কলকাতা, 9 এপ্রিল: গার্ডেনরিচের ঘটনার পর বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ কলকাতা পৌরনিগম ৷ তাই বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হল পৌরনিগমের পক্ষ থেকে ৷ পৌরনিগমের হুঁশিয়ারিতে কান না দিলে আইন মেনে পুলিশের সাহায্য নেওয়ার বিষয়েও ভাবনাচিন্তাও শুরু হয়েছে ৷
কলকাতা পৌরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগরি মার্কেটের উলটোদিকেই সিনাগগ স্ট্রিট । 5 নম্বর সিনাগগ স্ট্রিটের দু’টি বহুতলের মাঝে যেখানে ফায়ার এক্সিট, সেই জায়গা ঢেকে দেওয়া হয়েছে টিন দিয়ে ৷ চলছে বেআইনি নির্মাণ ৷ বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্য়ামেরা ৷ নিচের ওই অংশে ছোট ছোট স্টল করে দোকান বিক্রি হচ্ছে ৷ যার প্রতি বর্গ ফুটের দাম প্রায় লক্ষাধিক টাকা ।
বিষয়টি প্রথমে নজরে আসে 45 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের ৷ তিনি কলকাতা পৌরনিগমের বিল্ডিং বিভাগে বিষয়টি জানান ৷ তার পরেই তৎপর হয় কলকাতা পৌরনিগম । ইঞ্জিনিয়াররা পৌঁছে কলকাতা কর্পোরেশন ওয়ার্ড ডায়েরি অ্যাপের মাধ্যমে লগবুকে তথ্য নথিভুক্ত করেন । ওই নির্মাণ বন্ধে পৌর আইনের 401 ধারায় নোটিশ দেওয়া হয় ৷
পৌরনিগমের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশ কোনও ধরনের বেআইনি নির্মাণ রেয়াত করা হবে না । আমরা অভিযোগ পাওয়া মাত্র একদম অ্যাপ মারফত সব তথ্য সংগ্রহ করে নোটিশ পাঠিয়েছি । নোটিশ তোয়াক্কা না করলে আইন মাফিক ব্যবস্থা নেব । আপৎকালীন পথ এই ভাবে দোকান বসানো বা বিক্রি করা যায় না । আগুন লাগলে মর্মান্তিক পরিণতি হবে ।’’
ওই দু’টি ভবনের একাধিক অফিসে কয়েকশো কর্মী প্রতিদিন কাজ করেন । এর থেকে স্পষ্ট কেন পৌরনিগমের ওই আধিকারিক মর্মান্তিক পরিণতির কথা বলেছেন ৷ প্রশ্ন উঠছে, কিভাবে নজর এড়িয়ে গেল পুলিশ-প্রশাসনের ? সূত্রের খবর যে ঠিকাদার কাজ করছেন, তিনি শাসক দলের এক নেতার ঘনিষ্ঠ ৷ তাহলে কি শাসক দলের ওই নেতার মদতে এই বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে ?
তবে এই বেআইনি নির্মাণ আজকের নয় ৷ এক দশকের বেশি সময় আগে এই নিয়ে একবার হইচই হয়েছিল ৷ 2012 সালে নোটিশ দেওয়া হয় কাজ বন্ধের । এর পর বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত ৷ আদালতের রায়ে 2016 নির্মাণ কাজ বন্ধ করা ও বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হয় । তার পর আবার কাজ শুরু হয়েছে ৷ সেই কারণেই প্রশ্ন উঠছে, এবারও পৌরনিগমের নোটিশে কাজ হবে তো ?
পৌরনিগমের একটি সূত্রের খবর, গার্ডেনরিচের ঘটনার পর বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া হয়েছে । মেয়র ইঞ্জিনিয়রদের অভয় দিয়েছেন কোনও ধরনের চাপের মুখে নতিস্বীকার নয় । পাশাপশি ঝুঁকি থাকলে তাঁকে জানাতে । তাই অনেকের মতে এবার হয়তো বন্ধ করা যাবে এই বেআইনি নির্মাণ ৷
আরও পড়ুন: