কলকাতা, 27 এপ্রিল: কলকাতায় সম্পত্তি করদাতার সংখ্যা 9 লাখেরও বেশি । তবে হাতেগোনা 1500 করদাতার কাছেই কলকাতা পুরনিগম সম্পত্তি কর বাবদ পাবে প্রায় 3500 কোটি টাকা । বছরের পর বছর কর না দিয়ে সুদ-আসল ও জরিমানা মিলিয়ে বকেয়ার পরিমাণ এই অঙ্কে গিয়ে পৌঁছেছে । ফলে আর রেয়াত নয়, এবার এই বিপুল টাকা আদায় করতে অভিযানে নামছে পুরনিগমের সম্পত্তি কর মূল্যায়ন বিভাগ ।
কলকাতা পুরনিগম সূত্রে খবর, এর জন্য প্রতি ডিভিশন ভিত্তিক তৈরি হচ্ছে বিশেষ দল । কিছুদিন আগেই কলকাতার টাউন হলে সম্পত্তি কর বিভাগের বিরাট সভা হয়। সেখানে মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও কমিশনার ধবল জৈন দফতরের সমস্যা শোনেন ৷ পাশাপাশি আয় বৃদ্ধির দিকে গুরুত্ব দেন । এর পরেই পদক্ষেপ নেয় সম্পত্তি কর মূল্যায়ন বিভাগ । প্রতিটি ডিভিশন 50 লাখ থেকে এক কোটি টাকা বকেয়া রেখেছেন এবং এক কোটি টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে, এমন করদাতাদের আলাদা আলাদা তালিকা ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে ।
জানা গিয়েছে, মূলত কলকাতার বিত্তশালী নাগরিকরাই এই বিপুল অঙ্কের কর বছরের পর বছর ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন। কমবেশি 700 জন করদাতা আছেন, যাঁদের বকেয়া কর সুদ আসল ও জরিমানা-সহ পৌঁছে গিয়েছে এক কোটি টাকারও বেশি । এই 700 জনের থেকে বকেয়া করের আসল পরিমাণ 1100 কোটি টাকা । সুদ ও জরিমানা ধরে অঙ্কটা প্রায় 2900 কোটি টাকা ।
ঠিক সেইভাবেই দ্বিতীয় তালিকায় থাকা করদাতাদের বকেয়ার পরিমাণ 50 লাখ থেকে এক কোটি টাকা ৷ এমন করদাতার সংখ্যা প্রায় 800 জন । এদের কাছে বকেয়া করের পরিমাণ 250 কোটি টাকা । সুদ ও জরিমানা ধরলে অঙ্ক গিয়ে দাঁড়ায় 600 কোটি টাকা । এই বিত্তবান করদাতাদের ধরে ধরে বকেয়া আদায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে সম্পত্তি কর মূল্যায়ন বিভাগ । প্রয়োজনে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে জানা গিয়েছে ।
এই বিষয় কলকাতা পুরনিগমের এক আধিকারিক বলেন, "মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই বকেয়া কর নিয়ে আলোচনা করেছেন । গত অর্থবর্ষে তার আগের অর্থবর্ষের তুলনায় 50 কোটি টাকার বেশি কর আদায় হয়েছে । এর সিংহভাগ নিয়মিত করদাতা । কিন্তু এসবের বাইরে বিরাট পরিমাণ টাকা বছরের পর বছর কর ফাঁকি দিয়ে ফেলে রেখেছেন মুষ্টিমেয় কিছু নাগরিক । সেই টাকার অঙ্ক 3500 কোটির বেশি । ফলে সম্পূর্ণ এই বকেয়া আদায় সম্ভব না হলেও সিংহভাগ আদায় করার জন্য যা যা পদক্ষেপ আইন মেনে নিতে হয়, সেই পদক্ষেপ নেওয়ার সবুজ সঙ্কেত পেয়েছি আমরা ।"
তিনি আরও বলেন, "তালিকা তৈরির সঙ্গেই প্রতি ডিভিশনে বিশেষ টিম তৈরি করতে বলেছি । নেতৃত্ব দেবেন ডেপুটি ম্যানেজাররা । শুরু হবে লাগাতার অভিযান । লক্ষ্য একটাই, বকেয়া আদায় করা । এই সব করদাতাদের আর কোনও রেয়াত করা হবে না । চলতি অর্থবর্ষ জুড়ে চলবে এই অভিযান । ফলে গত অর্থবর্ষে যে লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়েছি এবার তার থেকে বেশ অনেকটা এগিয়ে যাব বলে আশা করছি ।"