কলকাতা, 25 এপ্রিল: বছরের পর বছর ঘুরছেন বরো থেকে হেড অফিস । হয়রানির শেষ নেই ৷ তবু বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মিউটেশন হচ্ছে না । ফাইল পড়ে ঠান্ডা ঘরে । এমনই অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায় ৷ অথচ এই মিউটেশন করলে আদপে আয় বাড়ে কলকাতা কর্পোরেশনের । তবু এই করুন ছবি শহরজুড়ে ।
এবার এই ছবি বদলে বিশেষ তৎপর কলকাতা পুরনিগমের সম্পত্তি কর মূল্যায়ন বিভাগের কর্তারা । ওয়ার্ডভিত্তিক তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছে ইন্সপেক্টরের কাছ থেকে । কোথায়, কত দিন ধরে, কতগুলো মিউটেশন ফাইল আটকে আছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছে ।
একই সঙ্গে কঠোর নির্দেশ, বকেয়া মিউটেশন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে ফাইল ছাড়তে হবে । সমস্ত ওয়ার্ডের রিপোর্ট পাঠাতে হবে বিভাগের উচ্চতর কর্তার কাছে । তিনি রিপোর্ট দেবেন পুর-কমিশনারকে । পাশাপশি শুরু হচ্ছে আন-অ্যাসেস সম্পত্তি অ্যাসেমেন্টার আওতায় আনার জন্য বিভিন্ন এলাকায় শিবির করতে হবে ।
মিউটেশন নিয়ে নাগরিক হয়রানি নতুন নয় । তবে বছরের পর বছর কেটে গেলেও সেই হয়রানির ছবি বিন্দুমাত্র বদল আসেনি । সম্প্রতি সম্পত্তি কর মূল্যায়ন বিভাগের সমস্তস্তরের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম । সেখানেই তিনি বলেছিলেন, ‘‘মিউটেশন ফাইল ফেলে রাখবেন না, দ্রুত ছেড়ে দিন । সমস্যা বোঝানোর জন্য কর্মীদের কাছে পৌর কমিশনার বলেছিলেন মিউটেশন ফেলে রাখবেন না দীর্ঘ সময় নাগরিক হয়রানি আমাদের কাছে লজ্জার বিষয় । এর পরেই বিভাগীয় কর্তারা তৎপর হন ।’’
এর পরই কর্তাদের তরফে প্রতিটি ইউনিটে ও ওয়ার্ডে নির্দেশ যায়, দ্রুত বকেয়া থাকা মিউটেশনের তালিকা তৈরি করার । গুরুত্বের সঙ্গে সেই ফাইলের মীমাংসা করে ফাইল ছেড়ে দেওয়ার । এদিকে ঠান্ডা ঘরে পরে থাকা ফাইল যেমন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন তেমনই মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশ মতো শুরু হচ্ছে সংযুক্ত এলাকা-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় অ্যাসেসমেন্ট ক্যাম্প । যে সমস্ত বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি এখনও মূল্যায়নের বাইরে, সেগুলো দ্রুত মূল্যায়ন করে ফেলতে হবে ।
গার্ডেনরিচ, যাদবপুর, জোকা, টালিগঞ্জ, উত্তর কলকাতা, দক্ষিণ কলকাতার মতো একাধিক অ্যাসেসমেন্ট ইউনিট এখন সক্রিয় । খোঁজ শুরু করাতে দেখা যাচ্ছে, এক একটি ইউনিটে প্রায় 200-র বেশি মিউটেশন আবেদন করা ফাইল পড়ে আছে । কোথাও সংখ্যাটা আরও বেশি । যদিও দ্রুত এই ফাইলগুলি নাড়াচাড়া শুরু করার চেষ্টা করছে অ্যাসেসমেন্ট বিভাগ ।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা কর্পোরেশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এক দিকে আন-অ্যাসেস সম্পত্তি অ্যাসেসমেন্ট করা ও অন্যদিকে পড়ে থাকা মিউটেশনের করে ফেলা এই দুয়ের মধ্যে দিয়েই বিপুল টাকা রাজস্ব কোষাগারে আনতে চাইছে কর্তৃপক্ষ । এখন প্রতিদিন প্রতি ওয়ার্ডে 10-12টি মিউটেশন ফাইল দেখা হয়। এই সংখ্যাটা আরও বাড়বে ।