কলকাতা, 15 মে: শহরে ক্রমশ কমেছে সবুজের আচ্ছাদন । নগরোন্নয়নের জেরে মাথা তুলেছে বহুতল । পরিবেশ রক্ষায় এবার সবুজায়নের পক্ষেই জোর দিচ্ছে কলকাতা পুরনিগম কর্তৃপক্ষ । সূত্রের খবর, তার জন্য গাছ লাগানো নিয়ে বদল হতে পারে বিল্ডিং বিভাগের বেশ কিছু নিয়ম । এই নিয়ে প্রস্তাব জমা পড়েছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে ।
প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরনিগমের বিল্ডিং নিয়ম 2009 অনুসারে, 16 হাজার বর্গমিটার ফ্লোর এরিয়া যুক্ত নির্মাণে 15 শতাংশ জায়গায় বাধ্যতামূলকভাবে গাছ লাগাতে হবে । তবে এতে বলা নেই এই গাছ নির্মাণস্থলের কোথায় লাগাতে হবে । একইভাবে 6 হাজার বর্গমিটার ফ্লোর এরিয়ার কম নির্মাণস্থলের ক্ষেত্রে 2 মিটার জায়গায় বাধ্যতামূলকভাবে গাছ লাগাতে হবে বলা আছে নিয়মে । তবে জলাশয় জায়গায় গাছ লাগানো নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা । বর্তমানে গাছ লাগানো নিয়ে যে প্রস্তাব কলকাতা পুরনিগম বিল্ডিং বিভাগের তরফে পুর কমিশনারের কাছে জমা হয়েছে এবং পরবর্তী সময় রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে অনুমোদনের জন্য গিয়েছে, তাতে এই সমস্ত সমস্যার সুরাহা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ।
পুরনিগম সূত্রে খবর, প্রস্তাবিত খসড়ায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, কোনও প্রকল্পে যদি মোট 10 শতাংশ জলাশয় থাকে বা বেশি জায়গা নিয়ে থাকে, তাহলে সেই জলাশয়ের ধারে গাছ লাগালে একমাত্র সেটা ট্রি কভার এরিয়া হিসেবে গণ্য হবে পুরনিগমের কাছে । তবে সুইমিং পুল কোনোভাবেই জলাশয় হিসেবে গণ্য হবে না । তার ধারে গাছ লাগালে ট্রি কভার এরিয়া হিসেবে বিবেচিত হবে না ।
6 হাজার বর্গমিটারের বেশি নির্মাণস্থলের 15 শতাংশ সবুজ রাখতে হবে । কিন্তু এতদিন নির্মাণস্থলের কোন জায়গায় গাছ লাগানো হবে, সেটা নির্দিষ্ট না করায় নির্মণকারীরা এর সুযোগ নিয়েছে । কেউ বারান্দায়, কেউ টেরিসের নিচে অল্প বিস্তর, আবার কেউ ছাদে গাছ রেখে সেই শর্ত পূরণ করেছে বলে দেখিয়ে দিত । তবে নয়া প্রস্তাবে স্পষ্ট বলা হয়েছে, এসব আর গণ্য করা হবে না । গাছ লাগানোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা করতে হবে, যাকে কলকাতা পুরনিগমের পরিভাষায় ভার্জিন ল্যান্ড বলা হচ্ছে । যেটা নির্মাণবিহীন জমি । ছাদ বা বারান্দার নিচে আর গাছ লাগানো যাবে না । কোনোভাবে গাছের উপর স্থায়ী বা অস্থায়ী ছাউনি থাকলে সেটা ট্রি কভার এরিয়া হিসেবে গণ্য হবে না ।
এই বিষয় কলকাতা পুরনিগমের এক আধিকারিক বলেন, "শহরের সবুজ রক্ষায় 2009 বিল্ডিং নিয়মে কিছু পরিবর্তন ও সংযোজন হবে । সেই খসড়া প্রস্তাব রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠানো হয়েছে । তাতে বলা আছে, নিয়ম মেনে গাছ লাগানো শুধু নয়, ভবিষ্যতে তার রক্ষণাবেক্ষণের পরিকল্পনা পুর কমিশনারের কাছে জমা করতে হবে । নির্মাণ শেষে যদি সেই নিয়ম কোথাও লঙ্ঘন হয়, তাহলে কমপ্লেশন সার্টিফিকেট বা সিসি দেওয়া হবে না ।"