মালদা, 14 সেপ্টেম্বর: বাড়িতেই আত্মঘাতী হয়েছিলেন 24 বছর বয়সি এক বধূ ৷ খবর পেয়ে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ৷ ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশের খাতায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা লিপিবদ্ধ হয় ৷ দেহ উদ্ধারের পর দু'দিন কেটে গেলেও মৃতার পরিবারের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷ এদিকে এই ঘটনার নেপথ্যে বিবাহ-বহির্ভূত প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর ৷
মানিকচক থানার গ্রামের বাসিন্দা ও বধূর সঙ্গে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানা গিয়েছে ৷ শৈশবে তাঁরা একই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন ৷ দু’জনের এই সম্পর্কের কথা জানত ওই বধূ এবং কিশোরের পরিবার ৷ বছর পাঁচেক আগে ওই যুবতীর অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায় ৷ তাঁর দুই সন্তান রয়েছে ৷
এদিকে ওই কিশোর কর্মসূত্রে থাকতেন বর্ধমানে ৷ তাঁরও অন্যত্র বিয়ে হয় ৷ তিনিও দুই সন্তানের বাবা ৷ জানা যাচ্ছে, বছরখানেক আগে গ্রামের একটি অনুষ্ঠানে তাঁদের ফের দেখা হয় ৷ অনুষ্ঠান শেষে নিজেদের বাড়ি ফিরে গেলেও তাঁদের মধ্যে ফের যোগাযোগ হয় ৷ পুরনো প্রেমের টানে নতুন সংসারের স্বপ্ন নিয়ে গত 7 সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে পালান গৃহবধূ ৷
যুবকও তাঁর বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন ৷ বর্ধমানেই তাঁরা থাকতে শুরু করেন ৷ এদিকে বিষয়টি জানাজানার পরে গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ তাঁকে গ্রামে ফিরে আসার নির্দেশ দেন ৷ নাহলে তাঁর প্রেমিকের ক্ষতি হবে বলেও হুমকি দেন বলে অভিযোগ ৷ এর পরদিনই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন যুবতী ৷
এদিকে 12 সেপ্টেম্বর সকালে যুবকের বাড়িতে ফোন করে বর্ধমান থানার পুলিশ জানায়, ওই যুবক বর্ধমান স্টেশনের পাশে একটি হোটেলে আত্মহত্যা করেছেন ৷ হোটেলের ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে ৷ এই খবর পেয়ে আত্মঘাতী যুবকের বাড়ির লোকজন ছুটে যান প্রেমিকার বাপের বাড়িতে ৷ খবর পেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি আসেন ওই যুবতীও ৷ এর মধ্যেও কখন যে গৃহবধূ ঘরে গিয়ে আত্মহত্যা করেন, তা খেয়াল করেননি কেউই ৷ খবর পেয়ে দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় মানিকচক থানার পুলিশ ৷
এই ঘটনা যাতে কোনওভাবেই পাঁচকান না হয় সেই জন্য কোনও পরিবারের তরফেই থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি ৷ মানিকচক থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি সুবীর কর্মকার বলেন, "12 সেপ্টেম্বর এক বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে ৷ সেই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে ৷ এনিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷ অভিযোগ দায়ের হলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে ৷" এনিয়ে দুই পরিবার মুখে কুলুপ আঁটলেও ওই গ্রামের এক বাসিন্দা কালু রজক ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, "ছেলেটির আত্মহত্যার খবর পেয়ে মেয়েটিও আত্মঘাতী হয়েছে ৷"