কলকাতা 21 জুন: বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই অশান্তি। অশান্তির জেরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যুবকের। বছর চারেক আগের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের এখনও কিনার করে উঠতে না পারায় হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগকে তদন্ত হস্তান্তর করল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ, এই তদন্তে তদারকি করবেন একজন এসিপি পদমর্যাদার আধিকারিক এবং ঘটনার দ্রুত তদন্ত করতে হবে গোয়েন্দা দফতরকে। বিচারপতির আরও নির্দেশ, বালি থানার তদন্তকারী আধিকারিককে অবিলম্বে তদন্ত সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্র হস্তান্তর করতে হবে গোয়েন্দা বিভাগকে এবং ফরেনসিক রিপোর্ট পেতে দ্রুত পদক্ষেপ করবে গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তকারী আধিকারিক। কারণ, প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ফরেনসিক রিপোর্ট আটকে রয়েছে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, "একজন হতভাগ্য পিতা তার সন্তানের মৃত্যুর বিচার চেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। আপনারা তাঁর ছেলেকে আর ফেরাতে পারবেন না৷ কিন্তু, বিচার দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।"
আগের দিন শুনানিতে পুলিশের তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারপতি বলেন, "এটা স্পষ্ট যে, বর্তমান তদন্তকারীরা অনভিজ্ঞ। " আজ সেই মতো গোয়েন্দা বিভাগকে তদন্ত দেওয়ার আর্জি জানান রাজ্যের আইনজীবী। আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, 2020 সালে হাওড়ার এক বস্ত্র ব্যবসায়ী যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় লিলুয়ার এক যুবতীর। বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে অশান্তি শুরু হয় দম্পতির মধ্যে। শেষে আত্মহননের পথ বেছে নেন ওই যুবক।
মৃত যুবকের পরিবারের আইনজীবী ময়ূখ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, স্ত্রীর সামনেই আত্মহত্যা করেন যুবক৷ তবে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে মোবাইলে ওই ঘটনার ভিডিয়ো করেন যুবতী। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করে পরিবারের আইনজীবীর দাবি, যুবতীর মোবাইল ফরেনসিকে পাঠায়নি পুলিশ। অভিযুক্ত যুবতীকে গ্রেফতার করা হলেও জামিন পেয়ে যায় সে। পরবর্তীকালে তদন্ত বন্ধ করে দেয় পুলিশ। নিম্ন আদালত থেকে পুণরায় তদন্তের নির্দেশ পেলেও তদন্তে কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় পরিবার।
জানা গিয়েছে, 2021 সালের 12 এপ্রিল এই মামলার এফয়াইয়ার হয় । 306 ধারায় মামলা হয় বালি থানায়। মৃত যুবকের পরিবারের অভিযোগ, তদন্তে গাফিলতি রয়েছে বলেই নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায় অভিযুক্ত যুবতী ৷
বিশেষ দ্রষ্টব্য: আত্মহত্যা কোনও সমাধান নয় ৷ যদি আপনার মধ্যে কখনও আত্মহত্যার চিন্তা মাথাচাড়া দেয় বা আপনার কোনও বন্ধু বা পরিচিত এই সমস্যায় জর্জরিত হন, তাহলে ভেঙে পড়বেন না। জানবেন, এমন কেউ আছে যে আপনার যন্ত্রণা, আপনার হতাশা ভাগ করে নিতে সদা-প্রস্তুত। আপনার পাশে দাঁড়াতে তৎপর। সাহায্য পেতে দিনের যে কোনও সময়ে 044-24640050 এই নম্বরে কল করুন স্নেহা ফাউন্ডেশনে। টাটা ইন্সটিটিউট অফ সোশাল সায়েন্সের হেল্পলাইন নম্বরেও (9152987821) কল করতে পারেন। এখানে ফোন করতে হবে সোমবার থেকে শনিবার সকাল 8টা থেকে রাত 10টার মধ্যে।