কলকাতা, 13 মে: ইতিমধ্যেই ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা হয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, গতকালই ঘোষণা করেছেন যে অপারেশন সিঁদুরকে আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে। যদি আগামী দিনে দেখা যায় যে পাকিস্তান সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নিয়ে তাতে মদত যোগানোর কাজ করছে, সে ক্ষেত্রে এ ধরনের অপারেশন আবার হতে পারে। খুব স্বাভাবিকভাবেই আপাতত যুদ্ধ পরিস্থিতি শান্ত হলেও বিভিন্ন রাজ্যগুলিকে প্রস্তুতি নিয়ে যে নির্দেশিকা দিয়েছিল তা নিয়ে দ্বিতীয় কোনও নির্দেশিকা এখনও পর্যন্ত রাজ্যগুলির কাছে আসেনি। এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কোনও খামতি রাখতে চাইছে না। বিশেষ করে, আপৎকালীন ব্যবস্থা সংক্রান্ত যে নির্দেশাবলী বিগত কয়েকদিন ধরে চালু ছিল তাও কোনওভাবে এখনই বন্ধ করে দিতে চাইছে না রাজ্য।
রাজ্য সরকারের শীর্ষ আধিকারিক, এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জানিয়েছেন, "রাজ্য সরকারের তরফ থেকে প্রস্তুতি ক্ষেত্রে কোনও খামতি রাখতে চাইছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে কোনও নির্দেশ না আসবে, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কেন্দ্রীয় নির্দেশ মেনেই সব ধরনের প্রস্তুতি জারি থাকবে।"
মূলত, এই নীতিকে সামনে রেখেই গত রবিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ তাঁর মতো করে সমস্ত প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন। কেন্দ্রীয় নির্দেশ মেনে আগামী তিন মাসের জন্য খাদ্যদ্রব্য সঞ্চয় রাখার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। তবে বিষয়টি শুধু খাদ্যদ্রব্য সঞ্চয়ের উপরই থেমে থাকছে না। নবান্ন সূত্রে যতদূর জানা যাচ্ছে, তাতে 1971 সালের শেষবার ব্যবহৃত হওয়া রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা সাইরেনগুলিকে আরও একবার কার্যকরী গড়ে তুলতে তৎপর হয়ে উঠেছে রাজ্য প্রশাসন।
রাজ্য প্রশাসনের সূত্র অনুযায়ী, এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী শহর কলকাতায় 95টি এই ধরনের সাইরেন রয়েছে। রাজ্য প্রশাসন তদন্ত করে দেখেছে, শহর কলকাতাতে হাতেগোনা সাইরেন এই মুহূর্তে চালু রয়েছে। আর জেলা ধরলে এই সংখ্যাটা কিছুটা বাড়লেও তবে আশ্বাস পাওয়া যেতে পারে এমনটা নয়। প্রসঙ্গত, গত 7 তারিখ থেকে যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল সেটিকে জারি রেখে আগামী এক মাসের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত সাইরেন যেগুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সেগুলি ঠিক করে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ, প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কোনও গাফিলতি সহ্য করা হবে না সেই জায়গা থেকে। হাসপাতাল ও অন্যান্য প্রস্তুতিও পূর্ব ঘোষণা মতোই রয়েছে। তবে প্রশাসনের একটা সূত্র বলছে, গত ৭ তারিখ থেকে এখনও পর্যন্ত যে গতিতে সাইরেন-সহ সমস্ত পরিকাঠামো প্রস্তুত করার উপর জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার তাতেই আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সবটাই রেডি হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য যে সাইরেনগুলিকে নিয়ে এত আলোচনা সেগুলি 71-এর যুদ্ধের পর দীর্ঘদিন অবব্যবহারের কারণে অধিকাংশই অচল। এই মুহূর্তে ইঞ্জিনিয়ারদের ডেকে সেগুলিকে সক্রিয় করার প্রয়াস চলছে, বলে নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে। এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও আগামী দিনে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হোক অথবা না হোক আপৎকালীন ব্যবস্থাকে ওই রাখতে সতর্ক থাকছে রাজ্য প্রশাসন।