ETV Bharat / state

সিএবি বনাম কেএমসি: 29 বছর আগের বিজ্ঞাপন-কর মামলায় হার, মন্তব্যে নারাজ মেয়র পারিষদ - KMC LOSES TAX CASE

কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের কপি হাতে না-পেয়ে মন্তব্য নারাজ কেএমসি’র মেয়র পারিষদ বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় ৷

KMC LOSES TAX CASE
29 বছর আগের বিজ্ঞাপন-কর মামলায় সিএবি’র কাছে হার কেএমসি’র ৷ (ফাইল ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : June 21, 2025 at 8:19 PM IST

4 Min Read

কলকাতা, 21 জুন: ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল বনাম কলকাতা পুরনিগমের 29 বছরের পুরনো মামলার নিষ্পত্তি হল ৷ আর সেই মামলায় হারল কর্পোরেশন ৷ 1996 সালের বিশ্বকাপ ম্যাচের বিজ্ঞাপনী কর সংক্রান্ত মামলায় হেরেছে কেএমসি ৷ কর বাবদ 51 লক্ষ টাকার দাবিতে পুরনিগমের সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৷

বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁদের নির্দেশে বলেন, "ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামের ভিতরের অংশ কোনও পাবলিক প্লেস নয় ৷ লোকজন সেখানে টিকিট কেটে খেলা দেখতে আসেন ৷ ফলে কলকাতা পুরনিগমের আইনের 204 নম্বর ধারা এক্ষেত্রে লাগু করা যায় না ৷ ফলে পুরনিগম যে কর দাবি করেছে, তা আইনের চোখে সঠিক নয় ৷ পাশাপাশি, ইডেন গার্ডেন্সের জমি কেন্দ্রীয় সরকারের ৷ এই পরিপ্রেক্ষিতে ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের আগের দেওয়া নির্দেশের উপর হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে না ৷"

উল্লেখ্য, 1996 সালে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করেছিল সিএবি । কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের 1996 সালের 11 ফেব্রুয়ারি বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ এরপরে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলা হয়েছিল ওই বছরেরই 13 মার্চ ৷ ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামের ভিতরে এবং বাইরে প্রচুর বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং ও ব্যানার লাগানো হয়েছিল ৷ যার জন্য 1996 সালের 27 মার্চ কলকাতা পুরনিগম সিএবি-র কাছে মোট 51 লক্ষ 18 হাজার 450 টাকা কর বাবদ দাবি করে ৷ 1980 সালের কলকাতা পুরনিগম আইনের 204 নম্বর ধারায় এই কর দাবি করা হয়েছিল ৷ যে আইন অনুযায়ী, পাবলিক প্লেসে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য কর দাবি করা হয়েছিল পুরনিগমের তরফে ৷

তৎকালীন সিএবি সভাপতি এবং সচিব কেএমসি’র এই দাবিকে অনায্য মনে করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ৷ তাঁদের এই দাবির পিছনে যুক্তি ছিল- প্রথমত, বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল স্টেডিয়ামের ভিতরে, সেটা কোনও পাবলিক প্লেস নয় ৷ বাইরে থেকে ওই স্থান দেখা যায় না ৷ ফলে 1980 সালের কেএমসি’র আইনের 204 ধারা এক্ষেত্রে লাগু করা যায় না ৷

দ্বিতীয়ত, কলকাতা পুরনিগম একতরফা ভাবে সিএবি’র বক্তব্য না-শুনে এই কর চাপিয়েছিল ৷ যা স্বাভাবিক ন্যায়ের পরিপন্থী হিসেবে অভিযোগ করেছিল সিএবি ৷ কিসের ভিত্তিতে এই পরিমাণ অর্থ চাওয়া হল, তাও জানানো হয়নি ৷ তৃতীয়ত, ভারতীয় সংবিধানের 285 নম্বর ধারা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকার ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামের মালিক ৷ কলকাতা পুরনিগম তার উপরে কর চাপাতে পারে না ৷

কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন সিঙ্গল বিচারপতির বেঞ্চ 1997 সালের 27 মার্চ কলকাতা পুরনিগমের বিজ্ঞাপনী করের দাবি খারিজ করে দেয় ৷ কিন্তু, কলকাতা পুরনিগম কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে ৷ 29 বছর পর সেই আপিল মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে ৷ যেখানে সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ ৷

সিএবি-র কর মামলায় হাইকোর্টে ধাক্কার বিষয়ে কলকাতা পুরনিগমের আইন বিভাগের মেয়র পারিষদ তথা আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এখনও আদালতের রায়ের কপি আমার হাতে আসেনি ৷ সেই কপি হাতে এলে আমাদের বিভাগের আধিকারিকরা খতিয়ে দেখবে ৷ অবশ্যই কলকাতা পুরনিগম তার আইন মেনেই সিএবি-র কাছে কর আদায়ের দাবি করেছিল ৷ সিএবি একটি সংস্থা, তারাও দেয়নি হয়তো কোনও কারণে ৷ কাগজপত্র হাতে এলে বোঝা যাবে ঠিক কী কারণে এই কর আদায় করা গেল না ও আদালতে মামলায় পরাজয় ঠিক কোন জায়গায়, কেন হল ৷ সেই জায়গাটাই আমরা আলোচনার মধ্যে দিয়ে খুঁজে বার করব ৷ আর 1996-এর বিশ্বকাপের সময়ে আমাদের বোর্ড ছিল না, তখন বামেদের পুরো বোর্ড ছিল ৷ তাই সেই সময়কার কাগজপত্রগুলি বের করে খতিয়ে দেখতে হবে ৷ তবেই নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা যেতে পারে ৷"

কলকাতা, 21 জুন: ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল বনাম কলকাতা পুরনিগমের 29 বছরের পুরনো মামলার নিষ্পত্তি হল ৷ আর সেই মামলায় হারল কর্পোরেশন ৷ 1996 সালের বিশ্বকাপ ম্যাচের বিজ্ঞাপনী কর সংক্রান্ত মামলায় হেরেছে কেএমসি ৷ কর বাবদ 51 লক্ষ টাকার দাবিতে পুরনিগমের সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৷

বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁদের নির্দেশে বলেন, "ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামের ভিতরের অংশ কোনও পাবলিক প্লেস নয় ৷ লোকজন সেখানে টিকিট কেটে খেলা দেখতে আসেন ৷ ফলে কলকাতা পুরনিগমের আইনের 204 নম্বর ধারা এক্ষেত্রে লাগু করা যায় না ৷ ফলে পুরনিগম যে কর দাবি করেছে, তা আইনের চোখে সঠিক নয় ৷ পাশাপাশি, ইডেন গার্ডেন্সের জমি কেন্দ্রীয় সরকারের ৷ এই পরিপ্রেক্ষিতে ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের আগের দেওয়া নির্দেশের উপর হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে না ৷"

উল্লেখ্য, 1996 সালে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করেছিল সিএবি । কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের 1996 সালের 11 ফেব্রুয়ারি বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ এরপরে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলা হয়েছিল ওই বছরেরই 13 মার্চ ৷ ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামের ভিতরে এবং বাইরে প্রচুর বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং ও ব্যানার লাগানো হয়েছিল ৷ যার জন্য 1996 সালের 27 মার্চ কলকাতা পুরনিগম সিএবি-র কাছে মোট 51 লক্ষ 18 হাজার 450 টাকা কর বাবদ দাবি করে ৷ 1980 সালের কলকাতা পুরনিগম আইনের 204 নম্বর ধারায় এই কর দাবি করা হয়েছিল ৷ যে আইন অনুযায়ী, পাবলিক প্লেসে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য কর দাবি করা হয়েছিল পুরনিগমের তরফে ৷

তৎকালীন সিএবি সভাপতি এবং সচিব কেএমসি’র এই দাবিকে অনায্য মনে করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ৷ তাঁদের এই দাবির পিছনে যুক্তি ছিল- প্রথমত, বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল স্টেডিয়ামের ভিতরে, সেটা কোনও পাবলিক প্লেস নয় ৷ বাইরে থেকে ওই স্থান দেখা যায় না ৷ ফলে 1980 সালের কেএমসি’র আইনের 204 ধারা এক্ষেত্রে লাগু করা যায় না ৷

দ্বিতীয়ত, কলকাতা পুরনিগম একতরফা ভাবে সিএবি’র বক্তব্য না-শুনে এই কর চাপিয়েছিল ৷ যা স্বাভাবিক ন্যায়ের পরিপন্থী হিসেবে অভিযোগ করেছিল সিএবি ৷ কিসের ভিত্তিতে এই পরিমাণ অর্থ চাওয়া হল, তাও জানানো হয়নি ৷ তৃতীয়ত, ভারতীয় সংবিধানের 285 নম্বর ধারা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকার ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামের মালিক ৷ কলকাতা পুরনিগম তার উপরে কর চাপাতে পারে না ৷

কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন সিঙ্গল বিচারপতির বেঞ্চ 1997 সালের 27 মার্চ কলকাতা পুরনিগমের বিজ্ঞাপনী করের দাবি খারিজ করে দেয় ৷ কিন্তু, কলকাতা পুরনিগম কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে ৷ 29 বছর পর সেই আপিল মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে ৷ যেখানে সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ ৷

সিএবি-র কর মামলায় হাইকোর্টে ধাক্কার বিষয়ে কলকাতা পুরনিগমের আইন বিভাগের মেয়র পারিষদ তথা আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এখনও আদালতের রায়ের কপি আমার হাতে আসেনি ৷ সেই কপি হাতে এলে আমাদের বিভাগের আধিকারিকরা খতিয়ে দেখবে ৷ অবশ্যই কলকাতা পুরনিগম তার আইন মেনেই সিএবি-র কাছে কর আদায়ের দাবি করেছিল ৷ সিএবি একটি সংস্থা, তারাও দেয়নি হয়তো কোনও কারণে ৷ কাগজপত্র হাতে এলে বোঝা যাবে ঠিক কী কারণে এই কর আদায় করা গেল না ও আদালতে মামলায় পরাজয় ঠিক কোন জায়গায়, কেন হল ৷ সেই জায়গাটাই আমরা আলোচনার মধ্যে দিয়ে খুঁজে বার করব ৷ আর 1996-এর বিশ্বকাপের সময়ে আমাদের বোর্ড ছিল না, তখন বামেদের পুরো বোর্ড ছিল ৷ তাই সেই সময়কার কাগজপত্রগুলি বের করে খতিয়ে দেখতে হবে ৷ তবেই নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা যেতে পারে ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.