কলকাতা, 21 জুন: বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে অনুষ্ঠান-বাড়ি ৷ বিয়ে-সহ নানা অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হয় বাড়িটি ৷ কিন্তু ভিতরে চলে বেআইনি অস্ত্র তৈরি ৷ এমন একটি কারখানার হদিশ পেয়েছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফ ৷ ওই কারখানায় তল্লাশি চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির অনেক সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ৷ গ্রেফতার করেছে দু’জনকে ৷
তাৎপর্যপূর্ণ হল, ঘটনাস্থল কলকাতা নয় ৷ এমনকী, পশ্চিমবঙ্গের কোনও জায়গাও নয় ৷ যে জায়গায় হানা দিয়ে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এই কারখানার হদিশ পেয়েছে, সেটা ঝাড়খণ্ডে ৷ ফলে কলকাতা পুলিশের এই সাফল্যে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে ৷
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে কীভাবে এল এই সাফল্য ? কলকাতা পুলিশের এসটিএফের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত নগরপাল ভি সলেমন নেশাকুমার বলেন, "ঝাড়খণ্ড, বিহার হয়ে এরাজ্যে আগ্নেয়াস্ত্র পাচার হয় । আমরা গোপন সূত্রের খবর পেয়ে ঝাড়খণ্ডের এটিএসের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালাই ৷’’

এসটিএফ সূত্রের খবর, গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে ঝাড়খণ্ডের বোকারোতে একটি বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারখানা চলছে । সেখানকার গান্ধিনগর এলাকায় একটি বিয়ের হল ভাড়া নিয়ে চালানো হচ্ছিল এই বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারখানা ৷ সেখানে শুক্রবার রাতে আচমকাই হানা দেয় কলকাতা পুলিশের এসটিএফের গোয়েন্দারা । হাতেনাতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয় ।
লালবাজার সূত্রের খবর, যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের নাম, কেশব কুমার ও প্রবীণ কুমার । তাঁরা মূলত বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারীদের সঙ্গে নিয়ে বাংলা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে আগ্নেয়াস্ত্র পাচার করতেন । তবে এই ঘটনায় জড়িত রয়েছেন আরও কয়েকজন ৷ তাঁরা আগেই ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যান ৷ তাঁদের খোঁজ করছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ ৷ এই ক্ষেত্রেও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে ঝাড়খণ্ডের এটিএসের ৷
এদিকে ঝাড়খণ্ডের ওই আগ্নেয়াস্ত্রের কারখানা থেকে উদ্ধার হয়েছে গুলি বানানোর মেশিন, আগ্নেয়াস্ত্রের বাট, প্রচুর লেদ মেশিন ৷ এছাড়াও উদ্ধার হয়েছে নগদ 10 হাজার টাকা । লালবাজার সূত্রের খবর, শেষ তিন বছরে এই নিয়ে মোট 18 বার কলকাতা পুলিশের এসটিএফ ঝাড়খণ্ডের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে ।