুস থেকে অক্সিজেন নিয়ে রক্ত বামদিকে যায় ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘কিন্তু এই শিশুটির ক্ষেত্রে তা ছিল বিপরীত । অর্থাৎ ওই শিশুটির ডানদিকের অলিন্দর সঙ্গে বাঁদিকের নিলয় যুক্ত ছিল । এর ফলে ডানদিকের অলিন্দ থেকে দূষিত রক্ত যাচ্ছে বাঁদিকের অলিন্দে । এবার সেটা আবার যুক্ত রয়েছে ফুসফুসের সঙ্গে ।’’ এক্ষেত্রে অক্সিজেনের সমস্যা হওয়ার কথা ৷ তবে ওই শিশুর অক্সিজেনের সমস্যা অবশ্য হচ্ছিল না ৷ হৃদযন্ত্রে অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল ৷ চিকিৎসার ভাষাতে এই সমস্যাকে বলা হয় Congenitally corrected Transposition of Great arteries (CCTGA) ৷

কিন্তু সমস্যা ছিল অন্য জায়গায় । ড. কুন্তল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাদের সকলের শরীরে বাঁদিকের যে নিলয়, সেটা সবথেকে বেশি শক্তিশালী এবং পেশীবহুল হয় । সেখানেই যুক্ত থাকে মহাধমনী । কিন্তু এই শিশুটার ক্ষেত্রে মহাধমনী ছিল ডান দিকের নিলয়ের সঙ্গে যুক্ত । এর ফলে ওর পাম্পিং চেম্বারে সমস্যা হচ্ছিল । তার পাশাপাশি ওর ডানদিকে যে ভালভ রয়েছে (ট্রাইকাস্পিড ভালভ) সেখানে ছিদ্র ছিল । যেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকবে এবং ডানদিকের নিলয় অকেজো হয়ে যাবে ৷ তখন হয়তো আর কিছু করার উপায় থাকবে না ।’’

তাছাড়া বাচ্চার হার্টের ফুটোর (Ventricular septal defect) সঙ্গে ফুসফুসের রাস্তা ছোট ছিল (পালমোনারি স্টেনোশিশ)। এই রোগ চিকিৎসকের কথায় অত্যন্ত বিরল । তারই অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা । এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে বলা হয় ‘ডাবল সুইচ সার্জারি’ অর্থাৎ সেনিং ও রাসটেলি । এর সঙ্গে ডিকেএস (ড্যামাস-কেয়-স্টানশেল) করা হয় । অর্থাৎ ডাবল সুইচ ও ডিকেএস সার্জারি, দু’টোই করা হয় ।‌

ড. কুন্তল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘পূর্বভারতে প্রথম এই সার্জারি করা হল । ওই হার্টের ফুটোকে কাজে লাগিয়ে আমরা ওর অস্ত্রোপচার করেছি । বাঁদিকের নিলয়ের সঙ্গে মহাধমনীকে যুক্ত করেছি । যেটা ওই ছিদ্রটাকে দিয়েই করা হয়েছে । কিন্তু আমরা সেখানে আরও একটা রাস্তা করেছি । অর্থাৎ মহাধমনীতে বাঁদিকের নিলয় যুক্ত হওয়ার জন্য ওর দু’টো রাস্তা রয়েছে । ও যখন বড় হবে, তখন আর ওই ছিদ্রটা বাড়বে না । সেই সময় যাতে রক্ত চলাচলে বাধা না হয়, তাই আরেকটা অতিরিক্ত পথ তৈরি করা মহাধমনীতে রক্ত যাওয়ার জন্য । এর সঙ্গেই সেনিং অপারেশন করে আমরা ডানদিকের অলিন্দের দূষিত রক্ত ডানদিকের নিলয়ের সঙ্গে যুক্ত করেছি ৷"

এই পুরো অস্ত্রোপচার করতে সময় লেগেছে প্রায় আট ঘণ্টার বেশি । এই অস্ত্রপ্রচারে কার্ডিয়াক সার্জেন ড. কুন্তল রায়চৌধুরী ছাড়াও ছিলেন পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিসট ড. শ্যামাজিৎ সমাদ্দার, পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক ইনটেনসিভিসট ড. শতরূপা মুখোপাধ্যায়, কার্ডিয়াক আন্যাসথেটিসট ড. প্রবীরকুমার দাস । ওই শিশুটির চিকিৎসা হওয়ার সময় হৃদযন্ত্রকে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়েছিল । সেই সময় ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের একটি মেশিনের সাহায্যে তাকে রাখা হয়েছিল । এইরকম অপারেশনের জন্য পারফিউশন এবং নার্সিং টিমের সকলের ভূমিকাই খুব গুরুত্বপূর্ণ ।

শিশুটির বাবা বলেন, "আমি পেশায় একটি বেসরকারি পেট্রল পাম্পে কাজ করি । শিশুসাথী কার্ডের সাহায্যে আমরা এই চিকিৎসা করিয়েছি বিনামূল্যে । 5 মে ওর অস্ত্রোপচার করা হয়। 27 মে ওকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়েছে । আমার ছেলে সম্পূর্ণ সুস্থ এখন । কোনও সমস্যা নেই ।" ড. কুন্তল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এইরকম অপারেশন আশা জাগায় ও প্রমাণ করে যে বাচ্চাদের হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বাইরে যাওয়ার দরকার নেই ।’’

আরও পড়ুন -

  1. মূত্রাশয়ে ক্যানসার! চিকিৎসায় নয়া প্রযুক্তির ব্যবহারে সুস্থ জীবনে ফিরেছেন বরুণ
  2. রাজ্যে প্রথম আসানসোলে জেলা স্তরের হাসপাতালে কৃত্রিম স্তন প্রতিস্থাপন, খরচ কত
  3. হৃদযন্ত্রের জটিল রোগে সারা শরীর নীল, 13 দিনের শিশুর সফল অস্ত্রোপচার শহরের হাসপাতালে

কলকাতা, 3 জুন: হৃদযন্ত্রের জটিল সমস্যায় ভুগছিল মালদার এক শিশু ৷ বছর ছয়েকের ওই শিশুকে নিয়ে বেঙ্গালুরুতেও গিয়েছিলেন তার মা-বাবা ৷ কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি৷ শেষ পর্যন্ত কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতাল সুস্থ করল ওই শিশুকে ৷

তার পরিবার থেকে জানা গিয়েছে, সে দীর্ঘদিন ধরে জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগছিল । বাড়ির সামনের চিকিৎসককে দেখাতেই তিনি ধরে ফেলেন যে শিশুটির হৃদযন্ত্রে রয়েছে একাধিক সমস্যা । সেই চিকিৎসা করানোর জন্যই ছেলেকে নিয়ে বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন ওই দম্পতি ।

শিশুর বাবা বলেন, "সেখান থেকে রেফার করা হয় দিল্লিতে । তবে সেখানে না-গিয়ে নিজের রাজ্যেই ফিরে আসি । তখন আমরা যাই কলকাতার আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতাল বিএম বিড়লা হার্ট হাসপাতালে ।" সেখানে চিকিৎসক কুন্তল রায়চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিবার । একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায়, জটিল এক রোগে ভুগছে এই শিশুটি । চিকিৎসকের কথায়, এই ঘটনা অত্যন্ত বিরল । সারা পৃথিবীতে খুব কম শিশুর এই ধরনের সমস্যা হয় ।

কিন্তু কী হয়েছিল এই শিশুটির ?

কার্ডিয়াক সার্জেন কুন্তল রায়চৌধুরী বলেন, "আমাদের হৃদয়ের যা গঠন থাকে, ওর ক্ষেত্রে তা ঠিক বিপরীত এবং খুব জটিল । সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে ডানদিকের অলিন্দ যুক্ত থাকে ডানদিকের নিলয়ের সঙ্গে এবং সেটা যুক্ত থাকে ফুসফুসের সঙ্গে । ফুসফুস থেকে অক্সিজেন নিয়ে রক্ত বামদিকে যায় ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘কিন্তু এই শিশুটির ক্ষেত্রে তা ছিল বিপরীত । অর্থাৎ ওই শিশুটির ডানদিকের অলিন্দর সঙ্গে বাঁদিকের নিলয় যুক্ত ছিল । এর ফলে ডানদিকের অলিন্দ থেকে দূষিত রক্ত যাচ্ছে বাঁদিকের অলিন্দে । এবার সেটা আবার যুক্ত রয়েছে ফুসফুসের সঙ্গে ।’’ এক্ষেত্রে অক্সিজেনের সমস্যা হওয়ার কথা ৷ তবে ওই শিশুর অক্সিজেনের সমস্যা অবশ্য হচ্ছিল না ৷ হৃদযন্ত্রে অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল ৷ চিকিৎসার ভাষাতে এই সমস্যাকে বলা হয় Congenitally corrected Transposition of Great arteries (CCTGA) ৷

কিন্তু সমস্যা ছিল অন্য জায়গায় । ড. কুন্তল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাদের সকলের শরীরে বাঁদিকের যে নিলয়, সেটা সবথেকে বেশি শক্তিশালী এবং পেশীবহুল হয় । সেখানেই যুক্ত থাকে মহাধমনী । কিন্তু এই শিশুটার ক্ষেত্রে মহাধমনী ছিল ডান দিকের নিলয়ের সঙ্গে যুক্ত । এর ফলে ওর পাম্পিং চেম্বারে সমস্যা হচ্ছিল । তার পাশাপাশি ওর ডানদিকে যে ভালভ রয়েছে (ট্রাইকাস্পিড ভালভ) সেখানে ছিদ্র ছিল । যেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকবে এবং ডানদিকের নিলয় অকেজো হয়ে যাবে ৷ তখন হয়তো আর কিছু করার উপায় থাকবে না ।’’

তাছাড়া বাচ্চার হার্টের ফুটোর (Ventricular septal defect) সঙ্গে ফুসফুসের রাস্তা ছোট ছিল (পালমোনারি স্টেনোশিশ)। এই রোগ চিকিৎসকের কথায় অত্যন্ত বিরল । তারই অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা । এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে বলা হয় ‘ডাবল সুইচ সার্জারি’ অর্থাৎ সেনিং ও রাসটেলি । এর সঙ্গে ডিকেএস (ড্যামাস-কেয়-স্টানশেল) করা হয় । অর্থাৎ ডাবল সুইচ ও ডিকেএস সার্জারি, দু’টোই করা হয় ।‌

ড. কুন্তল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘পূর্বভারতে প্রথম এই সার্জারি করা হল । ওই হার্টের ফুটোকে কাজে লাগিয়ে আমরা ওর অস্ত্রোপচার করেছি । বাঁদিকের নিলয়ের সঙ্গে মহাধমনীকে যুক্ত করেছি । যেটা ওই ছিদ্রটাকে দিয়েই করা হয়েছে । কিন্তু আমরা সেখানে আরও একটা রাস্তা করেছি । অর্থাৎ মহাধমনীতে বাঁদিকের নিলয় যুক্ত হওয়ার জন্য ওর দু’টো রাস্তা রয়েছে । ও যখন বড় হবে, তখন আর ওই ছিদ্রটা বাড়বে না । সেই সময় যাতে রক্ত চলাচলে বাধা না হয়, তাই আরেকটা অতিরিক্ত পথ তৈরি করা মহাধমনীতে রক্ত যাওয়ার জন্য । এর সঙ্গেই সেনিং অপারেশন করে আমরা ডানদিকের অলিন্দের দূষিত রক্ত ডানদিকের নিলয়ের সঙ্গে যুক্ত করেছি ৷"

এই পুরো অস্ত্রোপচার করতে সময় লেগেছে প্রায় আট ঘণ্টার বেশি । এই অস্ত্রপ্রচারে কার্ডিয়াক সার্জেন ড. কুন্তল রায়চৌধুরী ছাড়াও ছিলেন পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিসট ড. শ্যামাজিৎ সমাদ্দার, পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক ইনটেনসিভিসট ড. শতরূপা মুখোপাধ্যায়, কার্ডিয়াক আন্যাসথেটিসট ড. প্রবীরকুমার দাস । ওই শিশুটির চিকিৎসা হওয়ার সময় হৃদযন্ত্রকে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়েছিল । সেই সময় ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের একটি মেশিনের সাহায্যে তাকে রাখা হয়েছিল । এইরকম অপারেশনের জন্য পারফিউশন এবং নার্সিং টিমের সকলের ভূমিকাই খুব গুরুত্বপূর্ণ ।

শিশুটির বাবা বলেন, "আমি পেশায় একটি বেসরকারি পেট্রল পাম্পে কাজ করি । শিশুসাথী কার্ডের সাহায্যে আমরা এই চিকিৎসা করিয়েছি বিনামূল্যে । 5 মে ওর অস্ত্রোপচার করা হয়। 27 মে ওকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়েছে । আমার ছেলে সম্পূর্ণ সুস্থ এখন । কোনও সমস্যা নেই ।" ড. কুন্তল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এইরকম অপারেশন আশা জাগায় ও প্রমাণ করে যে বাচ্চাদের হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বাইরে যাওয়ার দরকার নেই ।’’

আরও পড়ুন -

  1. মূত্রাশয়ে ক্যানসার! চিকিৎসায় নয়া প্রযুক্তির ব্যবহারে সুস্থ জীবনে ফিরেছেন বরুণ
  2. রাজ্যে প্রথম আসানসোলে জেলা স্তরের হাসপাতালে কৃত্রিম স্তন প্রতিস্থাপন, খরচ কত
  3. হৃদযন্ত্রের জটিল রোগে সারা শরীর নীল, 13 দিনের শিশুর সফল অস্ত্রোপচার শহরের হাসপাতালে
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.