ETV Bharat / state

পুজোর আগে সীমান্তে নদী পথে ভারতে পাচার হচ্ছে পদ্মার ইলিশ - Hilsa Smuggling to India

Hilsa Smuggling to India: সীমান্তে নদীপথে ভারতে পাচার হয়ে ঢুকছে পদ্মার ইলিশ ৷ এভাবেই পুজোর আগে এরাজ্যে ইলিশের চাহিদা মেটাতে হচ্ছে ৷ কারণ, বাংলাদেশ সরকার এবার ইলিশ ভারতে পাঠাবে না-বলে ঘোষণা করেছে ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 11, 2024, 1:40 PM IST

Hilsa Smuggled into India
পুজোর আগে সীমান্তে নদী পথে ভারতে পাচার হচ্ছে পদ্মার ইলিশ ৷ (ফাইল চিত্র)

জলঙ্গি, 11 সেপ্টেম্বর: 'রুপোর পাতে মারে ঘা, পানির বুকে ফেললে পা', ইলিশ ধরার মরশুমে ওপার বাংলার জেলেদের বহুল চর্চিত এই ছড়ার মর্ম এবার এই বাংলায় একবারেই ফিকে ৷ পুজোর আর এক মাসও বাকি নেই ৷ বাঙালির প্রিয় পদ্মার ইলিশের দেখা আদেও এপারে মিলবে কি না, সংশয় রয়েছে ৷ ওপারের ইলিশ যেন বাঙালির পাতে ঘা মারছে ৷ এই আকালের বাজারে নদী পথে পাচার হয়ে ভারতে আসছে পদ্মার ইলিশ ৷

বাংলাদেশের রুপোলি শস্যের জন্য হাপিত্যেশ করে বসে আছেন ভোজনরসিক বাঙালি ৷ যদিও, এবার পুজোর মরশুমে এপারে পদ্মার ইলিশ মিলবে কি না, সে নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে ৷ তাই চোরাপথে ভারতে ঢোকা ইলিশের উপর ভরসা করছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ ৷ পুজোর বাজার ধরতে এখন থেকেই শুরু হয়েছে নদী পথে ভারতে ইলিশ পাচার ৷

ভারতে আমদানি বন্ধ হওয়ায় বাংলাদেশে দাম কমেছে ইলিশের । সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুর্শিদাবাদ, মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সীমান্ত দিয়ে এপারে শুরু হয়েছে দেদার ইলিশ পাচার ৷ রাতের অন্ধকারে নদীতে ভেলা ভাসিয়ে তার তলায় প্যাকেটে ও বস্তায় ইলিশ পাচার করা হচ্ছে ৷ সীমান্তের নদী পথগুলিতে এখন ইলিশ পাচারের রমরমা। এই পাচার হয়ে আসা মাছ যত্ন করে গোডাউনে বড় বড় ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখা হচ্ছে ৷ মাছ ব্যবসায়ীদের দাবি, দু’সপ্তাহ পর থেকে বাজারে মিলতে শুরু করবে পদ্মার বড় মাপের ইলিশ ৷ ভারতে ব্যাপক চাহিদা থাকায় মাঝেমধ্যেই দুই দেশের খোলা সীমান্ত এলাকায় আঁধার নামতেই ইলিশ পাচারের তোড়জোড় শুরু হচ্ছে ৷

বিশ্বের মোট ইলিশ উৎপাদনের মধ্যে বাংলাদেশেই হয় 97.01 শতাংশ ৷ রাষ্ট্রসঙ্ঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন বা এফএও থেকে এমনই তথ্য মিলেছে ৷ এপার বাংলায় দিঘা, শঙ্করপুর, কাকদ্বীপ কিংবা বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জে বর্ষায় যে পরিমাণ ইলিশ ওঠে, তা বাংলার বাজারগুলির চাহিদা কিছুটা মেটায় ৷ গঙ্গা কিংবা রূপনারায়ণের মতো নদীগুলিতে যেটুকু ইলিশ মেলে, তা যৎসামান্য ৷ এখন বাজারে যা মিলছে, তার বেশিরভাগ খোকা ইলিশ বা মায়ানমার থেকে আমদানি করা ইলিশ ৷ চড়া দাম দিয়ে সেই ইলিশ কিনেও হাত কামড়াতে হচ্ছে বাংলার মানুষকে ৷ কারণ সেই স্বাদই মিলছে না ৷ তাই এপার বাংলার মানুষের রসনাতৃপ্তির জন্য ওপার বাংলার পদ্মার রুপোলি শস্যের উপরই ভরসা ৷ বাংলাদেশের ইলিশ এবছর পুজোর সময় কতটা আসবে বা আদেও আসবে কি না, তা এখনও অনিশ্চিত ৷ ফলে ইলিশ পাচারে জড়িয়ে পড়ছেন দুই পারের ব্যবসায়ীরা ৷

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাণী ও মৎস্য সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার কয়েকদিন আগেই বলেছিলেন, এবার ভারতে ইলিশ পাঠানো হবে না ৷ আর তারপরেই পাচারকারীরা উঠে পড়ে লেগেছেন ৷ সাগরপাড়া বাজারের এক ইলিশ বিক্রেতা নাজমুল শেখ বলেন, "মাঝেমধ্যে রাতের দিকে ওপার বাংলা থেকে এখানে মাছ ঢুকছে ৷ যদিও সব মাছ অবৈধ উপায়ে আসছে ৷ তাই অনেক দর হাঁকছে পাচারকারীরা ৷ কিন্তু, উপায় নেই আমাদের ৷ বাজারে চাহিদা আছে ৷ তাই আমরা সেই মাছ কিনে নিচ্ছি ৷ বাজারে তাই একটু চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ৷"

বহরমপুরের কোর্ট মার্কেটের এক ইলিশ বিক্রেতা বলেন, "এখনও যা খবর পাচ্ছি, তাতে বাংলাদেশ থেকে বৈধ উপায়ে কোনও মাছ এপারে আসবে না ৷ তাই এবারে পুজোর বাজারে ভরসা একমাত্র এই চোরাচালান ৷ চোরাপথে যেভাবে মাছ আসছে, সেই মাছ আমরা কিছুটা জমিয়ে রাখছি ৷ আর মাত্র তিনসপ্তাহ পরেই পুজো ৷ তখন এই মাছ বাজারে তুলব ৷" তাই পুজোয় বাঙালির ভরসা পাচারের ইলিশই ৷

জলঙ্গি, 11 সেপ্টেম্বর: 'রুপোর পাতে মারে ঘা, পানির বুকে ফেললে পা', ইলিশ ধরার মরশুমে ওপার বাংলার জেলেদের বহুল চর্চিত এই ছড়ার মর্ম এবার এই বাংলায় একবারেই ফিকে ৷ পুজোর আর এক মাসও বাকি নেই ৷ বাঙালির প্রিয় পদ্মার ইলিশের দেখা আদেও এপারে মিলবে কি না, সংশয় রয়েছে ৷ ওপারের ইলিশ যেন বাঙালির পাতে ঘা মারছে ৷ এই আকালের বাজারে নদী পথে পাচার হয়ে ভারতে আসছে পদ্মার ইলিশ ৷

বাংলাদেশের রুপোলি শস্যের জন্য হাপিত্যেশ করে বসে আছেন ভোজনরসিক বাঙালি ৷ যদিও, এবার পুজোর মরশুমে এপারে পদ্মার ইলিশ মিলবে কি না, সে নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে ৷ তাই চোরাপথে ভারতে ঢোকা ইলিশের উপর ভরসা করছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ ৷ পুজোর বাজার ধরতে এখন থেকেই শুরু হয়েছে নদী পথে ভারতে ইলিশ পাচার ৷

ভারতে আমদানি বন্ধ হওয়ায় বাংলাদেশে দাম কমেছে ইলিশের । সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুর্শিদাবাদ, মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সীমান্ত দিয়ে এপারে শুরু হয়েছে দেদার ইলিশ পাচার ৷ রাতের অন্ধকারে নদীতে ভেলা ভাসিয়ে তার তলায় প্যাকেটে ও বস্তায় ইলিশ পাচার করা হচ্ছে ৷ সীমান্তের নদী পথগুলিতে এখন ইলিশ পাচারের রমরমা। এই পাচার হয়ে আসা মাছ যত্ন করে গোডাউনে বড় বড় ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখা হচ্ছে ৷ মাছ ব্যবসায়ীদের দাবি, দু’সপ্তাহ পর থেকে বাজারে মিলতে শুরু করবে পদ্মার বড় মাপের ইলিশ ৷ ভারতে ব্যাপক চাহিদা থাকায় মাঝেমধ্যেই দুই দেশের খোলা সীমান্ত এলাকায় আঁধার নামতেই ইলিশ পাচারের তোড়জোড় শুরু হচ্ছে ৷

বিশ্বের মোট ইলিশ উৎপাদনের মধ্যে বাংলাদেশেই হয় 97.01 শতাংশ ৷ রাষ্ট্রসঙ্ঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন বা এফএও থেকে এমনই তথ্য মিলেছে ৷ এপার বাংলায় দিঘা, শঙ্করপুর, কাকদ্বীপ কিংবা বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জে বর্ষায় যে পরিমাণ ইলিশ ওঠে, তা বাংলার বাজারগুলির চাহিদা কিছুটা মেটায় ৷ গঙ্গা কিংবা রূপনারায়ণের মতো নদীগুলিতে যেটুকু ইলিশ মেলে, তা যৎসামান্য ৷ এখন বাজারে যা মিলছে, তার বেশিরভাগ খোকা ইলিশ বা মায়ানমার থেকে আমদানি করা ইলিশ ৷ চড়া দাম দিয়ে সেই ইলিশ কিনেও হাত কামড়াতে হচ্ছে বাংলার মানুষকে ৷ কারণ সেই স্বাদই মিলছে না ৷ তাই এপার বাংলার মানুষের রসনাতৃপ্তির জন্য ওপার বাংলার পদ্মার রুপোলি শস্যের উপরই ভরসা ৷ বাংলাদেশের ইলিশ এবছর পুজোর সময় কতটা আসবে বা আদেও আসবে কি না, তা এখনও অনিশ্চিত ৷ ফলে ইলিশ পাচারে জড়িয়ে পড়ছেন দুই পারের ব্যবসায়ীরা ৷

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাণী ও মৎস্য সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার কয়েকদিন আগেই বলেছিলেন, এবার ভারতে ইলিশ পাঠানো হবে না ৷ আর তারপরেই পাচারকারীরা উঠে পড়ে লেগেছেন ৷ সাগরপাড়া বাজারের এক ইলিশ বিক্রেতা নাজমুল শেখ বলেন, "মাঝেমধ্যে রাতের দিকে ওপার বাংলা থেকে এখানে মাছ ঢুকছে ৷ যদিও সব মাছ অবৈধ উপায়ে আসছে ৷ তাই অনেক দর হাঁকছে পাচারকারীরা ৷ কিন্তু, উপায় নেই আমাদের ৷ বাজারে চাহিদা আছে ৷ তাই আমরা সেই মাছ কিনে নিচ্ছি ৷ বাজারে তাই একটু চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ৷"

বহরমপুরের কোর্ট মার্কেটের এক ইলিশ বিক্রেতা বলেন, "এখনও যা খবর পাচ্ছি, তাতে বাংলাদেশ থেকে বৈধ উপায়ে কোনও মাছ এপারে আসবে না ৷ তাই এবারে পুজোর বাজারে ভরসা একমাত্র এই চোরাচালান ৷ চোরাপথে যেভাবে মাছ আসছে, সেই মাছ আমরা কিছুটা জমিয়ে রাখছি ৷ আর মাত্র তিনসপ্তাহ পরেই পুজো ৷ তখন এই মাছ বাজারে তুলব ৷" তাই পুজোয় বাঙালির ভরসা পাচারের ইলিশই ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.