কলকাতা, 24 মার্চ: কলকাতা শহরে চলন্ত অটোর মধ্যে নাবালিকাকে যৌন হেনস্তা ! আর এই অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছিল ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ ৷ অভিযুক্ত অটোচালককে ধরতে প্রথমে সাহায্য নেওয়া হয় রাস্তার সিসিটিভি-র ৷ কিন্তু, যে এলাকার ঘটনা, সেখানে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চালককে গ্রেফতার করা অসম্ভব ছিল পুলিশের পক্ষে ৷ এ দিকে চালকের সঠিক বিবরণ না-পেয়েও সমস্যায় পড়ে পুলিশ ৷ অগত্যা তদন্তভার যায় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হাতে ৷ পুরনো স্কেচ-পদ্ধতির ব্যবহার করে অবশেষে তদন্তে সাফল্য মেলে ৷
লালবাজারের গোয়েন্দারা কথা বলেন নাবালিকার সঙ্গে ৷ তার কাছ থেকে অভিযুক্ত অটোচালককে কেমন দেখতে, তাঁর গড়ন, চেহারার গঠন, আকৃতি, ও কথা বলার ভঙ্গি ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা ৷ আর তাই দিয়ে অভিযুক্ত অটোচালকের সম্ভাব্য একটি স্কেচ তৈরি করে ফেলেন গোয়েন্দা বিভাগের চিত্রকর ৷ ব্যাস আর কী, সেই স্কেচের সাহায্যে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত অটোচালককে ৷
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহের মঙ্গলবার অর্থাৎ, 18 মার্চ বেহালার শীলপাড়া থেকে ঠাকুরপুকুর বাজারের অটোয় উঠেছিল ওই নাবালিকা ৷ অটোতে একাই ছিল সে ৷ অভিযোগ, সেই সময় নানা কুইঙ্গিত দিতে থাকেন অভিযুক্ত অটোচালক ৷ এরপরেই তাঁকে যৌন হেনস্তা করা হয় ৷ বাড়ি ফিরে বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানালে ঠাকুরপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷
এ নিয়ে কলকাতা পুলিশের ডিসি এসডব্লিউডি রাহুল দে বলেন, "এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ৷ গোয়েন্দা বাহিনীর লোকজন ওই অভিযুক্ত অটোচালকের স্কেচ বানিয়ে, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ৷ তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তের নাম এখনই সামনে আনছি না ৷"
তবে, স্মার্টফোন, এআই ও সিসিটিভি ক্যামেরার যুগে পুরনো দিনের এই পন্থা অবলম্বন করে সাফল্য পেলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা ৷ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "আগে অপরাধী কিংবা অভিযুক্তদের চেহারার বর্ণনা শুনে স্কেচ এঁকে দেওয়ার লোক প্রচুর ছিল ৷ তবে, এখন সেই লোকসংখ্যা অত্যন্ত কম ৷ জেলা পুলিশে এই বিভাগে লোক কার্যত নেই বললেই চলে ৷ তা-ও লালবাজারে হাতেগোনা কয়েকজন রয়েছেন ৷ বর্তমানে সিসিটিভি ক্যামেরা থেকেই অভিযুক্তদের চেহারা হুবহু হাতে চলে আসায় শনাক্ত করা মুশকিল হয় না ৷ তবে, এখানে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া মুশকিল ছিল ৷ এই সমস্ত জায়গায় অভিযুক্তদের স্কেচ করে পাকড়াও করা একমাত্র উপায় ৷"