কলকাতা, 10 এপ্রিল: কসবার ডিআই অফিসে চাকরিহারাদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে যখন গোটা রাজ্য উত্তাল, তখনই ফের নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করল লালবাজার ৷ এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বিক্ষোভের ভিডিয়ো প্রকাশ করে তারা বোঝাতে চেয়েছে যে, সরকারি সম্পত্তি বাঁচাতে ও আত্মরক্ষার্থেই 'সামান্য বলপ্রয়োগ' করতে বাধ্য হয়েছে কলকাতা পুলিশ ৷
চাকরিহারা শিক্ষকদের উপর কেন লাঠি ও লাথি চালাল পুলিশ ? সোশাল মিডিয়াজুড়ে দিনভর ঘোরাঘুরি করছে এই একটাই প্রশ্ন ৷ এই অবস্থায় গতকালের পর ফের নিজেদের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করল লালবাজার ৷ তাঁরা আজ কয়েকটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছে তাদের ফেসবুকের পাতায় ৷ সেগুলিরই একটি ভিডিয়োতে এক বিক্ষোভকারীকে বলতে শোনা গিয়েছে, "পেট্রল দিয়ে জায়গাটা জ্বালিয়ে দাও ৷"
কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হয় যে, গতকাল বিনা প্ররোচনায় আগে এই অফিসে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের গায়ে হাত দেওয়া হয় এবং তাঁদের কাজে বাধা দান করতে থাকে বিক্ষোভকারীরা । ফলে সরকারি সম্পত্তি নষ্টের হাত থেকে বাঁচানো এবং নিজেদের কর্তব্যে অবিচল থাকায় পুলিশের তরফ থেকে বিক্ষোভকারীদের প্রতিহত করা হয়েছিল বলে দাবি লালবাজারের ।
ভিডিয়োর সঙ্গে কলকাতা পুলিশের তরফে লেখা হয়েছে, "কিছু অসাধু ব্যক্তি গুজব ছড়াচ্ছেন যে, কলকাতা পুলিশের পোস্ট করা ভিডিয়োগুলি নাকি গতকালের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত নয় । এ বিষয়ে স্পষ্ট করে জানানো হচ্ছে: শুধুমাত্র উপস্থাপনার স্বার্থে একাধিক ক্লিপ একত্র করে একটি ভিডিয়ো তৈরি করা হয়েছে । নীচে পৃথক ক্লিপগুলি দেওয়া হল, যার মধ্যে একটি ক্লিপে এক প্রতিবাদকারীকে 'পেট্রল দিয়ে জায়গাটা জ্বালিয়ে দাও' বলতে শোনা যাচ্ছে । এই ধরনের অবিরত আগ্রাসী আচরণের মুখোমুখি হয়ে, কলকাতা পুলিশ আত্মরক্ষার্থে সামান্য বলপ্রয়োগ করতে এবং উৎশৃঙ্খল ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করতে বাধ্য হয় ।"
গতকাল ঘটনার পরও কলকাতা পুলিশের তরফে একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হয় ৷ সেখানে বলা হয়, "আজ কসবা ডিআই অফিসের বাইরে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রেক্ষিতে স্পষ্টভাবে জানানো হচ্ছে যে, প্রথমে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা বিনা উস্কানিতে পুলিশকর্মীদের উপর হামলা চালায় এবং হিংসাত্মক আচরণ করে ৷ যার মধ্যে মহিলা পুলিশকর্মীরাও ছিলেন ৷ চারজন পুরুষ পুলিশকর্মী এবং দুইজন মহিলা পুলিশকর্মী আহত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং আরও ক্ষয়ক্ষতি ও আহতের ঘটনা রোধ করতে পুলিশ বাধ্য হয়ে হালকা বলপ্রয়োগ করে ৷ এই ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে ৷"
তবে গতকাল চাকরিহারাদের একজনকে এক পুলিশকর্মীর লাথি মারার ঘটনাকে সমর্থন করেননি নগরপাল মনোজ ভার্মা ৷ নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ভিডিয়োতে পুলিশকে দেখা যাচ্ছে একজনকে পা দিয়ে মারতে, এটা অভিপ্রেত নয় ৷