আলিপুরদুয়ার, 24 মার্চ: উত্তরবঙ্গে চা-বাগানের জনবসতি এলাকায় বহু সময় নানা অভাব-অভিযোগ উঠে আসে ৷ কখনও পানীয় জল, তো কখনও রাস্তাঘাট ও বিদ্যুৎ পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে ৷ এবার সেই সব অভিযোগগুলি সরাসরি গ্রামবাসীদের মুখ থেকে শুনতে বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে আলিপুরদুয়ারের জেলা প্রশাসন ৷ জেলাশাসকের দফতরের উদ্যোগে চা-বাগান এলাকায় শুরু করা হয়েছে 'খেলব মাইয়া' ৷
কী এই 'খেলব মাইয়া' ?
'খেলব মাইয়া' জেলা প্রশাসনের নিজস্ব একটি কর্মসূচি ৷ যেখানে চা-বাগানের বাসিন্দারা বিশেষত, মহিলা এবং বাচ্চারা নানারকম খেলাধুলোয় অংশ নিতে পারবেন ৷ খেলার মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করে, তাঁদের নানা সমস্যার কথা জানার চেষ্টা করলেন আধিকারিকরা ৷ যেখানে উপস্থিত থাকছেন খোদ আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক আর বিমলা ৷
এর আগে সফলভাবে মোট আটটি চা-বাগান এলাকায় 'খেলব মাইয়া' কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে ৷ ন’নম্বর তালিকায় ছিল কালচিনি ব্লকের সেন্ট্রাল ডুয়ার্স চা বাগান ৷ সেখানকার পঞ্চবীড় হিন্দি হাইস্কুলের মাঠে 'খেলব মাইয়া' আয়োজন করা হয় ৷ উল্লেখ্য, এই গ্রামটি থেকে প্রতিবেশী ভূটান সীমান্ত মাত্র 500 মিটার দূরে অবস্থিত ৷
জেলাশাসক আর বিমলা বলেন, "চা-বাগান এলাকার মহিলারা সহজে নিজেদের সমস্যার কথা সবার সামনে বলেন না ৷ বললেও, তা পুরোপরি প্রকাশ করেন না ৷ তাই তাঁদের জন্য একটা সহজ পরিবেশ গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে ৷ সেই উদ্দেশ্যে আলিপুরদুয়ারের চা-বাগান সংলগ্ন জনবসতিতে আমরা 'খেলব মাইয়া' কর্মসূচি নিয়েছি ৷ সেখানে নানারকমের খেলাধুলোয় অংশ নিচ্ছেন মহিলা থেকে বাচ্চারা ৷ অনেক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর লোকজন নিজেদের স্টল দিয়েছেন ৷ খেলাধুলোর মাধ্যমে আমরা তাঁদের সমস্যার কথা জানার চেষ্টা করছি ৷ যেমন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্য সাথীর মতো বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তাঁরা পাচ্ছেন কি না, রেশন পেতে সমস্যা হচ্ছে কি না, পানীয় জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবায় অসুবিধা রয়েছে কি না, সব জানার চেষ্টা করছি ৷"

জেলাশাসক বলেন, "আমরা এর আগে মোট আটটি ক্যাম্প করেছি ৷ সবক’টি সফল হয়েছে ৷ এখানেও সবাই না-হলেও, কিছু মহিলা সমস্যার কথা জানিয়েছেন ৷ যেমন পানীয় জলের সমস্যা, রাস্তার সমস্যা ও কয়েকজন জানিয়েছেন বিদ্যুতের বিল বেশি আসছে ৷ পানীয় জলের সমস্যার সমাধান পিএইচই করবে ৷ রাস্তা ও বিদ্যুতের বিলের সমস্যা মেটাতে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবেন ৷"

উল্লেখ্য, 'খেলব মাইয়া' কর্মসূচিতে খেলাধুলোর পাশাপাশি জয়ীদের পুরস্কারও দেওয়া হয় জেলা প্রশাসনের তরফে ৷ যেখানে নিত্য নৈমিত্তিক সাংসারিক নানা জিনিস যেমন, চাল, ডাল, তেল পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় ৷ বাচ্চাদের জন্য নানান খাবারের ব্যবস্থা ছিল খেলার পাশাপাশি ৷
